বাংলাদেশে নতুন করে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সতর্ক করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। সংগঠনটির অনলাইন ম্যাগাজিন ‘দাবিক’-এর সর্বশেষ সংস্করণে এ দাবি করা হয়েছে। আইএসের ম্যাগাজিনের নিবন্ধ নিয়ে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মতো দেশে আইএস তাদের কৌশলগত অবস্থান বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ম্যাগাজিনে বাংলাদেশের বিষয়ে দীর্ঘ বক্তব্য উঠে এসেছে। আর ‘দ্য রিভাইভাল অব জিহাদ ইন বেঙ্গল’ শীর্ষক নিবন্ধটি তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য উত্সর্গ করা হয়েছে।
দাবিক-এর ১২তম সংস্করণে বাংলাদেশ নিয়ে ৫ পৃষ্ঠার ওই নিবন্ধের লেখক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে আবু আবদির রহমান আল-বাঙালির নাম। নিবন্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশে চারটি হামলার দায় লিখিতভাবে স্বীকার করেছে আইএস। নিবন্ধে বলা হয়েছে, খিলাফতের সেনাদের সম্পৃক্ত একটি নিরাপত্তা সেল ইতালিয়ান নাগরিক চেজার তাভেল্লাকে খুন করেছে। রাজধানী গুলশানের একটি রাস্তায় গুলি করে ওই বিদেশিকে হত্যা করা হয়। এর কয়েক দিনের মাথায় রংপুরে ওই টিম এক জাপানি নাগরিককে টার্গেট করে খুন করে। ঢাকায় শিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদে (হোসেনী দালান) হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা ও প্রায় ১০০ জনকে জখম করেছে তারা। এ ছাড়া ঢাকায় এক তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের ওপর হামলাও আইএস করেছে বলে নিবন্ধে দাবি করা হয়। নিবন্ধে বলা হয়, পর পর এসব হামলা ক্রুসেডর রাষ্ট্রের জনগণের বড় ক্ষতির কারণ হয়েছে। যে কারণে অনেক দেশ বাংলাদেশে তাদের নাগরিক, কূটনীতিক, পর্যটকদের চলাচল সীমিত করতে বাধ্য হয়েছে। এখনো তারা ভীতিকর অবস্থার মধ্যে দিন পার করছে।
নিবন্ধে বলা হয়েছে, আইএস নতুন করে আরো হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই সঙ্গে তারা বলেছে, আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক সরকার ধারাবাহিকভাবে তথ্য বিভ্রাট ঘটাচ্ছে এবং ব্লেম গেম খেলছে। বাংলাদেশ সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, সরকার দ্রুতই উপলব্ধি করবে যারা নির্লজ্জভাবে সত্য অস্বীকার করছে।
দাবিক-এর ওই নিবন্ধে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) প্রশংসা করে এর প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া শায়খ আবদুর রহমানকে ‘শহীদ মুজাহিদ’ আখ্যা দেয়া হয়েছে। নিবন্ধের ‘দ্য হিস্ট্রি অব জিহাদ ইন বেঙ্গল’ অধ্যায়ে শায়খ আবদুর রহমান ও জেএমবির প্রশংসা করে বলা হয়, এর ফলে ইউরোপীয় উপনিবেশ ও হিন্দু সংস্কৃতির চাপে যে ভূখণ্ড শত শত বছর ‘শিরক’ ও ‘বিদাতে’ ডুবে ছিল, সেখানকার মুসলমানরা একটা আশার আলো দেখেছিল। কিন্তু ২০০৭ সালে বাংলাদেশের সরকার শায়খ আবদুর রহমানকে গ্রেফতার করে তার আরো কিছু মুজাহিদ কমান্ডারসহ মৃত্যুদণ্ড দেয়। আইএসের সাময়িকীতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে ‘মুরতাদ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর একটি ছবি দিয়ে তাতে লেখা হয়েছে, ‘মুরতাদপ্রধান’। নিবন্ধের শেষাংশে তারা বলেছে, তথাকথিত খিলাফতের সেনারা বেঙ্গলে তাদের প্রভাব বিস্তার করছে এবং তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়িয়ে যাবে।

