সেবা ডেস্ক: বাঙালি জাতির শিকড় নিহিত রয়েছে কৃষির মধ্যে। প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি ও কৃষকের অবদান অসামান্য। দেশের জনগণের দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদা ও আমিষের চাহিদা পূরণ, শিল্পোৎপাদন, কর্মসংস্থানসহ রপ্তানি বাণিজ্যে কৃষিখাতের অবদান উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশ একটি কৃষিভিত্তিক দেশ। প্রতিবেশী দেশের মধ্যে থাইল্যান্ড কৃষি খাতে সব থেকে এগিয়ে আছে। সেই কৃষি প্রধান দেশের রাজকুমারী মহা চক্রী সিরিনধরন বাংলাদেশে এসেছেন চার দিনের সরকারি সফরে। সফরে তিনি চট্টগ্রামে যান। চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস মিথ্যা পাহাড়ে ভেটিভার সেন্টার অর্থাৎ ভেটিভার গ্রাস সেন্টারের উদ্বোধন করেন। বন্দর নগরী চট্টগ্রাম অনেকটা পাহাড়ে ঘেরা। এজন্য প্রতি বর্ষা মৌসুমে এখানকার মানুষকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পাহাড়ি ধসে আতংকে থাকতে হয়। ভেটিভার গ্রাস বা বিন্না ঘাস ভূমিক্ষয় ও পাহাড়ধসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বিশ্বের শতাধিক দেশে নদী তীর ও বাঁধ রক্ষা এবং পাহাড়ে ভূমিক্ষয় রোধে এ ঘাস ব্যবহার করা হচ্ছে। চার থেকে ছয় মাসেই এ ঘাসের শেকড় মাটির ছয় থেকে দশ ফুট গভীরে ছড়িয়ে পড়ে। এর শেকড়ের সহনশক্তি ইস্পাতের ছয় ভাগের এক ভাগ। প্রতিকূল পরিবেশে সহজেই মানিয়ে নেয়ার এবং টিকে থাকার ক্ষমতা আছে এই ঘাসের। এজন্য প্রয়াত রাজা ভূমিবলের গড়া রয়্যাল চাইপাত্তানা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে থাইল্যান্ডের রাজকন্যার হাত ধরে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করে সরকার। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এই প্রকল্পে কাজ করবে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ প্রকল্পের জন্য দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ারও ঘোষণা দেন মন্ত্রী।
থাই রাজকুমারী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে দুই দেশের কৃষি খাতে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ সময় থাই রাজকুমারী বাংলাদেশের অদম্য উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করেন বিশেষ করে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প এবং ক্ষুদ্র সঞ্চয় কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র দূরিকরণের মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়ন। দেশের কৃষি খাতের সাফল্য তুল ধরে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য লবণাক্ততা, বন্যা এবং ক্ষরাসহিষ্ণু প্রজাতির ধান উদ্ভাবন করেছে। শুধু তাই নয় দেশ বর্তমানে স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এবং ছাগল, গরু এবং ভেড়া থেকে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে মাংস উৎপাদন করছে।
থাইল্যান্ডে বছর জুড়ে আমি পাওয়া যায়। এজন্য প্রধানমন্ত্রী আমি চাষে দুই দেশের সহযোগিতার ব্যাপারে অগ্রাহ্য প্রকাশ করেন। বিদেশের মাটিতে আমাদের মৌসুমী ফল লিচুর বেশ কদর রয়েছে। থাই রাজকুমারী আমাদের দেশের লিচু আমদানি করছে বলে জানান। লিচু রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় যুক্ত হল আরেকটি দেশ থাইল্যান্ড।
নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংস্বম্পূর্ণ একটি দেশ। দেশের উন্নতির এই ধারাবাহিকতা আজ পুরো বিশ্বের কাছে পরিচিত। স্বাধীনতার পর যে দেশ দেশের মানুষকে এক বেলা একমুঠো অন্ন তুলে দিতে হিমশিম খেত সে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের নিজস্ব অর্থায়নে সম্পন্ন করছে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প। এসব উন্নতির নেপথ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়,উদ্দীপ্ত নেতৃত্ব।