ছিটমহলের বাদ পড়াদের কোনো সুযোগ থাকবে না

S M Ashraful Azom
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার ছিটমহলগুলোর জনগণনা জরিপ থেকে কেউ বাদ পড়ে থাকলেও তারা ‘ছিটমহল হস্তান্তরের পর কোন দেশের নাগরিক হতে চান’ তার ‘অপশন’ দেবার আর কোনো সুযোগ পাবেন না, অথবা নতুন করে জনগণনাও আপাতত আর হবে না। ঢাকায় দুই দিনব্যপী বাংলাদেশ-ভারত যৌথ সীমান্ত কার্যকরী কমিটির বৈঠকের শেষ দিনে এ সিদ্ধান্ত হয়। শুক্রবার গভীর রাতে ওই বৈঠক শেষ হয়। খবর বিবিসি বাংলার।
 
কোনো সুনির্দিষ্ট সংখ্যা না থাকলেও জেলা প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, ছিটমহলের কেউ কেউ জনগণনা এবং অপশন দেবার প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ার অভিযোগ তুলেছেন। এদের কেউ কেউ তাদের অপশন পরিবর্তনের ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায়।
 
কিন্তু শুক্রবারের বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মুনিম বলেন, এ রকম কোনো কিছু তাদের জানা নেই এবং এ সব কথা গ্রহণযোগ্যও নয়। কারণ, জনগণনা এবং অপশনের জন্য অনেক সময় দেয়া হয়েছে। মাইকিং করে তা জানানো হয়েছে, শেষ দিন পর্যন্ত তা পরিবর্তনের সুযোগও দেয়া হয়েছে।
 
তিনি বলেন, জরিপে কারো বাদ পড়ার কোনো কারণ নেই। ২০১১ সালের জরিপে যারা ছিলেন, এবং তার পরে তাদের পরিবারে যারা বৈবাহিক সূত্রে যুক্ত হয়েছে বা যারা জন্ম নিয়েছে তারাও এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তা ছাড়া অন্য কোনো কারণে বা কোথাও চাকরির জন্য সে সময় যারা অনুপস্থিত ছিলেন তাদের অপশন তাদের পরিবারের কাছ থেকে জেনে নেয়া হয়েছে।
 
যুগ্ম সচিব মুনিম বলেন, কোনো সাপ্লিমেন্টারি বা পরিপূরক জনগণনাও আর করার সুযোগ নেই, কারণ এটা এমন কোনো প্রক্রিয়া হতে পারে না যা কোনদিন শেষ হবে না।
জুলাইয়ের ৬ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত ছিটমহলের বাসিন্দারা কে কোন দেশের নাগরিক হতে চান তার ‘অপশন’ দেবার সময়সীমা ছিল। দুই দেশের যৌথ জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের মধ্যে ১১১টি ছিটমহল থেকে মোট ৯৭৯ জন ভারতের নাগরিক হতে চেয়েছেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তারা ভারতে চলে যেতে পারবেন।
 
রহমাতুল মুনিম জানান, যারা ভারতে যেতে চান তারা তাদের সম্পত্তি নিজেদের উদ্যোগে বিক্রি করে যাবেন। তবে এটা হবে জেলা প্রশাসকের যাচাই ও অনুমোদনের ভিত্তিতে।
 
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ও প্রটোকল অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই থেকে বাংলাদেশের ভেতরে অবস্থিত ভারতের ছিটমহলগুলো বাংলাদেশের ভূমি হিসেবে এবং ভারতের ভিতরকার বাংলাদেশের ছিটমহলগুলো ভারতের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে।
 
১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং ২০১১ সালের প্রটোকল অনুযায়ী—১৯৪৭ সালের ভারত ভাগের ৬৮ বছর পর দুটি দেশের মধ্যেকার সীমান্ত সমস্যার নিষ্পত্তি হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে জরিপে বাংলাদেশের মধ্যে থাকা ছিটমহলে সাড়ে ৪১ হাজার এবং ভারতের মধ্যে থাকা ছিটমহলে ১৪ হাজার মানুষের বসবাসের তথ্য রয়েছে।
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top