কে এই আলোকচিত্রী শহিদুল আলম?

S M Ashraful Azom
কে এই আলোকচিত্রী শহিদুল আলম?

সেবা ডেস্ক:  নিরাপদ সড়কের দাবিতে ২৯ আগষ্ট রবিবার থেকে শুরু হওয়া স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে আন্তর্জাতিক একটি মিডিয়ার কাছে অযৌক্তিক ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করা হয়।

আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেফতারের পরপরই তাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরণের আলোচনা সমালোচনা শুরু হয় বিভিন্ন গন মাধ্যমে। তাকে গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরণের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।

১৯৮৪ সালে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে তিনি আলোকচিত্রী হিসাবে কাজ শুরু করেন, ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দৃক। আলোকচিত্র গ্রন্থাগার হিসেবে শুরু করলেও পরে দৃকের সঙ্গে যুক্ত হয় দৃক গ্যালারি, পাঠশালা, দৃক আইসিটি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সরকারি কোনো সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই দেড় যুগ ধরে চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফির সার্টিফিকেট কোর্স চালিয়ে যাচ্ছিলেন আলোকচিত্রী, দৃকের প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম। নিজস্ব বিবেচনায় স্নাতক, ডিপ্লোমা, শর্ট কোর্স, লং কোর্সসহ বিভিন্ন নামে সনদ দেওয়া হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠিত পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট থেকে।

পাঠশালায় নিজের একক আধিপত্য ধরে রাখতেই শহিদুল সরকারি অনুমোদন নিয়ে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে চলেছেন এতদিন।

পরবর্তীতে তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের মুখে গত বছর সরকারি সংস্থার অনুমোদন নিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে খাতিরের বিনিময়ে তার পরিচালিত অনূমোদনহীন ফটোগ্রাফিক কোর্স ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করেছেন শহিদুল।

বিদেশে লবিং করে নিয়ে আসছেন কোটি কোটি টাকার অনুদান। সেই অনুদানের টাকা স্থানান্তর করছেন নিজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে। এ জন্য তাকে কোথাও জবাবদিহি করতে হচ্ছে না।

শহিদুল তার প্রতিষ্ঠানকে অলাভজনক বললেও এক বছর মেয়াদী কোর্সের জন্য পাঠশালায় আদায় করা হয় ৮০ হাজার টাকা। অন্যান্য কোর্সের জন্য রয়েছে পৃথক ফি।

তার একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয় শিক্ষার্থী সহ ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উপর। যখন ইচ্ছে কাউকে চাকরি দিতে আবার বরখাস্ত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

২০১৬ সালের এপ্রিলে পাঠশালার সিনেমা বিভাগের প্রধান চলচ্চিত্র নির্মাতা ইশতিয়াক জিকোসহ কয়েকজন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেন শহিদুল আলম।

শিক্ষকদের ওইভাবে ছাঁটাইয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন সিনেমা বিভাগের এক বছর মেয়াদী কোর্সের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের না ফেরালে প্রতিষ্ঠান ছাড়ার হুমকি দেন তারা, যদিও ততদিনে ৮০ হাজার টাকা কোর্স ফির অর্ধেক তারা পরিশোধ করে ফেলেছেন।

জিকোসহ চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা সে সময় আর ফিরতে পারেননি। নিজেদের দাবিতে দৃঢ় শিক্ষার্থীরা শেষ পর্যন্ত পাঠশালা ছেড়েছিলেন।

জানা যায় রহস্যজনক কারণে শহিদুল পাঠশালার কোনো কর্মীকে এক বছরের বেশি থাকতে দেন না। এটা তার কৌশল। তার এই প্রতিষ্ঠান সমূহ মূলত অনুদানের উপর ভিত্তি করে চলার কথা, সে অনুযায়ী বিদেশ থেকে অনুদানও পান তিনি। কিন্তু প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, অনুদানের টাকা বন্টনে কিংবা খরচে যথেষ্ট অস্বচ্ছতা রয়েছে।

কর্মসূচির বাস্তবায়ন না হলেও অনুদানের কোটি কোটি টাকার প্রায় সবটাই খরচ দেখিয়ে তুলে নেন শহিদুল আলম। এমনটাই অভিযোগ করেন তার প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা। কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাইলেই তাকে বের করে দেয়ার হুমকি আসে।

সাম্প্রতিক ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে জানা যায়, বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করার জন্যই বিদেশী মিডিয়ার কাছে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন শহিদুল আলম।



ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top