‘দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে সব উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে’

S M Ashraful Azom
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম দৈনিক ইত্তেফাককে বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পীেঁছে দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। এ জন্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।’
 
জানা গেছে—ক্রয়-সংক্রান্ত সব কার্যক্রমে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও এর সকল অধিদফতর, পরিদফতরে ই-টেন্ডারিং প্রক্রিয়া চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বুধবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। ফলে শেষ হয়ে গেছে টেন্ডার দখলবাজির দিন। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিকাদাররা ঘরে বসে দরপত্র-সংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন। পাশাপাশি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দরপত্রের প্রস্তাবসহ সংশ্লিষ্ট অনেক কাজই স্বল্প সময়ে, সহজে ও সমন্বিতভাবে করা সম্ভব হচ্ছে। এ ছাড়া, মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কার্যক্রম নজরদারির মধ্যে আনতে পৃথক কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। চিকিত্সক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, পদায়ন, বদলি, পদোন্নতির জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ রুহুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই কমিটিতে রয়েছেন।
 
অপর দিকে, হাসপাতালে ভারী ও এমএসআর যন্ত্রপাতি ক্রয়-সংক্রান্ত কার্যক্রমের জন্য স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নেতৃত্বে অপর একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি হাসপাতালের চাহিদার ভিত্তিতে এমএসআর সামগ্রী ও ভারী যন্ত্রপাতির প্রয়োজনীয়তা নিরুপণ ও তালিকা তৈরি করবেন। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ ছাড়া, চিকিত্সকদের কর্মস্থলে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আইয়ুবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা প্রতি মাসে অন্তত একবার সরেজমিন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে সচিবের কাছে রিপোর্ট দিচ্ছেন। কর্মস্থলে চিকিত্সকদের উপস্থিতি তদারকি ছাড়াও এ কমিটি প্রতিষ্ঠানের সমস্যা ও সমাধানে করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করছেন।
 
সহস্রাধিক চিকিত্সক কর্মস্থলে থাকছেন:
চিকিত্সা সংকট দূর করতে গত আগস্টে সারা দেশে প্রথমবারের মতো একযোগে ৬ হাজার ২২১ চিকিত্সক সরকারি চাকরি পেয়েছেন। তিন বছরের আগে এ সব চিকিত্স বদলি হতে পারবেন না। তবে এ ক্ষেত্রে এ সব চিকিত্সককে নিজ নিজ জেলা-উপজেলায় পোস্টিং দেয়া হয়েছে। এমনকি স্বামী-স্ত্রীকে এক জায়গায় পোস্টিংও করা হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিত্সকরা গ্রামে নির্ধারিত সময়ে কাজ করলে পরবর্তীতে ভালো পোস্টিং এবং উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন। তৃণমূল পর্যায়ে চিকিত্সা সেবা আরো আধুনিক করতে পর্যায়ক্রমে জেলা পর্যায়ে আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপনের কাজ  চলছে। প্রসূতি মায়েদের জন্য সারা দেশের উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে।
 
কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকে ১৭ কোটি রোগী সেবা নিয়েছেন:
কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবার সুফল ভোগ করছেন গ্রামীণ জনপদের মানুষ। চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৭ কোটির বেশি রোগী কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা পেয়েছেন। স্বাস্থ্যসেবা-বঞ্চিত গ্রামীণ জনপদের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে এ প্রকল্পটি চালু হয়। মা শিশুসহ সব রোগীর তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে ল্যাপটপ। মা ও শিশুসহ সব রোগীর তথ্য থাকবে কম্পিউটারে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যার আওতায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের প্রসবপূর্ব প্রতিষেধক টিকাদানসহ প্রসব পরবর্তী সময়ে নবজাতকসহ মাকেও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। সময় মতো যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশ, পোলিও, ধনুস্টংকার, হাম, হেপাটাইটিস-বি, নিউমোনিয়া টিকা দানসহ শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয় এই কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top