দরপত্র ছাড়াই কোটি টাকা কাজ ভাগ বাটোয়ারা!

S M Ashraful Azom
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ দরপত্র ছাড়াই ভাগ-বাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। উপজেলা প্রকৌশলীর যোগসাজশে একাধিক গ্রুপ এসব উন্নয়ন কাজ ভাগ করে নেয়। অভিযোগের তীর স্থানীয় এমপিসহ প্রভাবশালী নেতারা দিকে।

এছাড়াও দ্রুততম সময়ে দরপত্র প্রক্রিয়া ও কার্য সম্পাদনের নির্দেশনার কারণে উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডি’র সাতকানিয়া উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ সরওয়ার হোসাইন বলেন, জুন মাসে সরকারের বরাদ্দ চলে যাবে তাই তড়িঘড়ি করে এসব উন্নয়ন কাজের দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দরপত্র কেউ না কিনলে আমার কি করার আছে? সংসদ সদস্যের ঘনিষ্টরা এসব কাজ ভাগ করে নিয়েছেন এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ হোসাইন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সড়ক উন্নয়নের ৮৭ লাখ টাকা কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয় ২৩ জুন। ওইদিন এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, টেন্ডার শিডিউল বিক্রয়ের শেষ তারিখ ২৪ জুন। শিডিউল দাখিলের তারিখ উল্লেখ করা হয় ২৫ জুন।

স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ, এসব কাজ উপজেলা প্রকৌশলীর সহযোগিতায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তাদের অনুসারীরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে।

বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কাজগুলো মূলত তারাই ভাগ করে নিচ্ছেন। এখন শুধু অনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে। তাই এক্ষেত্রে মানা হয়নি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর)।

নিয়মানুযায়ী বহুল প্রচারিত একটি ইংরেজি ও একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা। সেই নিয়মও উপেক্ষিত। তাছাড়া দরপত্র বিক্রয়ের সময় দেওয়া হয়েছে মাত্র একদিন। এর ফলে অনেকে অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। এতে সরকার বঞ্চিত হয়েছে রাজস্ব আয় থেকে।

অন্যদিকে বিজ্ঞপ্তিতে এসব উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করার সময় নির্ধারণ করা আছে ৩০ জুন পর্যন্ত। ১০ গ্রুপে ভাগ করা এসব কাজের মূল্যমান নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ১০ লাখ থেকে সর্বনি¤œ ৫ লাখ টাকা। তাই অভিজ্ঞ মহলের প্রশ্ন দরপত্র দাখিল, তা যাচাই বাছাই, মূল্যায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়ার বিষয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তা না হলে এতো অল্প সময়ে তড়িঘড়ি করে অনেকটা গোপনে দরপত্র আহ্বান ও লুকোচুরির কারণ কি? পাশাপাশি এতো অল্প সময়ে এসব উন্নয়ন কাজ আদৌ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে কিনা- সেই ব্যাপারেও প্রশ্ন উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইসলাম কনস্ট্রাকশনের স্বত্তাধিকারী মহিউল সোহেল জানান, অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এরপরও আমরা বিষয়টি জানতে পেরে গত বুধবার বেলা ২টায় দরপত্র ক্রয়ের চেষ্টা করি। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা কোনো দরপত্র বিক্রয় করেননি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সিডিউল নেই বলে জানান। তাই দরপত্র ছাড়াই ফিরে আসতে হয়েছে। প্রায় একই অভিযোগ আরও অনেক ঠিকাদারের। 

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top