বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের মধ্যে টিকে থাকবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

S M Ashraful Azom
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে দেশের জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে উন্নত হবে এবং অন্য কারো কাছ থেকে দয়া না চেয়ে বিজয়ী হিসেবে বিশ্বের জাতিগুলোর মধ্যে টিকে থাকবে। তিনি বলেন, এই দেশ আমাদের, মাটি আমাদের এবং জনগণ আমাদের। তাই, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে ওঠবে এবং বাংলাদেশের জনগণ তাদের মাথা উঁচু করে বিশ্বের বুকে টিকে থাকবে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০১৫ উপলক্ষে শনিবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করেছে। তাই, আমরা একটি বিজয়ী জাতি হিসেবে বসবাস করবো এবং আমরা এভাবেই আমাদের দেশকে গড়ে তুলবো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। স্বাধীনতার জন্য শহীদ এবং যারা বিরাট আত্মত্যাগ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসী সবসময় মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অবদান স্মরণ করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, বঙ্গবন্ধু জাতীয় অর্থনীতি পুনর্গঠনের পাশাপাশি চৌকস সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি স্বাধীন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভিত্তি গঠন এবং সশস্ত্র বাহিনীর জন্য মিলিটারী একাডেমী, সম্মিলিত স্কুল, ট্রেনিং স্কুল, প্রশিক্ষণ ও সাংগঠনিক কাঠামোর উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন। বাংলাদেশের বর্তমান সশস্ত্র বাহিনীর অস্তিত্ব এই ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। দেশে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যুদ্ধ সরঞ্জাম সংগ্রহ করে সমর শক্তি বৃদ্ধি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে প্রণীত ১৯৭৪ সালের প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে ফোর্সেস গোল ২০৩০ এর আওতায় তিন বাহিনীর পুনগর্ঠন ও আধুনিকায়নের কাযক্রম পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা বাহিনীকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীকে দেশে ও বিদেশে উন্নততর প্রশিক্ষণ প্রদানসহ আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন যুদ্ধ সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করার প্রয়াস অব্যাহত আছে।

তিনি বলেন, বন্ধু প্রতিম দেশগুলোর সহযোগিতায় আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যুদ্ধ সরঞ্জাম সংগ্রহ করে সমর শক্তি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণে যে যে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন সেটা আমরা নিবো এবং আমরা তা নিচ্ছি। দেশের দক্ষিণালে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিভিশন প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সিলেটে একটি পদাতিক ডিভিশন এবং কক্সবাজারের রামুতে একটি পদাতিক ডিভিশন প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন ও সেনাবাহিনীর কল্যাণে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি। নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুটি সাবমেরিন আগামী বছরের মধ্যে সংযোজন করা হবে। এ বছরের শেষ নাগাদ দুটি করভেট সংযোজন করা হবে। দেশের শিপইয়ার্ড সমূহে তৈরি করা ফ্লিট ট্যাংকার, ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক ও লার্জ প্যাট্রোল ক্রাফট বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে সমৃদ্ধ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ঘুরে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, কুটনৈতিক, সাবেক বাহিনী প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেনাকুঞ্জে পৌঁছালে তিন বাহিনী প্রধান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার সস্ত্রীক প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top