ঈদ নাকি বিশ্বকাপের পর শুরু হবে বিএনপির আন্দোলন

S M Ashraful Azom
ঈদ নাকি বিশ্বকাপের পর শুরু হবে বিএনপির আন্দোলন

সেবা ডেস্ক: প্রায় বারো বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থা এখন খুবই সংকটাপন্ন। ক্ষমতা থেকে ছিটকে যাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার বিরোধী আন্দোলন জোরদার করে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে যাচ্ছে দলটি। কিন্তু দলের সাংগঠনিক দূর্বলতা, দলীয় অন্তঃকোন্দল সহ বিভিন্ন কারণে বিএনপির কোনো আন্দোলনই সফলতার মুখ দেখেনি।

প্রতিবার আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীতে ‘ঈদ’ এর পর তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হত কেন্দ্রীয় নেতাদের পক্ষ থেকে। কিন্তু বিএনপির কাঙ্খিত সেই ‘ঈদ’ এখনো আসেনি। ফলশ্রুতিতে বিএনপির পক্ষ থেকে বার বার বলা ‘ঈদ এর পর তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে’ এই বাক্যটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ধরণের কৌতুকে পরিণত হয়েছে।

বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারো বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত কারামুক্তি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনী প্রচারণায় মন্ত্রী-এমপিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল, সংসদ নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ঈদের পর আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে।

জানা গেছে, সম্প্রতি এসব বিষয় নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন জেলা নেতাদের মতামত ও সুপারিশ চাওয়া হয়। তৃণমূল নেতারা কঠোর আন্দোলনের বিষয়ে হাইকমান্ডকে সুপারিশ করে। এরপরই সিদ্ধান্ত হয়, রোজার ঈদের পরই দাবি আদায়ে সর্বশক্তি নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

এই আন্দোলনের রূপরেখা এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনার জন্য লন্ডনে ফখরুলের সাথে বৈঠক করেছেন তারেক জিয়া। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঈদ এর ২/৩ দিন পর থেকেই কঠোর আন্দোলনে নামার কথা বিএনপির। সম্প্রতি দলের সিনিয়র নেতারা আন্দোলনের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বৈঠকে বসলে রিজভীসহ একাধিক সিনিয়র নেতা এখনই আন্দোলনে নামতে আপত্তি জানান। কারণ হিসেবে তারা বলেন দেশের মানুষ এখন বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে ব্যস্ত আছে। এমতাবস্থায় আন্দোলনে নেমে জনসমর্থন পাওয়া যাবেনা। এমনকি দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এখন রাজনীতির চেয়ে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে বেশি ব্যস্ত। ফলশ্রুতিতে আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করলে অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে না।

এদিকে বিশ্বকাপের এই অজুহাতকে অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এসময় তিনি রিজভী সহ দলের একাধিক সিনিয়র নেতাদের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ম্যাডাম যেখানে কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, সেখানে আপনারা বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে ফুর্তি করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি আরো বলেন, আপনাদের ব্যর্থতার জন্যই ম্যাডামের কারাবাস দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এসময় রিজভী আন্দোলনের ব্যর্থতার জন্য পাল্টা ফখরুলকে দায়ী করেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতার বরাত দিয়ে জানা যায়, আন্দোলনের ব্যর্থতা নিয়ে এসময় রিজভী এবং ফখরুলের মাঝে বেশ কিছু উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ফলশ্রুতিতে কোনো প্রকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়ে যায়।

এমতাবস্থায় বিএনপির আন্দোলন ঈদ এর পর শুরু হবে নাকি বিশ্বকাপ ফুটবলের পর শুরু হবে এ নিয়ে আবারো দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে দলের নেতাকর্মীরা।


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top