সেবা ডেস্ক: ‘বাবার বাড়ি থেকে টাকা না আনতে পারলে আত্মহত্যা করে আমাদের মুক্তি দাও, তা না হলে তোমাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হবে’। আর এই যৌতুকের এক লাখ টাকা না পেয়েই স্ত্রী সুমনা আক্তার ইতিকে (১৯) হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরমোহনা গ্রামের গৃহবধূ সুমনা আক্তার ইতিকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিচার চেয়ে রায়পুর শহরের একটি কার্যালয়ে আজ শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার। লিখিত বক্তব্যে নিহতের মা সোনাপুরের চরবগা গ্রামের জাহানারা বেগম বলেন, যৌতুক না পেয়ে আমার মেয়ে ইতিকে ২ এপ্রিল স্বামী ইব্রাহিম খলিল, শ্বশুর নুরনবী দুলাল, শ্বাশুড়ী তাছলিমা খাতুন রেখাসহ পরিবারে সদস্যরা মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। পরে তারা ইতির মরদেহের গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘরের ভেতরে ঝুলিয়ে রেখে সে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালায়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠালে তার বাম হাত ভাঙা এবং পা সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। কিন্তু গলায় যে কোনো দাগ ছিল না লোকজন তা প্রত্যক্ষ করেছে। নিহতের মা আরো বলেন, ইতিকে ২০১২ সালের ৫ অক্টোবর ইব্রাহিম খলিল জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তখন সে রাখালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় তখন থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরে তিনি জানতে পারেন ইব্রাহিম তার মেয়েকে বিয়ে করেছেন। এরপর থেকে হত্যার আগ পর্যন্ত ইতি ওই বাড়িতেই ছিল। বিয়ের পর কারণে-অকারণে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা ইতিকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করতো। সম্প্রতি বিদেশ যাওয়ার জন্য বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য ইতিকে চাপ দেয়া হয়। সে তার পরিবারের আর্থিক অক্ষমতার কথা স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুড়ীসহ অন্যদের কাছে বলে। এ সময় তারা ব্যঙ্গ করে বলে ‘টাকা না আনতে পারলে আত্মহত্যা করে আমাদের মুক্তি দাও, তা না হলে তোমাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হবে’। হত্যার ঘটনায় নিহতের মা মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এ হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এতে স্বামী ইব্রাহিম খলিলসহ তার পরিবারের আট সদস্যকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিতে রায়পুর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে রায়পুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এ কে এম ফজলুল হক বলেন, মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট এলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।