বাংলাদেশের
সুন্দরবনে সব মিলিয়ে এখন ১০৬টি বাঘ রয়েছে। ক্যামেরা পদ্ধতিতে বাঘ গণনা
জরিপ শেষে বন বিভাগ এমন তথ্য জানিয়েছে। রবিবার বন বিভাগ জরিপের ফলাফল
চূড়ান্ত করেছে।
এর
আগে সর্বশেষ জরিপে বাঘের সংখ্যা বলা হয়েছিল ৪০০ থেকে ৪৫০টি। ২০১০ সালে বন
বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ যৌথভাবে সুন্দরবনের খালে বাঘের
বিচরণ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ঐ জরিপ চালায়।
বন
বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, অতীতে সনাতন পদ্ধতিতে যে জরিপ করা হয়েছিল তা
যথেষ্ট বিজ্ঞানসম্মত ও আন্তর্জাতিকমানের ছিল না। বাঘের সংখ্যা কমে যায়নি।
বন
বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও বাঘ গণনা জরিপের প্রধান জাহিদুল কবীর
বলেছেন, সনাতন পদ্ধতিতে বাঘের পায়ের ছাপ এবং গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে
অতীতের জরিপের মাধ্যমে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা জানা সম্ভব ছিল না। ফলে
ক্যামেরায় ছবি তুলে, খালে বাঘের পায়ের ছাপ গুনে ও তার গতিবিধির অন্যান্য
তথ্য-প্রমাণ ব্যাখ্যা করে এই সংখ্যা নির্ধারণ করা গেছে।
ম্যানগ্রোভ
এই বনাঞ্চলে বাঘের সঠিক সংখ্যা জানতে ২০১৩ সালে ক্যামেরা পদ্ধতিতে বাঘ
গণনা জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়। মাঝে বিরতি দিয়ে ২০১৪ সালের নভেম্বরে আবার
শুরু হয়ে চলতি বছরের মার্চ মাসে জরিপ শেষ হয়।
জরিপের
পর ‘বাংলাদেশে সুন্দরবনে বাঘের ঘনত্ব’ শিরোনামে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,
অবৈধ শিকার, খাবারের অভাব এবং প্রাকৃতিক বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে
সুন্দরবনের বাঘের অস্তিত্ব কমছে। এছাড়া সুন্দরবন এলাকার ভেতরের নদী দিয়ে
যান চলাচল ইত্যাদিও বাঘের নির্বিঘ্ন বসবাসের ওপর প্রভাব ফেলছে।
বন
বিভাগের জরিপ দল সুন্দরবনে ৩৮টি পূর্ণবয়স্ক ও চারটি বাঘের বাচ্চার ছবি
তুলতে পেরেছে । এর মধ্যে ৩৮টি বাঘের শতকরা ৩০ ভাগ পুরুষ এবং বাকিরা নারী।
জরিপে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশ মিলে সুন্দরবনে মোট বাঘের সংখ্যা ১৭০টি।
সুন্দরবনের
বাংলাদেশ অংশে বাঘের বিচরণের প্রধান ক্ষেত্র বাগেরহাটের কটকা, কচি খালী ও
সুপতি, সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জ, দোবেকি ও কৈখালী এবং খুলনার নীলকমল,
পাটকোষ্টা ও গেওয়াখালী।
এর মধ্যে বাগেরহাটে ১৭টি, সাতক্ষীরায় ১৩টি ও খুলনায় আটটি বাঘের ছবি ধারণ করা হয়েছে। সূত্র: বিবিসি।