কাজীপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পরিকল্পনায় উন্নয়নের মহাযাত্রা

S M Ashraful Azom
0
কাজীপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পরিকল্পনায় উন্নয়নের মহাযাত্রা
আবদুল জলিল, কাজীপুর : কাজীপুরের তিন লক্ষ জনগোষ্ঠীর জীবন-মান উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও কাজীপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক সরকার যিনি বকুল সরকার নামেই সমধিক পরিচিত।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতা, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং যমুনা শিকস্তি মানুষের উচ্চ শিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান নাটুয়ারপাড়া ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ বকুল সরকার দ্বিতীয়বারের মতো জনগণের আশা ভালোবাসায় কাজীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার গৃহিত কাজীপুরের উন্নয়নকেন্দ্রিক প্রকল্পগুলো ইতোমধ্যে উপজেলা, জেলার তথা দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার নিকট মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ইউএনডিপির জার্নালে এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ফেইসবুক পেজে এসব প্রকল্পগুলো হতদরিদ্র মানুষের জীবন-মান উন্নয়নে টেকসই প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে তিনি কাজীপুরের প্রতিটি জায়গায়, প্রতিটি গোত্রের মানুষের সাথে কথা বলেছেন, তাদের চাহিদার কথা শুনেছেন আর সে অনুযায়ী আগামীর কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি যেমন যমুনার ডানতীরের মানুষের চাহিদা নিরূপন করেছেন তেমনি যমুনা শিকস্তি বিশাল জনগোষ্ঠীর কথা শুনে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা করেছেন। সে মোতাবেক বিগত তিন বছর যাবৎ উপজেলা পরিষদ এবং উপজেলা গভার্ন্যান্স প্রকল্পের মাধ্যমে লাগসই প্রকল্প গ্রহণ এবং একের পর এক বাস্তবায়ন করে চলেছেন। দীর্ঘসময় নিয়ে তিনি মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে যাচাই-বাছাই করে ভৌগোলিক, সামজিক, অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনাপূর্বক একের পর এক সময়োপযোগী ব্যতিক্রমী সব প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছেন।

উপজেলা পরিষদ প্লানবুক ঃ উপজেলা পরিষদের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং জনগণকে গৃহিত প্রকল্প সম্পর্কে জানাতে তৈরি করা হয়েছে‘ উপজেলা পরিষদ প্লানবুক।’ সেখানে আগামীর কর্মপরিকল্পনাসমূহের বিস্তারিত তথ্যের বিস্তার ঘটিয়েছেন। এতে করে একজন সাধারন নাগরিকও প্লানবুক দেখে তার এলাকার কি কি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে বা হতে চলেছে সে সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারবেন। বর্তমান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব তথ্য এখানে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েেেছ। আর অবাধ তথ্য বাতায়ণের সুযোগ নিয়ে মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন হচ্ছে। প্লানবুকে উল্লিখিত কাজটি বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে হয়েছে কিনা কিংবা আগামীর গৃহিত প্রকল্পের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে জনগণ সরাসরি উপজেলা পরিষদে এসে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে পারছে। চাইলে তারা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য এখান থেকে সংগ্রহ করতে পারছে। এতে করে কাজীপুরের মানুষ আগের চেয়ে যেমন নানা বিষয় সম্পর্কে যেমন বেশি জানতে পারছে সেইসাথে অনেক বেশি অধিকার সচেতন হচ্ছে। এই সচেতনতাবোধ কাজীপুরের উন্নয়ণে সহায়ক ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে।

কাজীপুরের অবাধ তথ্যবাতায়ণের ফলে জনগণ যে অনেক সচেতন হয়েছে সে সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রি কাজীপুরের গণমানুষের সর্বজনপ্রিয় এমপি মোহাম্মদ নাসিম প্রায়শই বলেন, ‘কাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখন আর ত্রাণ-সামগ্রি বা চাল-গম চায়না। তারা এলাকার উন্নয়ন চায়, কাজীপুরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, ফসল প্রক্রিয়াজাতকরণ সুবিধা চায়।’ কাজীপুরবাসির এই পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরকার। তার গতিশীল কর্মকান্ড এবং নেতা মোহাম্মদ নাসিমের পরামর্শ ও সহায়তা এসব মিলেই কাজীপুর এখন ডিজিটাল বাংলার মডেল।

