স্বাক্ষর জালিয়াতি’র রিট‌ে বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন স্থগ‌িত

S M Ashraful Azom
স্বাক্ষর জালিয়াতি’র রিট‌ে বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন স্থগ‌িত

সেবা ডেস্ক: বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন বিকৃত ও সচিবের স্বাক্ষর জাল করে রিট করায় স্থগিত হয়ে যায় বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশন‌ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থার নেওয়া হবে বল‌ে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশন থেকে জানা যায়, বকশীগঞ্জ পৌর নির্বাচন সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রধান উপ সচিব ফারহাদ হোসেন ও সদস্য টাঙ্গাইলের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের স্বাক্ষর জাল ও তদন্ত প্রতিবেদন বিকৃত করে উচ্চ আদালত‌ে র‌িট কর‌ে ৩য় স্থানে থাকা আওয়ামীলীগের প্রার্থী শাহিনা বেগম। তার প্রতারনা মুলক রিটের প্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেয় হাইকোর্টের ব্রেঞ্চ।
শাহিনা বেগম কর্তৃক দায়ের কৃত রিটের অনুকুলে দায়েরকৃত কাগজপত্রে দেখা যায় নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব ফরহাদ হোসেনের স্বাক্ষর জাল। আর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, টাঙ্গাইলের স্বাক্ষরই দেওয়া হয়নি।

৭ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে উপ-সচিব ফরহাদ হোসেন জানান, শাহিনা বেগম কর্তৃক উচ্চ আদালতে দায়েরকৃত তদন্ত প্রতিবেদনটি নির্বাচন কমিশনের নয়, শাহিনা বেগম নিজেই এসব ভুয়া কাগজপত্রাদী তৈরী করে তা উচ্চ আদালতে দাখিল করেছেন। এই বিষয়ে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও নির্বাচনের উপ-সচিব জানান।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ ডিসেম্বর বকশীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ১২টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১টি কেন্দ্রেই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতীক নিয়ে ৮ হাজার ৫৯৯ ভোট পান। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রার্থী ফখরুজ্জামান মতিন ৭ হাজার ৭০৫ ভোট পান। আর আওয়ামীলীগের প্রার্থী শাহিনা বেগম ৫১৬০ ভোট পেয়ে ৩য় স্থানে রয়েছেন।পরবর্তিতে নির্বাচনের কারচুপি এনে উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন শাহিনা বেগম, ৫১৯/২০১৮। পরে রিটের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু তদন্তের নিদের্শ দেয় উচ্চ আদালত।

আদালতের নির্দেশনা পেয়ে ৫৯৭ জনের স্বাক্ষী গ্রহণ করে তদন্ত কার্য সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব ফরহাদ হোসেন ও সদস্য টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এই কমিটি নির্বাচনে দায়িত্বরত ৫৯৭ জনের স্বাক্ষী গ্রহন করলে স্বাক্ষীদের মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার পক্ষে মতমত প্রকাশ করে।

তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৯ মার্চ স্থগিত হওয়া কেন্দ্রের ভোগ্রহন গ্রহনের তারিখ নির্ধারন করে। পরে সেই নির্বাচনের তদন্ত প্রতিবেদনটি বিকৃত করে তদন্ত কমিটির প্রধান ও সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে, ২৮ মার্চ আরেকটি রিট করে শাহিনা বেগম। রিটের প্রেক্ষিতে নির্বাচনের মাত্র ১৫ ঘন্টা আগে নির্বাচন স্থগিত করে হয়।

শাহিনা বেগম কর্তৃক রিটের অনুকুলে দায়ের তদন্ত প্রতিবেদনটি উচ্চ আদালত থেকে উত্তোলন করলে শাহিনা বেগমের জালিয়াতির ঘটনাটি নির্বাচন কমিশনারের নিকট ধরা পরে।

এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধানের জালিয়াতি ঘটনায় পুরো নির্বাচন কমিশনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।


#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top