কবি নজরুলের পৌত্রী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অনিন্দিতা কাজীর বাস কলকাতায়।
কিন্তু তার প্রাণ যেন বাংলাদেশে। বাংলার মানুষকেই তার সবচেয়ে বেশি আপন মনে
হয়। তাই তো সময় পেলেই ছুটে আসে বাংলার প্রকৃতির কাছে। অনিন্দিতা যেমন
বাংলাকে নিয়েছে আপন করে তেমনি বাংলাও তাকে নিয়েছে নিজের করে। সম্প্রতি এই
নারীকে সম্মাননা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। জানাচ্ছেন মোহাম্মদ ওমর ফারুক
‘শ্রাবণ মেঘে নাচে নটবর’ এবং ‘সৃজন ছন্দে আনন্দে’— এ ধরনের গানগুলো হয়তো
নজরুল প্রেমীরা রীতিমতো শুনে থাকে কিন্তু যখন নজরুলের নিজের পৌত্রীর মুখে
এই গান শোভা পায় তখন নিশ্চয়ই গানগুলো ভিন্ন মাত্রা পাবে সেটাই স্বাভাবিক।
হ্যাঁ, নজরুলের অসংখ্য গান গেয়ে সেদিন অগণিত দর্শককে মোহিত করেছিল তারই
পৌত্রী অনিন্দিতা। ঢাবির আরসি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনটিও পেয়েছিল এক ভিন্ন
মাত্রা। নিজের সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসে গান গেয়ে করে দিয়েছিল উপস্থিত সবাইকে
সম্মানিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নজরুল-প্রমীলার
কলকাতানিবাসী পৌত্রী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অনিন্দিতা কাজীকে সম্মাননা দেয়া
হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে এক জাঁকজমকপূর্ণ
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে এ সম্মাননা দেয়া হয়। নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের
সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক
এ সম্মাননা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন। সম্মাননা জ্ঞাপক
বক্তব্য প্রদান করেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং
সামাজিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন
কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। অনুষ্ঠানের শুরুতেই উপাচার্য
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অনিন্দিতা কাজীকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন।
অনিন্দিতা কাজী তার বক্তব্যে পারিবারিক স্মৃতিচারণ করে দাদু নজরুলের
জীবনের সঙ্গে নিজের জীবন-সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দাদু
বিদ্রোহের চেয়েও বেশি ভালোবাসা লালন করতেন। বাংলাদেশে নজরুল চর্চার নানা
দিকের কথা উল্লেখ করে বর্তমানে তরুণ শিল্পীরা নজরুলশিক্ষার প্রতি যে আগ্রহী
হয়ে উঠছে, সেটি একটি শুভ লক্ষণ বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মান প্রদান করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং নজরুল
গবেষণা কেন্দ্রের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।