বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রিভিউ আবেদন আজ মঙ্গলবারের শুনানির কার্যতালিকায় রয়েছে। আপিল বিভাগের দৈনন্দিন কার্যতালিকার ২ ও ৩ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে রিভিউ পিটিশন দুটি। এদিকে হাইকোর্টের বিচারকদের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট আবেদনের শুনানি গ্রহণে হাইকোর্ট অপারগতা প্রকাশ করেছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সালাহউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার রায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৪ অক্টোবর এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন সালাহউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদ। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, দেখলেই বোঝা যায় যে রায়ে একটি ভুল রয়েছে, সেক্ষেত্রে রিভিউ পিটিশন মঞ্জুর হয়ে থাকে। কিন্তু আপিল বিভাগ মানবতাবিরোধী এই দুটি মামলায় যে রায় দিয়েছে তার বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দায়ের করে কোন আদেশ পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। যদিও এ বিষয়ে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত দেবে আদালত। তারপরও অন্যান্য রিভিউ পিটিশন যেভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং ফৌজদারি মামলার অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, রিভিউ পিটিশন মঞ্জুরের সুযোগ খুবই সীমিত। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে সোমবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। এছাড়া আলী আহসান মুজাহিদ আগে থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন।
হাইকোর্টের বিচারকদের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী। রিট আবেদনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির বিচারের ক্ষমতা দিয়ে সংশোধিত সংবিধানের ৪৭(৩) অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। গতকাল সোমবার বিচারপতি তারিক-উল-হাকিম ও বিচারপতি মো. ফরিদ আহমদ শিবলীর ডিভিশন বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন আবেদনকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ। তিনি বলেন, আবেদনের বিষয়বস্তুর সঙ্গে সাংবিধানিক প্রশ্ন জড়িত। এটি সাংবিধানিক আদালত। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, বিষয়টি ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে শুনানি করে আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চাই না। শুনানি করলে আপনারও সময় নষ্ট হবে। আপনি অন্য বেঞ্চে যেতে পারেন। এরপর হাইকোর্ট আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়ার নির্দেশ দেয়। এসময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম।
আদেশের পর আমাতুল করীম বলেন, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল রিটে। এ বিষয়ে ২০১০ সালে দেয়া হাইকোর্টের একটি রায় আছে। সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়া একটি বিষয়ে আবারও আলোচনা করলে সময় নষ্ট হবে যুক্তি দেখিয়ে আদালত আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। মহসিন রশিদ বলেন, আমরা আবেদনটি উপস্থাপন করেছিলাম। আদালত শুনবে না বলে জানিয়েছে।