সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশ ব্যাংক ২২ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংককে সহায়তা দিচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই পদক্ষেপ মুদ্রাস্ফীতিতে ঘৃতাহুতি দেবে।
টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক রক্ষার পদক্ষেপ মুদ্রাস্ফীতিতে ঘি ঢালা হবে |
অতীতের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে ছয়টি দুর্বল ব্যাংককে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে গ্রাহকদের আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইলেও এটি মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আগেই বলেছিলেন, সরকার বা ব্যাংকগুলোর জন্য টাকা ছাপানো হবে না। তবে, তিন মাসের মাথায় এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে টাকা ছাপানোর ঘোষণা দেন তিনি।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে দুর্বল ব্যবস্থাপনা, ঋণের অনিয়ম, এবং তারল্য সংকটের কারণে বেশ কয়েকটি ব্যাংক ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না আনলে শুধুমাত্র টাকা ছাপিয়ে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, “যদি দুর্বল ব্যাংকগুলোকে আর্থিক সহায়তা না দেওয়া হয়, তারা দেউলিয়া হয়ে যাবে। তবে, এই সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ার ঝুঁকিও রয়েছে।”
অর্থনীতিবিদদের মতে, ছাপানো এই টাকা দুর্বল ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের পরিশোধে ব্যবহার করবে এবং গ্রাহকরা সেই অর্থ বাজারে ব্যয় করলে এটি মুদ্রাস্ফীতিতে ঘৃতাহুতি দেবে।
অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, "টাকা ছাপানোর মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতিতে ঘি ঢালা হবে। এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।"
অন্যদিকে, অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ বলেন, “এই সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে ব্যাংক খাতকে স্থিতিশীল করলেও দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়াবে।”
অর্থনীতিবিদরা সমাধান হিসেবে দুর্বল ব্যাংকগুলোর প্রশাসনিক সংস্কার, সুশাসন নিশ্চিত করা, এবং সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া দ্রুত কার্যকর করার পরামর্শ দিয়েছেন।
অধ্যাপক আকাশের মতে, “ব্যাংক খাতকে বাঁচাতে শুধু টাকা ছাপানোর কৌশল থেকে বেরিয়ে এসে ধারাবাহিক নীতিগত পরিবর্তন আনতে হবে।”
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।