এবারে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভ্যানিয়ার একদল গবেষক জানালেন, এই অগ্রগতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করতে যাচ্ছে তাদের গবেষণা। তারা সিলিকনের এমন একটি ধর্ম উদ্ভাবন করতে সমর্থ হয়েছেন, যা দ্রুতগতির আলোক-কম্পিউটার তৈরির প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। সিলিকনের এই নতুন ধর্ম অনুযায়ী সিলিকন-ভিত্তিক আলো পদার্থের অভ্যন্তরীণ গঠনে মৌলিক কণিকাগুলোর স্পিন শনাক্ত করতে পারবে। এতে করে অনেক বেশি তথ্য একসাথে স্থানান্তর করা যাবে।
ফলে আলো বা ইলেক্ট্রন স্পিন ব্যবহার করে ‘ফটোনিক’ বা ‘স্পিনট্রনিক’ কম্পিউটিংয়ের মাধ্যমে দ্রুতগতি অর্জন করা সম্ভব হবে। সিলিকনে খুঁজে পাওয়া এই বিশেষ ধর্মটি ‘কাইরাল’ নামে পরিচিত। কোনো বস্তুর আয়নায় প্রতিফলিত বিম্বকে ওই বস্তুর ওপর আপতিত না করা গেলে সেই বৈশিষ্ট্যকে কাইরাল বলা হয়। সিলিকনে কাইরাল বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়ার অর্থ হলো এটি ইলেক্ট্রন ও আলোর স্পিন শনাক্ত করতে পারবে এবং বেশি পরিমাণে তথ্য স্থানান্তর করতে পারবে। গবেষকরা বলছেন, সাধারণভাবে কম্পিউটারে তথ্য স্থানান্তরের জন্য ব্যবহার করা হয় তামার তার। কিন্তু কাজ করার ক্ষেত্রে এতে তাপ উত্পন্ন হয় এবং তাপ উত্পন্ন হলে এতে তথ্য স্থানান্তরের গতি কমে যায়। আলো ইলেক্ট্রনের স্পিন ব্যবহার করে তথ্য স্থানান্তর করা গেলে তথ্য স্থানান্তরের গতি কোনোভাবেই কমবে না। ফলে দ্রুতগতির কম্পিউটিং নিশ্চিত হবে।
এই গবেষণার প্রধান গবেষক রিতেশ আগারওয়াল বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ আলোক-কম্পিউটার তৈরি করা এখনও স্বপ্নের মতোই বিষয়। তবে প্রচলিত কম্পিউটারে তামার তারের পরিবর্তে আলোক-সংবেদী উপদান ব্যবহার করে কম্পিউটিংয়ের গতি বাড়ানো সম্ভব। সেটি এখনকার সিলিকন ব্যবহার করেই করা যাবে, তবে এর জন্য সিলিকনকে বিশেষভাবে ব্যবহার করতে হবে। কম্পিউটিং ছাড়াও প্রকৌশল ক্ষেত্রেও সিলিকনের নতুন এই ধর্মকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব।’