নতুন চাঁদ কিংবা বলয়ের সন্ধান এখনও মেলেনি। কিন্তু এরই মধ্যে অন্তত তিনটে খবর পাঠিয়েছে নাসার নিউ হরিজনস। যেসব খবরে প্লুটোর ব্যাপারে পুরো বিস্মিত হয়েছে বিজ্ঞানীমহল। এক. প্লুটোরও পাহাড় আছে। দুই. প্লুটোর ছোট চাঁদ হাইড্রার আছে জলের বরফ। তিন. প্লুটোর সবচেয়ে বড় চাঁদ শ্যারনের আছে গিরিখাত। মিশনের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর অ্যালান স্টার্ন এসব খবর নিশ্চিত করেছেন। ১৪ জুলাই বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার মহাবিকেলে ‘নির্বাসিত গ্রহ’ প্লুটোকে অতিকাছ থেকে ছুঁয়েছে মানুষ, পৃথিবীতে নির্মিত নভোযানের মাধ্যমে। তখন প্লুটোর সঙ্গে মানুষের তফাত পাঁচশ কোটি কিলোমিটার থেকে কমে মাত্র সাড়ে ১২ হাজার কিলোমিটারে নেমে এসেছিল। ঐতিহাসিক এই ক্ষণের মাত্র দেড় ঘণ্টা আগে প্লুটো ও এর চাঁদের ছবি তুলে পাঠিয়েছে নিউ হরিজনসের রালফ ও লরি যন্ত্রদ্বয়। তখন প্লুটো থেকে যানের দূরত্ব ছিল ৭৭ হাজার কিলোমিটার। দূরপথ পাড়ি দিয়ে ছবিগুলো পৃথিবীতে আসতে কয়েকঘণ্টা সময় নেয়। রালফের তোলা প্লুটোর একটি ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বামনগ্রহটিতে রয়েছে বেশ কিছু ছোট-বড় পাহাড়। এদের একটার উচ্চতা মাপা হয়েছে ১১ হাজার ফুট (সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার)।পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত হিমলায়ের উচ্চতা ২৯ হাজার ২৯ ফুট। জলের বরফে গড়া প্লুটোর পাহাড়, উচ্চতা ১১ হাজার ফুট। ছবি : নাসা। প্লুটোর এসব পাহাড় মিথেনের জমাটবাধা বরফ নয়, জলের বরফে গড়া পাহাড়গুলো। যদিও এই বরফ অতিশক্ত, কেননা প্লুটোতে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে ২৪০ সেলসিয়াস। নাসার বিজ্ঞানীদের অনুমান, প্লুটোর পাহাড়গুলোর বয়স খুব বেশি হলে ১০ কোটি বছর বছর হবে। সৌরজগতের ইতিহাসের তুলনায় এ যেন এক ‘কিশোর পাহাড়’। কেননা, শক্তিদেবতা সূর্য অন্তত সাড়ে চারশ কোটি বছর পুরোনো। প্লুটোর ছোট ছাঁদ হাইড্রার পৃষ্ঠদেশ জলের বরফে মোড়া। নিউ হরিজনসের ২০ সেন্টিমিটার মনিওয়ালা যান্ত্রিকচোখে অন্তত তাই দেখা গেছে। জানা গেলে হাইড্রার আকার-আকৃতি। ছবি : নাসা ২০০৫ সালে আবিষ্কৃত হওয়ারপর থেকে হাইড্রা ছিল ‘রহস্যময় বিন্দু’মাত্র। কেননা এর আকার-আকৃতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা ছিল না। লরি জানিয়েছে, এই ছোট গ্রহটা দৈর্ঘে ৪৩ কিলোমিটার ও প্রস্থে ৩৩ কিলোমিটার। শ্যারনের আছে বিস্তৃত, সুগভীর গিরিখাত। ছবি : নাসা নিউ হরিজনসের সহায়তায় জানা গেছে প্লুটোর বড় চাঁদ শ্যারনের গঠনপ্রকৃতিও। ধরা পড়েছে এর গায়ে বিস্তৃত ও গভীর এক গিরিখাতের। নাসা জানিয়েছে, এই গিরখিাত এক হাজার কিলোমিটার জুড়ে প্রসারিত। এবং ৭-৯ কিলোমিটার গভীর। নিউ হরিজনস অভিযান নিয়ে আরও এক্সক্লুসিভ খবর পড়ার জন্য চোখ রাখুন