ধাত্রী প্রশিক্ষণঃ ইউজেডজিপির প্রকল্পের মাধ্যমে কাজীপুরের নাটুয়ারপাড়া ইউপির রেহাইশুড়িবেড় আমিনা দৌলতজামান মানবসেবা হাসপাতালে দুই ব্যাচে পর্যায়ক্রমে চরাঞ্চলের ৭০ জন মহিলাকে ধাত্রী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। নিরাপদ প্রসবের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের উপকরণাদীও সরবরাহ করা হয়েছে। সেই থেকে বিশাল চরাঞ্চলের গর্ভবতী মায়েদের আশা-ভরসার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন এই প্রশিক্ষিত ধাত্রীরা। চরের মানুষ ইউজেডজিপির সহায়তায় উপজেলা পরিষদের গৃহীত এই পদক্ষেপকে এখন আশীর্বাদ হিসেবে দেখছে। ইচ্ছে করলেই তারা দ্রুত চিকিৎসার জন্য নদী পার হয়ে পশ্চিম পাড়ে আসতে পারে না। আর সন্তান সম্ভবা মায়েদের প্রসবকালিন সময়েতো নয়ই। বিকেল হলেই সমস্ত নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও রাত্রিকালিন সময়ে প্রসবের সমস্যা হলে চোখের সামনে নিজ মানুষের মৃত্যু দেখা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। যে নবজাতকের আনন্দে পুুরো পরিবারের মুখে হাসির ঝিলিক থাকার কথা সেখানে মৃত্যুর হিমশীতলতা সব কিছুকে ম্লান করে বিষন্নতা আর একরাশ হাহাকার উপহার দেয়। এক প্রাণের সৃষ্টিতে বলিদান হয় কারো পরম আদরের কন্যা বা স্ত্রী অথবা নিকটাত্মীয়া। নবজাতকের আগমনে যেখানে আনন্দের সানাই বাজার জন্য প্রস্তুত; মুহূর্তেই যন্ত্রণার বিভীষিকায় ডুবে গিয়ে কান্নার রোল পড়ে। কাজীপুরের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের সন্তান সম্ভবা মায়েদের তাই গর্ভধারণের পর থেকেই অজানা এক আতঙ্ক পেয়ে বসে। অনাগতের জন্য ভালোবাসার সাথে অজানা চিন্তায় তারা সর্বদা শঙ্কিত থাকে। বিশেষ করে গরীব-দুঃখী অসহায়দের এই চিন্তা প্রকট। তারা ইচ্ছে করলেই অর্থের অভাবজনিত কারণে যমুনার পশ্চিম পাড়ে এসে প্রসবের ব্যবস্থা করতে পারে না। প্রয়োজনে ধাত্রী বা ডাক্তারের সেবা তাদের কাছে সোনার হরিণ। এসব কিছু বিবেচনায় এনেই চরাঞ্চলের মানুষ কাজীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরকার এই প্রকল্প গ্রহণ করেন। এখন নিয়মিত ও নিরাপদে মা তার সন্তানকে পৃথিবীর বুকে স্বাগত জানাচ্ছে। একাজে সহযোগিতা করছে প্রশিক্ষিত ধাত্রীগণ। কিছুদিন পূর্বে প্রশিক্ষিত ধাত্রীদের রিফ্রেশারস ট্রেনিং করানো হয়েছে। বকুল সরকার জানান, চরাঞ্চলের পঞ্চাশ সহ¯্রাধিক গর্ভবতী মায়ের নিরাপদ প্রসবের লক্ষ্যে ধাত্রী প্রশিক্ষণের মতো সময়োপযোগী পদক্ষেপ চরাঞ্চলবাসির জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।

মিডডে মিলঃ মিডডে মিল প্রকল্প গ্রহণ উপজেলা পরিষদের আরেকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত। নদী শিকস্তি কাজীপুরের অনেক স্কুলের ছেলেমেয়েরাই দুপুরের টিফিনের পরে আর বিদ্যালয়ে ফিরে আসতো না। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাছাই করে কয়েকটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিডডে মিল চালু করা হয়। এর সুফল পাওয়া গেছে সাথে সাথেই। শিক্ষার্থীদের ক্লাসমুখিতা অগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনলাখ টাকা ব্যয়ে ৬৫০ জন শিক্ষার্থীকে এই প্রকল্পের আওতায় দুপুরে টিফিন সরবরাহ করা হয়।

