মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের দণ্ড কার্যকরকে কেন্দ্র করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ সারাদেশে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এখন মাঠে। রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে যাতে কেউ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড না ঘটাতে পারে সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
শুক্রবার সন্ধ্যার পরেই নাজিম উদ্দিন রোডসহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়। কারা ফটকের সামনের সড়কে নিয়ে আসা হয়েছে পুলিশের এপিসি (আর্মাড পার্সনেল ক্যারিয়ার) গাড়ি। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের আশেপাশের উঁচু ভবনগুলোতে পুলিশ ও র্যাব অবস্থান নিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে নাজিম উদ্দিন রোডে প্রবেশ পথে পুলিশ ব্যরিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। গণমাধ্যম কর্মী ছাড়া আশেপাশের বাসিন্দাদের হেঁটে ঐ এলাকা অতিক্রম করতে হয়। পুলিশের লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সনজিত কুমার রায় বলেন, সাময়িক কিছু সময়ের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও এই এলাকায় চলাচলের জন্য বিকল্প অনেক সড়ক রয়েছে বলে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ হয়নি।
শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই রাজধানীতে ২০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এছাড়া চট্টগ্রামে ১২ প্লাটুন, খুলনায় ৬ প্লাটুন, রাজশাহীতে ৬ প্লাটুন, রংপুরে ৫ প্লাটুন এবং জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, নীলফামারী, সাতক্ষীরা, পাবনা, নোয়াখালী, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, নড়াইলসহ ২০টি জেলায় ৫ প্লাটুন করে বিজিবি মোতায়েন হয়েছে।
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় বিজিবি শনিবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। প্রয়োজন হলে পরবর্তী সময়ও তারা দায়িত্ব পালন করবে।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, রায়কে কেন্দ্র করে যাতে কেউ নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে র্যাব। রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও জন নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট পয়েন্টে প্রয়োজনীয় সংখ্যক র্যাব সদস্য কাজ করছে। নিয়মিত টহলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট তৈরি করে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এছাড়াও সাদা পোশাকে র্যাবের গোয়েন্দা টিম কাজ করছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিমানবন্দরের সামনে প্রধান সড়কেই পুলিশের জলকামান রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তত্পর রয়েছেন। প্রধান সড়কেই পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী রাখা হয়েছে। বিমান যাত্রীদের পাসপোর্ট দেখিয়ে টার্মিনালে প্রবেশ করতে হচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

