আন্দোলন শক্ত করতে বিএনপির প্রয়োজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর লাশ

S M Ashraful Azom
আন্দোলন শক্ত করতে বিএনপির প্রয়োজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর লাশ

সেবা ডেস্ক: প্রায় ১২ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাভোগ করছেন। অন্যদিকে দলের আরেক কর্ণধার সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারসন তারেক রহমান গ্রেনেড হামলা সহ একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে লন্ডনে পলাতক আছেন। ফলশ্রুতিতে এক প্রকার নেতৃত্ব শূন্যতায় ভুগছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।

এমতাবস্থায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দলের মধ্যে অন্তঃকোন্দল এক প্রকার প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছে। আন্দোলনের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সামনে একাধিক ইস্যু থাকলেও কোনোভাবেই আন্দোলন চাঙ্গা করতে পারছেনা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। আন্দোলনে ব্যর্থতার দায় কার এ নিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মধ্যে মতবিরোধ প্রকট হয়ে উঠেছে বলে দলীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।

সিনিয়র নেতৃবৃন্দের এই মতবিরোধ দূর করতে সম্প্রতি লন্ডন থেকে তারেক জিয়া বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে আলাদা ভাবে কথা বলেছেন। তারেক যাদের সাথে আলোচনা করেছেন তারা হলেন ফখরুল, রিজভী, খন্দকার মোশাররফ, গয়েশ্বর, নজরুল ইসলাম এবং মির্জা আব্বাস। তাদের সাথে আলাপকালে তারেক দলীয় ঐক্য বজায় রাখার অনুরোধ জানান। ফরখরুলে সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তারেক তার কারাবন্দী অসুস্থ মায়ের মুক্তির কথা চিন্তা করে হলেও পুনরায় রাজপথে সক্রিয় হওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধের জের ধরে ফখরুলের সাথে করা বিভিন্ন ঔদ্ধত্য আচরণের জন্য তার কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তারেক। এসময় ফখরুল পুনরায় দলীয় ঐক্য ফিরিয়ে এনে নির্দলীয় সরকারের দাবি এবং খালেদার মুক্তি আন্দোলন চাঙ্গা করবেন বলে অঙ্গীকার করেন বিএনপির মহাসচিব।

দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে পৃথক আলাপের পর গোপন বৈঠকে বসেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। এই গোপন মিটিংয়ে লন্ডন থেকে তারেক টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে। প্রায় চার ঘন্টা ধরে চলা এই মিটিংয়ে আন্দোলনের নতুন রূপরেখা তৈরী করার জন্য নিজ নিজ যুক্তি এবং মতামত তুলে ধরেন তারা। দলীয় সূত্রে জানা যায় মিটিংয়ে সিনিয়র নেতারা সারাদেশব্যাপী তাদের নেতাকর্মীর উপর সরকারদলীয় নেতাদের অত্যাচার এর কথা বললে তারেক সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের প্রতিরোধ করতে পাল্টা আঘাত করার নির্দেশ দেন। আন্দোলনকে পুনরায় বেগবান করতে সহিংস আন্দোলনের কোনো বিকল্প নাই বলে উল্লেখ করেন তারেক। এসময় তারেক নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার রেফারেন্স দিয়ে বলেন, ২০১৫ সালে মান্না সাহেব নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার যে পরামর্শ দিয়েছিলেন সেই পথেই হাঁটতে হবে আমাদের। সারা দেশে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ২/১ জন সিনিয়র নেতা সহ ৪/৫ জন আওয়ামী লীগ কর্মীর লাশ ফেলার পরামর্শ দেন তারেক। দুই একজন নেতা ২০১৫ সালে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যায় বিএনপির জনপ্রিয়তায় হ্রাস পাওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিলেও তারেক তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। অবশেষে মিটিং শেষে উপস্থিত নেতারা সবাই সহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে আন্দোলন চাঙ্গা করার ব্যাপারে সম্মতি জ্ঞাপন করেন।

উল্লেখ্য ২০১৫ সালে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সাথে ভাইবারে আলাপকালে মান্না বিএনপিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই তিনটা লাশ ফেলার পরামর্শ দেয়। মান্নার সাথে খোকার ভাইবার কথোপোকথন ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর প্রতিবাদ স্বরূপ মান্নাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছিল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে।

এদিকে আইনজীবীর মাধ্যমে কারাগারে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে তারেকের এই সিদ্ধান্ত জানালে তিনিও তাতে সম্মতি দেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।




ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top