নিরাপদ ঈদযাত্রায় বাঁশখালী প্রধান সড়কে পুলিশি টহল জোরদার করা হোক

S M Ashraful Azom
নিরাপদ ঈদযাত্রায় বাঁশখালী প্রধান সড়কে পুলিশি টহল জোরদার করা হোক

"ঈদ উপলক্ষে দ্বিগুন ভাড়া বন্ধ, নিরাপদ সড়কের ব্যবস্থা প্রদান, নির্ভীগ্নে বাড়ি ফেরার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশি টহল জোরদার, দূর্ঘটনা রোধে সড়কে খানাখন্দ ভরাট ও সড়ক সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হোক"

শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: সামনে ঈদ! চাকরির স্বার্থে শহুরে থাকা মানুষগুলো অন্তত ঈদের খুশি স্বজনদের সাথে ভাগাভাগি করতে গ্রামে চলে আসে নাড়ীর বন্ধনে। ঈদ উপলক্ষে চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দারহাট বাসটার্মিনাল সহ নতুন ব্রীজ এলাকায় ঘরমুখো বাঁশখালীর মানুষের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। এ দিকে শহুরে থাকা প্রিয়জনদের বাড়ি ফেরা নিয়ে অনেকেরই সংশয়, উৎকন্ঠায় কাজ করে। কেননা সম্প্রতি বাঁশখালী সড়কে বেপরোয়া বাস-সিএনজির সংঘর্ষে নানা দূর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। হারিয়েছে অনেকে তার প্রিয়জনদের। নিত্যদিনের মতো চট্টগ্রাম-বাঁশখালী প্রধান সড়কে স্পেশাল সার্ভিসের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া করা হচ্ছে। যাত্রী হয়রানি রোধে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা কোন ভূমিকা না নেয়ায় মালিক এবং শ্রমিক পক্ষ সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে একের পর এক ভাড়া বৃদ্ধি করে চলেছে। অনেক সময় ভাড়া ডাকাতির প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে যাত্রীদের সাথে চালক-হেলফারদের মধ্যে দু'দন্ড বাকবিতণ্ডা সহ হাতাহাতি চলে। ভাড়া নৈরাজ্যরোধে বাঁশখালী পিএবি প্রধান সড়ক ও অভ্যান্তরিন সড়কে চলাচলকারী বাস ও সিএনজি অটোরিক্সার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ, উন্নত বাস সার্ভিস চালু করার দাবিতে বাঁশখালীতে কর্মরত সাংবাদিকদের উদ্যোগে মাননীয় যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রীর বরাবরে বাঁশখালীর সরকারী চাকুরেসহ বিভিন্ন শ্রেনীর পেশাজীবী ও সর্বস্তরের সাধারণ জনগণের গণস্বাক্ষরে গত ৩১ মে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এর মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জেলাপ্রশাসক বাঁশখালী সড়কের ভাড়ানৈরাজ্য রোধে খুব শিগ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