মহিলা ড্রাইভিংঃ কাজীপুর উপজেলা পরিষদের সৃজনশীল চিন্তার ফসলে সমৃদ্ধ হয়েছে নারীর ভবিষ্যৎ। নারীকে একটা চ্যালেঞ্জিং পেশায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে করে নারীর সম্মান বৃদ্ধির পাশাপাশি সারাদেশে এই প্রজেক্ট মডেল হিসেবে ইতোমধ্যে গৃহিত হয়েছে। বলছিলাম মহিলা ড্রাইভিং এর কথা। আজও বাংলাদেশের অনেক নামকরা উপজেলা -জেলা এমনকি বিভাগীয় পর্যায়েও যখন এই প্রকল্পের চিন্তাই কারো মাথায় আসেনি, তখন কাজীপুর উপজেলা পরিষদের সৃজিত এই প্রকল্প সফলভাবে শুরু ও শেষ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ চলবে বলে জানা গেছে। মাত্র তিন লাখ টাকা ব্যয়ে দুইমাসব্যাপী ২৫ জন মহিলার এই প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ণের দায়িত্ব পালন করেছে সিরাজগঞ্জ যমুনা মোটর ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার।

গত বছরের ২২ অক্টোবর এই প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করেন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক। প্রকল্প সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেন, পুরুষের চেয়ে মহিলা গাড়ী চালকদের হাতে যাত্রীর জীবন অনেক বেশি নিরাপদ। মাথা পুরোপুরি ঠান্ডা রেখে মহিলারা গাড়ী চালাতে পারেন বলে যাত্রীরাও তাদের গাড়িতে উঠতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। এই প্রকল্প গ্রহণ করায় তিনি কাজীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান বকুল সরকার ও উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শাফিউল ইসলামকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

এই প্রকল্প গ্রহণের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে উপজেলা চেয়ারম্যান বকুল সরকার জানান, যখন এই প্রকল্পের শুরু করি তখন অনেকেই কাজ সম্পর্কে সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু আমরা পেরেছি। বেকার অথচ স্বল্প শিক্ষিত মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই প্রকল্প একটি মাইলফলক উল্লেখ করে তিনি জানান, এই পদক্ষেপ একদিন সারাদেশের মানুষের কাছে সাদরে গৃহীত হবে। আমরাই এই প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা। এরই মধ্যে সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করে বেশ ক’জন চাকরি করছে। আর অনেকেই বাইরে যাবার চেষ্টা চালাচ্ছে।

প্রতিবন্ধীদের সহায়ক সামগ্রি প্রদানঃ ইউজেডজিপি প্রকল্পের আওতায় অন্যতম একটি প্রকল্প হলো দৃষ্টি, শ্রবণ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য সহায়ক উপকরণ বিতরণ। গত মাসে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৫ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, ১২ জন শ্রবণ প্রতিবন্ধী ও ৪ জন শারীরিক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সহায়ক সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এর ক’মাস আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সহায়তায় এসব প্রতিবন্ধী শিশুদের সনাক্ত করা হয়। এই প্রকল্পও দেশের অন্যান্য উপজেলার জন্য মডেল প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হবার যোগ্য। কাজীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ বকুল সরকার বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদেরকে চোখের আলো ফিরিয়ে দিয়ে এই পৃথিবীর অপার আনন্দের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার আনন্দ তুলনাহীন।

মানুষের মতো সবকিছু থাকলের শুধুমাত্র দৃষ্টিসীমা একেবারে কমে যাওয়ায় দেশের অনেক শিশু তাদের শিক্ষাজীবন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি সংসারে তারা বোঝা বলে বিবেচিত। যদি হতদরিদ্র পরিবারের কোন শিশু এই সমস্যার শিকার হয় তাহলে সেই শিশুটির পরবর্তি জীবনের কর্ম হয় ভিক্ষাবৃত্তি। তারা না পারে অন্যকে ছাড়া চলতে, না পারে নিজের কষ্টার্জিত উপার্জনে অর্জিত সামগ্রী দেখতে। এমনকি তাদের জন্মদাতা বাবা-মায়ের মুখ পর্যন্ত দেখতে পারে না। এ কারনেই দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীসহ শ্রবণ প্রতিবন্ধী, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য সহায়ক সামগ্রী প্রদান করা হলো।

