উৎসাহ-উদ্দীপনা আর আনন্দের মধ্য দিয়ে শনিবার সারাদেশে পালিত হচ্ছে ঈদ-উল-ফিতর। ভেদাভেদ ভুলে সকলে তাদের আপনজনের সঙ্গে দেখা করছেন; করছেন ঈদের কোলাকুলি। কারাগারের নিরানন্দ পরিবেশে বন্দীরাও শনিবার সুযোগ পায় স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার। বিভিন্ন অপরাধের দায়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন শনিবার তাদের সঙ্গে আপনজনেরা দেখা করে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন ঈদের আনন্দ। সকল বন্দির সঙ্গে তাদের আপনজনরা যাতে দেখা করতে পারেন সে ব্যবস্থা করেছিল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। এ জন্য শনিবার সকাল থেকে বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের গেটে ছিল স্বজনদের ভিড়। কয়েদি-হাজতিদের মা, ভাই, বোন, স্ত্রী না হয় বন্ধুরা এসেছেন তাদের সঙ্গে দেখা করতে। শনিবার সকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের খাবারের বক্স হাতে সুমি হোসেন নামে এক নারীকে দেখা গেল। স্বামী মো. মাসুমের সঙ্গে দেখা করতে তিনি এসেছেন। মাসুম ডাকাতি মামলায় কারাগারে বন্দি। তাদের সংসারে দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। তবে সুমি তার দুই শিশুকে নিয়ে আসেননি। সুমি বলেন, ‘আমি চাই না আমার দুই মেয়ে তাদের বাবাকে জেলখানায় দেখুক। দুই মেয়ের মধ্যে একজন মোটামুটি বুঝতে শিখেছে। তারা তাদের বাবাকে খোঁজে। বাবা বাইরে থাকেন বলে আমি তাদেরকে বুঝিয়ে রেখেছি।’ তিনি বলেন, ‘টিউশনী করে এখন সংসার চালাচ্ছি। তা দিয়েই মাসুমের জামিনের চেষ্টা করছি। ঈদের জন্য আজ মাসুমের পোলাও-গোশত রান্না করে নিয়ে এসেছি।’ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী মিন্টু বলেন, ‘সকাল থেকে অনেক বন্দীদের স্বজনেরা কারাগারে এসে দেখা করে গেছেন। ঈদের এই কয়দিন বন্দীদের স্বজনেরা একটু বেশি আসেন। তারা খাবারও নিয়ে আসেন। পুরান ঢাকা থেকে পার্থ ও সৌরভ এসেছেন তাদের ভাই মো. কাইয়ুমের সঙ্গে দেখা করতে। কাইয়ুম মাদক মামলায় কারাগারে বন্দি। পার্থ বলেন, ‘কাইয়ুম আমার ফুপাতো ভাই। বেশ কিছুদিন আগে বিয়ারসহ তিনি র্যাবের কাছে ধরা পড়েন। ঈদের আগে তিনি বের হতে না পারায় তার জন্য কিছু খাবার ও কাপড় এনেছি আমরা। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী জানান, কারাবন্দীদের সঙ্গে তাদের আপনজনরা দেখা করার জন্য ঈদের দু’দিন একটু বেশি সময় পাবেন। বিকেল ৪টা পর্যন্ত কারাবন্দীদের আপনজনরা তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।