যে যেখানে হাওয়া ভবনের এলিট ক্লাবের ৫ প্রভাবশালী

S M Ashraful Azom
যে যেখানে হাওয়া ভবনের এলিট ক্লাবের ৫ প্রভাবশালী

সেবা ডেস্ক: হাওয়া ভবন। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান গড়ে তুলেছিলেন সুসজ্জিত এই ভবনটি। যেখানে তৎকালীন বিএনপি সরকারের আড্ডাস্থল হিসেবেই পরিচিত ছিলো এই হাওয়া ভবন । রাজনৈতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও গোপন সিদ্ধান্ত নেয়া হতো এই ভবন থেকেই। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সময় ২০০৭ সালে যৌথ বহিনী ওই ভবনে অভিযান চালিয়ে ‘এলিট ক্লাব’ নামের একটি কক্ষ পায়। যেখান থেকে নিয়ন্ত্রিত হতো বিএনপির রাজনীতি, ব্যবসা, চাঁদাবাজি। আর এর নেতৃত্ব দিতেন তারেক রহমান, গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, হারিছ চৌধুরী, সিলভার সেলিম এবং লুৎফুজ্জামান বাবর। বিএনপি সরকার ক্ষমতাচ্যুত হবার ১০ বছর পর এলিট ক্লাব নেই, সদস্যরাও রয়েছে চরম দুর্দিনে। প্রত্যেকের অবস্থাই রাজনৈতিক ভাবে ধরাশায়ী।

এলিট ক্লাবের সভাপতি তারেক জিয়া। যিনি দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে পলাতক। তার ঘাড়ে ঝুলছে দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড। লন্ডনে বসে পাকিস্তানি গোয়েন্দা আইএসআইয়ের পরামর্শে বাংলাদেশ বিরোধী পরিকল্পনা করাই তার একমাত্র কাজ।

৩৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন গিয়াসউদ্দিন আল মামুন। কারাগারে তিনি ভালোই আছেন। মোবাইল ফোন অবৈধভাবে ব্যবহারের জন্য দু’দফা শাস্তি পেয়েছিলো কারাগারে। এখনো আগের মতোই দুষ্ট বুদ্ধি তার মাথায় বিদ্যুতের মতো খেলে। বিএনপির লোকজন জেলে গেলে তাদের দেখভাল করেন। জেলে মামুন একরকম নেতা-গিরিই করেন। বাইরের সঙ্গে তার ভালোই যোগাযোগ আছে। মজা করে বলা হয়, জেলে মামুনই বিএনপির চেয়ারপারসন।

হারিছ চৌধুরীর মাথায় ২০ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক ছিলেন। এখন হারিছ লন্ডনে আছে বলে নিশ্চিত খবর পাওয়া গেছে। তবে বিএনপির লোকজনই তার উপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। এ কারণেই লন্ডনেও হারিছ চৌধুরী একরকম লোকচক্ষুর আড়ালেই থাকেন।

সিলভার সেলিম ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিজনেস পার্টনার তারেক জিয়ার অন্যতম অর্থ যোগানদাতা। কমিশন বাণিজ্যের টাকা সিলভার সেলিমের কাছেই জমা থাকতো বলে জানা যায়। ওই টাকা দিয়ে গড়ে ওঠে ওয়ান গ্রুপ এবং চ্যানেল ওয়ান। ২০০১ সালে সিলভার সেলিম বাগেরহাটের একটি আসন থেকে বিএনপির টিকিটে এমপি হয়েছিলেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি গ্রেপ্তার হন। মুক্তি পাবার পর তওবা করে রাজনীতি ছেড়েছেন। এখন ব্যবসা বাণিজ্য নিয়েই ব্যস্ত দিন কাটান।

লুৎফুজ্জামান বাবর আসলে ছিলেন চোরাচালানকারী। তারেকের চোরাচালান নেটওয়ার্ক দেখাশোনা করতেই বাবরকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বানানো হয়েছিল। বাবর এখন জেলে এক বদলে যাওয়া মানুষ। তাবলীগ, নামাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। হঠাৎ দেখে তাকে চেনার উপায় নেই। এক কাপড়েই কাটে তার দিন। অথচ ওয়ান ইলেভেনে তার বাসায় এক হাজার শার্ট পাওয়া গিয়েছিল।

আলোচিত সেই হাওয়া ভবন এখন আর নেই। পুরনো বাড়িটি ভেঙ্গে সেখানে তৈরি হয়েছে ভবন। তবু হাওয়া ভবনের নামটি গেঁথে আছে অনেকেরই মনে। তাই হাওয়া ভবনের সঙ্গে যুক্ত আলোচিত এই কর্মকর্তাদের নিয়ে কৌতুহল সব সময়ই থাকবে। হয়তো আরো কয়েকযুগ এই নামটি আতঙ্কের সঙ্গে স্মরণ করবে এদেশের মানুষ।



ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top