অনিক ও আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

S M Ashraful Azom
অনিক ও আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


সেবা ডেস্ক: ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি সরকারের একবছর পূর্তিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট গণতন্ত্র হত্যা দিবসের নামে সারা দেশে আবারও জ্বালাও পোড়াও শুরু করলে তাদের ছোড়া বোমার আঘাতে আহত হয় ফেনী জেলার স্কুল ছাত্র মিজানুর রহমান অনিক।

বিএনপি’র সেই বোমার আঘাতে তার দুই চোখের চরম ক্ষতি হয়। ডান চোখ একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। বাম চোখে অল্প অল্প দেখতে পেত স্কুল ছাত্র মিজানুর রহমান অনিক। সে সময় অনিক এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।

শত প্রতিকূলতার মধ্য থেকেও পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবার এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়েছে অনিক। অনিকের এই সাফল্যের কথা শুনে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আহত অনিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়, পরবর্তীতে আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অনিকের কথা শুনে প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নেন। প্রয়োজনে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা ও পাসপোর্ট তৈরিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন তিনি ।

২০১৫ সালে জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু করতে চেয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। শত শত গাড়ি ভাংচুর করে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই সময় ২৩১ জনকে হত্যা করে তারা। যাদের বেশিরভাগই পেট্রোল বোমা এবং আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যায়।

ওই ঘটনায় আহত হয় আরো ১ হাজার ১৮০ জন। ওই সময় হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় সরকারি অফিসগুলো। বিএনপি-জামায়াতের ভাংচুর এবং আগুনে পুড়ে ৬টি ভূমি অফিসসহ ৭০টি সরকারি কার্যালয় নষ্ট হয়ে যায়।

সে সময় ২,৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেলগাড়ি এবং ৮টি যাত্রীবাহী জাহাজে আগুন লাগিয়ে হামলা চালায় তারা। বিএনপি জামায়াতের সহিংস কর্মকাণ্ড যে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে তা বিদেশি আদালতেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের সহিংসতায় আহত বিপুল সংখ্যক মানুষের সুচিকিৎসা ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিহতদের পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ান মানবতার কাণ্ডারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী ফোন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ড. জুলফিকার লেনিনকে অনিকের চিকিৎসার সার্বিক তদারকির দায়িত্ব নিতে বলেন।

ড. জুলফিকার লেনিন জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেন, ‘রেহানা আমাকে ফোন করে জানিয়েছে, অনিক নামে একজন স্কুল ছাত্র চোখে গুরুতর জখম নিয়ে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে ভর্তি আছে। ওকে বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করো’।

আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথার প্রেক্ষিতে বললাম যে অনিক এখন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন; আমি গতকাল দেখে এসেছি। উনি বললেন, খোঁজ নাও, ও চক্ষুবিজ্ঞানে আছে।

আমি অবাক হয়ে গেলাম, পরের দিন অনিককে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে দেখে। যে খোঁজ আমার রাখার কথা সেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং রেহানা আপা রাখছেন’।

অনিককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২২ জানুয়ারি ভারতের শংকর নেত্রালয়ে পাঠানো হয়। চার বার অস্ত্রোপচার করা হয় তার চোখে । সে এখন মোটামুটিভাবে সুস্থ।

অনিক ও অনিকের পরিবার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী অনিকের প্রতি মমতার হাত বাড়িয়েছিল বলেই আজ তার এই সাফল্য। অনিকের রেজাল্টের খবর শুনে প্রধানমন্ত্রী তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে আরও ভাল কিছু করার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন।




ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top