নকশীকাঁথা-সিদোল-জ্যাম-জেলীঃ প্রায় বিলুপ্তির পথে যাওয়া শিল্পকে নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে উপার্জনের পথ করতে গ্রহণ করা হয় হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ। এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ঐতিহ্যবাহী ‘নকশী কাঁথা’ সেলাই প্রশিক্ষণ দেয়া হয় হতদরিদ্র ১০০ জন মহিলাকে। জ্যাম-জেলী-সিদোল তৈরির প্রশিক্ষণ কাজও এরই মধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলাদের প্রয়োজনে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান উপজেলা চেয়ারম্যান বকুল সরকার। তিনি জানান, প্রশিক্ষিত মহিলাদের তৈরি ম্যানিব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ, ওয়ালমেটসহ অন্যান্য সামগ্রী রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অভিজাত শপিংমলে সরবরাহ করার জন্যও সহায়তা দেয়া হবে। মহিলারা দামও ভাল পাবে।

ঠোঙ্গা-ব্যাগ তৈরিঃ মহিলাদের জন্য ঘরে বসে আয়ের পথ তৈরি করতে গ্রহণ করা হয় ঠোঙ্গা তৈরির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। ইতোমধ্যে কয়েক ব্যাচে শতাধিক অস্বচ্ছল মহিলাকে এই প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষিত মহিলারা বিভিন্ন দলের মাধ্যমে একযোগে তৈরি করছে ঠোঙ্গা। কাজীপুরের নানা হাট-বাজার দোকানের সীমা ছাড়িয়ে পাশের উপজেলা সিরাজগঞ্জ সদর, ধুনট-শেরপুরের মার্কেটগুলোতে সরবরাহ শুরু হয়েছে। অনেকেই স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছেন। এমন একজন সফল নারী খুদবান্দী মহিলা উন্নয়ন সমিতির প্রকল্প পরিচালক জরিনা খাতুন। তিনি জানান, অনেক আগেই স্বামীকে হারিয়ে বেঁচে থাকার জন্য নানা চেষ্টা শেষে ঠোঙ্গা তৈরি করে সরবরাহ করে এখন অনেক ভালো আছি। তিনি বলেন, আমাদের প্যাকেট-ঠোঙ্গা তৈরির কাজ দেখতে দেশের অনেক নামকরা প্রতিষ্ঠানের মানুষ এসেছেন। এসেছেন বিদেশী অনেকেও। তিনি জানান, এখন অনেক বেকার মহিলাকে আমি নিজে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগিয়েছি। তারা সংসারের কাজের ফাঁকে ঠোঙ্গা-প্যাকেট তৈরি করে বাড়তি পয়সা উপার্জন করছে। তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দেবার পরে শিক্ষার্থীরা রেজাল্ট হবার আগ পর্যন্ত এই কাজ করে টাকা উপার্জন করছে।

এছাড়া উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে গৃহিত প্রকল্প গ্রহণেও বকুল সরকারের সৎ বিবেচনারই প্রমাণ মেলে। তিনি উপজেলার সাড়ে চার হাজার প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য হুইল চেয়ার বিতরণ প্রকল্প চালু রেখেছেন। সেলাই প্রশিক্ষণ ও মেশিন বিতরণ, স্যানিটারী সামগ্রি বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

নানামুখী প্রকল্পের মাধ্যমে সৃজিত এসব কর্মকান্ড কাজীপুরবাসির জীবন-মান বদলে দিতে শুরু করেছে। এক সময়ের ভাঙন তান্ডবে, বন্যা-বর্ষায় বিপর্যস্ত কাজীপুরের মানুষ এখন অনেক বেশি আত্মনির্ভরশীল। প্রশিক্ষণ নিয়ে, উপযুক্ত কাজ পেয়ে ও শ্রমের মর্যাদা দিয়ে তারা নিজেদের ভাগ্যের চাকা নিজেদের মতো করে ঘুরিয়ে চলেছেন। আর সামনে থেকে দক্ষ কাপ্তানের দায়িত্ব পালন করছেন বকুল সরকার।

বকুল সরকার জানান, নেতা মোহাম্মদ নাসিম কাজীপুরের উন্নয়নে সব সময়ই কাজ করে যাচ্ছেন। নাসিম তনয় প্রিয় তানভীর শাকিল জয় এসব উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নে কাজীপুরের প্রতিটি স্থানে ছুটে চলেছেন। সময়োপযোগী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কাজীপুর উপজেলা দেশের অন্যান্য উপজেলার জন্য মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে। সেদিনের জন্যই কাজ করে যাচ্ছি।
⇘সংবাদদাতা: আবদুল জলিল
ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top