প্রতিবছর ঈদে নতুন টাকার প্রচুর চাহিদা থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকও জনগণের চাহিদা বিবেচনায় নতুন নোট বাজারে ছেড়ে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছাড়াও বেসরকারি খাতের কয়েকটি ব্যাংকের মাধ্যমে নতুন টাকা বিনিময় হয়ে থাকে। কিন্তু রোজার শুরুতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাউন্টারে নতুন নোট সরবরাহ হচ্ছে না, এই মর্মে নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, সরবরাহ কম থাকায় এবারের ঈদে পর্যাপ্ত নতুন নোট দিতে পারবে না বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশনকে সময়মতো চাহিদা না দেওয়ায় এ ধরনের সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। গত রোজার ঈদে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হয়েছিল। পাশাপাশি আরও ৫ হাজার কোটি টাকার পুরনো নোটও ছাড়া হয়েছিল। এবার আগে থেকে নতুন টাকার সঙ্কট শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজেদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত ক্যাশ কাউন্টারেও মিলছে না নতুন নোট। গত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মচারী সমবায় ঋণদান সমিতির ক্যাশ কাউন্টারের সামনে একটি নোটিসে লেখা দেখা যায়, ‘৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নতুন নোটের সরবরাহ না থাকায় প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।’
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান সকালের খবরকে জানান, এবার নতুন নোট অন্যান্য বছরের চেয়ে তুলনামূলক কম পাওয়া যাবে। মূলত বাজারের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে কম নোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই থেকে এসব নতুন নোট বাজারে ছাড়া হবে।
ঈদে সালামি হিসেবে নতুন টাকা দেওয়ার রেওয়াজ দীর্ঘ দিনের। এ বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিবছর ঈদের আগে পর্যাপ্ত নতুন নোট বাজারে ছাড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সময় অসংখ্য মানুষ ব্যাংকের কাউন্টারে লাইন ধরে দাড়িয়ে নতুন নোট সংগ্রহ করে। যাদের পর্যাপ্ত সময় নেই বা কোথায় কীভাবে নতুন নোট পাওয়া যায় তা জানেন না, এমন অনেককেই দেখা যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অথবা গুলিস্তান থেকে বাড়তি টাকা দিয়ে নতুন নোটের বান্ডিল কেনেন। নতুন নোটকে ঘিরে এ সময় একটা রমরমা ব্যবসাও হয় নোট বিক্রেতাদের।
প্রতিবছর ঢাকাসহ সারাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা থেকে নতুন নোট সরবরাহ করা হয়। এজন্য আগে থেকে নোট ছাপাতে সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশনকে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়। সেই চাহিদা অনুযায়ী, নতুন নোট ছাপাতে আন্তর্জাতিক নিলাম ডেকে কাগজ-কালিসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনে সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস। এবার সেই শিডিউল একটু এলোমেলো হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন মতিঝিল অফিসের কারেন্সি অফিসার মো. শহিদুর রহমান।