আসন্ন এইচ এস সি পরীক্ষায় বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নপত্র থেকে সাবধান!

সেবা ডেস্ক: বিভিন্ন সময়ে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, বিশেষভাবে সর্বশেষ এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগের পর আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অন্তত ডজনখানেক নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এসব উদ্যোগ বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে না পারলেও পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নটি যে সুরক্ষিত থাকবে মোটামুটি সেই গ্যারান্টি দেয়া যায় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।
প্রশ্নফাঁস রোধের স্বার্থে কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হবে সে বিষয়েও কোনো পূর্ব ধারণা দিতে চাননি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এমনকি উক্ত কাজে কাদের সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে সে বিষয়েও পরিস্কার ধারণা দিতে পারেনি কেউ। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, সিকিউর্ড ডিজিটাল ও আংশিক এনালগ পদ্ধতির সংমিশ্রণে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে যা আগামী ২ এপ্রিল শুরু হবার কথা রয়েছে।
একাধিক প্রশ্নপত্র ডিজিটাল সিস্টেমে দেয়া থাকবে যা নির্দিষ্ট সময়েই পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে। মজার বিষয় হলো পরীক্ষার জন্য যে প্রশ্নটি দেয়া হবে তা কোন মানুষ দ্বারা নির্ধারিত হবে না। প্রশ্নপত্রের সকল সেট পরীক্ষাকেন্দ্রে যথাসময়ে সরবরাহ করা হবে এবং একাধিক সেটই পরীক্ষার্থীরা দেখতে পাবে তবে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার ঘণ্টা বাজার পরেই পরীক্ষাকেন্দ্রে স্থাপিত ডিজিটাল ডিভাইস বা সিস্টেমের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা কোন সেটে পরীক্ষা দেবে তা জানতে পারবে। আর এটি লটারি পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয়ভাবে স্থাপিত ডিজিটাল সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেকোন সেট নির্ধারণ করবে যথাসময়ে। ফলে প্রশ্নপত্রের সকল সেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কয়েক মিনিট আগে দেখতে পারলেও প্রশ্নপত্র নির্ধারণটা একদম পরীক্ষার সময় শুরু হলে জানা যাবে বলে তা আর ১ মিনিট আগেও ফাঁস হবার সুযোগ থাকছে না।
আর একারণেই পরীক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়া বা কোনো মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পেলেও তা হবে সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক ও প্রতারণার শিকার, যা অতীতেও হয়েছে। কেননা, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত গ্রেফতারকৃত বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে জানা গেছে, ফেসবুকে সঠিক প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি একেবারেই ভুল। ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁস বিষয়ে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা দেশের ভালো ভালো শিক্ষকদের অনেকগুলো সাজেশন এক করে, তারপর এটাকে পরীক্ষার প্রশ্ন বলে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এভাবে পরীক্ষার্থীরা বারবার প্রতারিত হয়েছে।
তবে সঠিক প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের সত্যতা এই নয় বছরে একবারই প্রমাণিত হয়েছিল। গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠিত গণিত (আবশ্যিক) বিষয়ের যে প্রশ্নপত্র পরীক্ষার আগে সকালে বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া গিয়েছিল, তার সঙ্গে মূল প্রশ্নের মিল পাওয়া যায়। কিন্তু তখনও সেই সেট পরিবর্তন করেই পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। এ নিয়ে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এছাড়া এযাবৎ ফাঁস হওয়া কোনো প্রশ্নের সাথেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সাথে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ শতাংশের মিল পাওয়া যায়, যা কিনা যেকোন অভিজ্ঞ শিক্ষকের সাজেশন থেকে আরো বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে তা শতভাগ মিল থাকবার কথা। কাজেই প্রশ্নপত্রের নামে যা ফাঁস করা হয় তা যে একটি চক্রের প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কৌশল তা সহজেই অনুমেয়।
তাই এবার আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় এমন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নপত্র থেকে সাবধান থেকে প্রতারিত না হবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কারণ, পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার এক মিনিট আগেও কারো পক্ষেই সঠিক প্রশ্নপত্রটি জানার সুযোগ আর থাকছে না।
-