ফাইনালে চিলি

S M Ashraful Azom
স্বাগতিক চিলি সেমিফাইনালে পেরুকে ২-১ গোলে হারিয়ে স্বপ্নের কোপা আমেরিকা জয়ের পথে একেবারে দ্বাড়প্রান্তে চলে এসেছে। দীর্ঘ ৩০ বছর পর ফের দলটিকে ফাইনালে পৌঁছাতে জোড়া গোল করে দারুণ অবদান রাখেন ফরোয়ার্ড এডুওয়ার্ডো ভারগাস। এর আগে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই প্রতিযোগিতায় চিলি চারবার ফাইনাল খেললেও শিরোপা অধরাই থেকে যায়। ৯৯ বছরের এই ব্যর্থতা ঘুচাতে কোচ সামপাওলির দল শনিবার রাতে ফাইনালে আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে মধ্যকার অপর সেমিফাইনালে জয়ী দলের সঙ্গে মুখোমুখি হবে।            
সেমিফাইনালে চিলির জয়ের নায়ক ছিলেন ভারগাস। খেলার ৬৪ তম মিনিটে তার দেয়া গোলে ১৯৮৭ সালের পরে প্রথমবারের মত চিলির ফাইনাল নিশ্চিত হয় চিলির। এর আগে ৪২ মিনিটে সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে ইংলিশ লিগের রেলিগেটেড ক্লাব কুইন্সপার্ক রেঞ্জার্সের এই স্ট্রাইকারের গোলেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। যদিও গোলটি নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। গোলটির ক্ষেত্রে সহকারী রেফারি অফ-সাইড এড়িয়ে গেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
তাছাড়া সান্তিয়াগোতে অনুষ্ঠিত ম্যাচটির শুরুর ২০ মিনিটের মধ্যেই দশ জনের দলে পরিণত হয় পেরু। ডিফেন্ডার কার্লোস জামব্রানো চিলিয়ান মিডফিল্ডার চার্লস আরানগুইজকে কঠিন চ্যালেঞ্জ করার অপরাধে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়। তবে ৬০তম মিনিটে চিলির ডিফেন্ডার গ্যারি মেডেলের আত্মঘাতী গোলে পেরু খেলায় সমতা ফেরালে জমে ওঠে লড়াই। কিন্তু ভারগাস দ্যুতির সামনে চিলিকে জয় থেকে বঞ্চিত রাখতে পারেনি কোচ রিকার্ডো গ্যারেকার দল।
খেলায় সমতা ফেরার চার মিনিট পরই টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা একটি গোল করে দলকে জয়োল্লাসে ভাসান ভারগাস। মধ্যমাঠ থেকে প্রায় একক প্রচেষ্টায় বল পায়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে পেরু গোলরক্ষক পেদ্রো গালেসকে পরাস্ত করেন চিলির ২৫ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার।
পেরু-চিলির মধ্যে দীর্ঘদিনের ফুটবল লড়াইয়ের ছাপ কালও চোখে পড়েছে। ম্যাচ শুরুর চার মিনিটের মধ্যেই চিলির আরটুরো ভিদালের সাথে জামব্রানোর দ্বন্দ্ব রেফারির চোখ এড়িয়ে যায়। ঘটনাটিতে অবশ্য ভিদাল বেঁচে গেছেন। জামব্রানোর মুখে হাত দিয়ে ধাক্কা দেবার পরে হলুদ কার্ডও দেখানো হয়নি। এই ঘটনার পরে ম্যাচের উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। মিনিট খানেক পরে আর্সেনাল তারকা অ্যালেক্সিস সানচেজকে ফাউল করার অপরাধে ভেনিজুয়েলার রেফারি হোসে আরগোটা জামব্রানোকে হলুদ কার্ড দেখান।
ম্যাচের শুরুটা চিলি ভাল করলেও প্রথম গোলের সুযোগ পেরুই সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু পাওলো গুয়েরেরোর ক্রস থেকে নেয়া জেফারসন ফারফানের হেডের সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। ২০ মিনিটে জামব্রানো দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ ত্যাগ করলে ম্যাচের গতি পাল্টে যায়। এই ডিফেন্ডারকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেয়ায় কিছুটা আপত্তি প্রকাশ করে পেরুর স্ট্রাইকার পাওলো গুয়েরেরো বলেন, ‘আমি মনে করি জামব্রানোকে মাঠ থেকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্তটা কঠিন ছিল। রেফারিং নিয়ে আমি কোনো অভিযোগ না তুললেও খেলাটিতে অনেক অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত দেখেছি আমরা। খেলাটি ১১ জন বনাম ১১ জন হলে গল্পটা অন্যরকম হতে পারতো।’
একজন কম পেরুর বিপক্ষে আক্রমণের পরিমাণ বাড়ায় চিলি। ২৮তম মিনিটে গোলের সহজ একটি সুযোগ নষ্ট করেন জর্জ ভালদিভিয়া। এর একটু পর ভারগাসের শট ব্যর্থ করে দেন পেরু ডিফেন্ডার লুইস আডভিনকুলা। বিরতির প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোলে পেরু খেলায় ফিরলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সানচেজের জোগান থেকে ভারগাসের জোরাল শট পেরুর জালে জড়ালে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় চিলি। শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধান ধরে রেখেই ফাইনালের টিকিট নিয়ে মাঠ ছাড়ে সামপাওলির দল। বিরতির পর ভারগাসের দুর্দান্ত ভলির গোল অফ সাইডের কারণে বাতিলও হয়ে যায়।
ম্যাচটি কঠিন হয়েছে বলে খেলা শেষে জানালেন চিলির ডিফেন্ডার মরিসিও ইসলা, ‘সেমিফাইনালে আমরা আগের ম্যাচগুলোর মতো সেরাটা খেলতে পারিনি। পেরু একজন কম নিয়ে খেললেও সত্যিকার অর্থে তারা আমাদের সবকিছু কঠিন করে তুলছিল। চাপ আমাদের ঘিরে ধরেছিল। তাছাড়া আমরা কিছুটা ক্লান্তও হয়ে পড়েছিলাম। পেরু আমাদের পথ কঠিন করে ফেলতে চেয়েছিল।’—সুপার স্পোর্টস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top