সেবা ডেস্ক: নাটোর-২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার দেওয়া আগুনে পোড়া বাড়ি থেকে জেলা জামায়াত নেতার ছেলেসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহরের কান্দিভিটুয়া মহল্লায় এমপি শিমুলের বহুল আলোচিত বিলাস বহুল জান্নাতি প্যালেস নামের ওই বাড়ির ছাদে একটি, তৃতীয় তলার বেলকনিতে একটি ও দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে দুটি মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়।
নিহতরা হলেন- নাটোর সিটি কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খানের একমাত্র ছেলে মিকদাদ হোসেন খান আকিব (১৭), হাফরাস্তা তালতলা এলাকার বকুল হোসেনের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী সিয়াম হোসেন (১৯), বড়গাছা এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম মোহন (২০) ও মল্লিকহাটি এলাকার ফজের আলীর ছেলে ইয়াসিন আলী (২০)। নিহতদের মধ্যে আকিব এবার মাধ্যমিক পাশ করেছে। তার বাবা দেলোয়ার হোসেন নাটোর জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি।
গত সোমবার গ্রেফতার হওয়া দেলোয়ার হোসেন খান মঙ্গলবার দুপুরের পর জামিনে ছাড়া পেয়ে ছেলের জানাজায় ইমামতি করেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর শোনার পর সোমবার বিকালে সাবেক সংসদ সদস্য শিমুলের ওই বাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বাড়িটির পাশে তার ছোট ভাইয়ের একটি পাঁচতলা বাড়ি ও সংসদ সদস্যের পুরোনো বাড়িতেও ছাত্র-জনতা আগুন ধরিয়ে দেয়। সংসদ সদস্যের বাড়িতে আটকে পড়া এক তরুণকে জনতা উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার একদিন পর মঙ্গলবার সকালে বাড়িটির ভেতর থেকে আরো চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অগ্নিকান্ডের পর ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ বা অন্য কোন বাহিনী ঘটনাস্থলে না যাওয়ায় নিহতের স্বজনরা নিজেরাই লাশ শনাক্ত করে যার যার বাড়ি নিয়ে যান। স্থানীয়রা ধারণা করছে নিহতরা কৌতুহল বশত বাড়ির উপরের দিকে দেখার সময় নিচতলায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা আগুন দিলে তারা আর নিচে নামার সুযোগ পায়নি।
নিহত আকিবের মামা কলেজ শিক্ষক এহসানুল করিম তুহিন জানান, সোমবার বিকেলে আকিব বাড়ি থেকে শহরে বের হয়। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। মঙ্গলবার সকালে সাবেক এমপি শিমুলের পুড়ে যাওয়া বাড়িতে কয়েকটি মরদেহ পড়ে আছে খবর পেয়ে স্বজনদের নিয়ে তিনি দেখতে যান। সেখানে গিয়ে ২য়তলার বেলকনিতে তার ভাগ্নের মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখেন। পরে নিজেরাই আকিবের মরদেহ শনাক্ত করে বাড়ি নিয়ে আসেন।
একপর্যায়ে অন্যরা বাড়ির ছাদ, দ্বিতীয়তলা ও তৃতীয়তলা থেকে আরো তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে বিস্তারিত তিনি কিছু জানেন না। তারা খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আপাতত তারা থানার বাইরে যাচ্ছেন না।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।