কলের লাঙল কেনায় ভর্তুকির অর্থ বরাদ্দ
নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে দৈনিক প্রথম আলোর উদ্দেশে
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন ‘যতোই বানোয়াট নিউজ ছাপান না কেন, আমি যে
খুব একটা উত্তেজিত বা রাগান্বিত হবো, তা নয়। ওই যে কথা আছে-দোষ যদি হয়
আপনার, আরতির কাছে বিচার চেয়ে কী লাভ। তারাও সেভাবেই ইচ্ছামতো নিউজ লেখে,
পাঠককে বিভ্রান্ত করে। আমি শুধু এটুকু বলবো যে- আমি না হয় একজন সংসদ সদস্য
কিংবা মন্ত্রী হওয়ায় পার্লামেন্টে কথা বলতে পারছি, প্রতিবাদ করতে পারিছ,
তাও সেশন থাকলে। কিন্তু সাধারণ মানুষ কী করবে। সাধারণ মানুষের প্রতিকারের
পথটা কী? এর নাম সত্ সাংবাদিকতা না। আই রিপিট, এর নাম সৎ সাংবাদিকতা না, এর
নাম সত্ সাংবাদিকতা না।’ রবিবার জাতীয় সংসদে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
মতিয়া
চৌধুরী বলেন, প্রথম আলো প্রথম লিখলো-কলের লাঙলের ভর্তুকির টাকা দলীয়
লোকদের পকেটে। এখন লিখলো, পাঁচজন এখনও কলের লাঙল কেনেনি। মন্ত্রণালয় বিষয়টি
পুনঃতদন্ত করেছে। এতে প্রথম আলোচনার খবরের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। প্রথম
আলোর মতো একটি পত্রিকা এভাবে বারবার একটি বিষয় নিয়ে লিখে এবং পূর্ণ এক
পৃষ্ঠা এনিয়ে লেখালেখি করে কী অর্জন করতে চাচ্ছে, তা বোধগম্য নয়।
গত
২৭ মে প্রথম আলোয় ‘কলের লাঙলের ভতর্তুকির বড় ভাগ সরকারি দলের
নেতা-কর্মীদের পকেটে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঝিনাইদহের এই
বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জুন সংসদে বিবৃতি দেন মতিয়া চৌধুরী। ওই বিবৃতির
পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশের পর আবারও বিবৃতি দেন মন্ত্রী। সর্বশেষ গত ২
জুলাই পত্রিকাটি ‘প্রথম আলোর খবর অসত্য নয়, এখনো পাঁচজন লাঙল কেনেননি’
শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে।
এর
পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার সংসদে আবার সংসদে এনিয়ে কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। প্রথম
আলোর সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ জুলাই মন্ত্রণালয় আবার তদন্ত করেছে
জানিয়ে তিনি বলেন, ওই তদন্তে প্রথম আলোর সংবাদ ‘অসত্য’ বলে প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন
এখানে কোনো ব্যক্তিকে টাকা দেয়া হয়না। টাকা দেয়া হয় কলের লাঙল সরবরাহকারী
প্রতিষ্ঠানকে। তাও একজন কৃষক ৭৫ ভাগ টাকা জমা দেয়ার পর সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরেই তিনি লাঙল কিনতে পারেন। মূলত এই বিষয়টি হয়তো
প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ বোঝে না, অথবা বুঝেও না বোঝার চেষ্টা করছে... অথবা এর
পেছনে কোনো উদ্দেশ্য নিহিত আছে।
রবিবার
বিবৃতিতে মতিয়া চৌধুরী ঝিনাইদহে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদকের রাজনৈতিক
সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করে বলেন “ আজাদ রহমান ’৯১-৯৬ সালে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ
উপজেলা ছাত্রদলের সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৮-২০০০ মেয়াদে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক
ছিলেন। এছাড়াও তিনি প্রাক্তন মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ‘লোকসমাজ’ পত্রিকার
সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
মন্ত্রীর
দাবি, ওই প্রতিবেদক যখন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘রাফি এন্টারপ্রাইজ’-এর
সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন সে নিজেকে এসিআই কোম্পানির লোক বলে পরিচয় দেন।
এছাড়া রাফি এন্টারপ্রাইজের উদ্ধৃতি দিয়ে এর আগে যেসব বক্তব্য ছাপা হয়েছিল,
সেগুলো তারা বলেনি বলে আমার কাছে লিখিত দিয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী
আরও বলেন ‘আমি আগেও বলেছিলাম-প্রতিবাদ দিলেও প্রথম আলো ৩/৪ লাইনের বেশি
ছাপে না, বা দেন-ই না। আগে প্রতিবাদ পাঠালে একটি রিসিভ কপি দিতো, এখন সেটিও
দিতে চায় না। আমি না হয় এমপি বা মন্ত্রী হওয়ায় সংসদে বিবৃতি দিতে পারছি।
কিন্তু সাধারণ মানুষ কীভাবে প্রতিকার পাবে!’