বাঁশখালীতে যানচলালের একমাত্র মাধ্যম স্পেশাল বাস-সুপার সার্ভিস, জিএনজি। ফিটনেসবিহীন লক্করঝক্কর বাসগুলোতে যাতায়াতকারী যাত্রীরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত যাত্রী হয়রানি ও পথিমধ্যে নিয়ম বহির্ভূত যাত্রী উঠানামা এবং বাঁশখালী স্পেশাল সার্ভিসের যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছে যাত্রী সাধারণ। সূত্র মতে, ৪০/৪৪ কিলোমিটার এর দূরত্বে চট্টগ্রাম যেতে বাঁশখালীবাসীর দুই ঘণ্টারও অধিক সময় ব্যয় হয়। বাঁশখালীর একমাত্র আঞ্চলিক মহাসড়কটি সোজা আনোয়ারা হয়ে বাঁশখালীর বুক ছিড়ে পেকুয়া টৈটংএর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। একমাত্র এ আঞ্চলিক মহাসড়কটি সংস্কার না করাতে অবৈধ স্থাপনা, ফুটপাতের দোকানের রাজত্বে দিন দিন সরু হয়ে যাচ্ছে। বাঁশখালীতে সুনির্দিষ্ট কোন বাস টার্মিনাল না থাকাতে এলোপাতাড়ি গাড়িগুলো পড়ে থাকাতে যানজট থাকে প্রতিনিয়ত। আর অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভারগণ গাড়ি চালানোর ফলে দুর্ঘটনা নিত্যসঙ্গী। সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পটিয়া-আনোয়ারা বাঁশখালী সড়কে ইচ্ছা মাফিক ভাড়া আদায় করছে মালিক শ্রমিকরা। বাঁশখালী শেষপ্রান্ত প্রেম বাজার থেকে চট্টগ্রামের পাঁচটি কাউন্টার হয়ে স্পেশাল সার্ভিসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে চট্টগ্রামে যাতায়াত করলেও তাতে যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তা পায়না যাত্রী সাধারণ। টিকেট সিস্টেমে এই গাড়িতে কোন যাত্রী উঠানামা (টিকেট বিহীন) করার নিয়ম না থাকলেও এরা ক্ষণে ক্ষণে যাত্রী উঠানামা ও মালবোঝাই করে থাকে। স্পেশাল গাড়িগুলো পুকুরিয়া নামক স্থানে চেক কাউন্টার থাকলেও তাও তাদের (ড্রাইভারের) সাথে আঁতাত করে চলে। অন্য বিরতিহীন গাড়ি বাঁশখালী উপজেলা সদর জলদী থেকে দুইটা কাউন্টার পেরিয়ে চট্টগ্রামে গেলেও তাদের অবস্থাও জীর্ণশীর্ণ। এরা লোকাল সার্ভিসের মত পদে পদে লোক উঠানামা করাতে থাকে।

এরা ঈদ উপলক্ষে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কি? বাঁশখালীর অধিকাংশ গাড়ির ফিটনেস না থাকলেও মালিকেরা দাপটে এসব গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে সাধারণ জনগণ। তাছাড়া অধিকাংশ গাড়ি হেলপার দিয়ে চালানো হলেও সেদিকে কোন নজরদারী নেই মালিক পক্ষের। এ ব্যাপারে যাত্রীরা জানান, বাঁশখালী স্পেশাল সার্ভিসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও সেই অনুসারে যাত্রীসেবা দিতে অক্ষম। তারা আরো বলেন, গাড়ির সিটগুলো এতই ছোট যে সোজা হয়ে বসাও অসম্ভব। সারাদেশের গাড়িতে ইঞ্জিনে কোন যাত্রী না বসালেও বাঁশখালীর স্পেশাল গাড়িগুলোতে ইঞ্জিনের উপর বসানো হয় ৬ জন যাত্রী। ফলে ড্রাইভার সারাক্ষণ যাত্রীদের সাথে খোশগল্পে মেতে থাকে। এতে অনেকসময় হেয়ালিপনায় সংঘটিত হয় সড়ক দূর্ঘটনা। মো. আলী হায়দার চৌধুরী নামের এক যাত্রী বাঁশখালীবাসীর ঈদ যাত্রা নিরাপদ করতে রাতের বেলায় প্রধান সড়কের স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে(পুকুরিয়া এককাইত্তা পুকুরের পাড় হতে বাণীগ্রাম বাজার, সাধনপুর কিং অব বাঁশখালী কমিউনিটি সেন্টার থেকে বাণীগ্রাম বাজার, চেচুরিয়া বিল, নাপোড়া ব্রীজ, প্রেম বাজারের দক্ষিণপ্রান্তের সীমান্ত ব্রীজ) এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করার কথাও জানান। বাঁশখালী সড়কে ভাড়া বৃদ্ধিরোধ এবং দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার করতে থাকা বাঁশখালীর একমাত্র সড়কের সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন জনগণ।


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top