সেবা ডেস্ক: মিয়ানমারের সশস্ত্র বৌদ্ধ বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মি এবং সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত মুসলিম রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরসা’র পাঁচটি ঘাঁটি বাংলাদেশে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মিয়ানমার।
থাইল্যান্ড ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ইরাওয়ার্দি জানায়, সোমবার মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে আরাকান আর্মির সঙ্গে আরসার সম্পর্ক রয়েছে।
আরাকান আর্মি গত কয়েক বছর ধরে রাখাইন ফেডারেল রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। গত মাস থেকে তারা তাদের সামরিক কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে।
অন্যদিকে, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের অধিকার রক্ষা করছে বলে দাবী করে।
২০১৭ সালে উত্তর রাখাইনের কয়েকটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালানোর পর মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন অভিযান শুরু করে। এরপর সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম প্রান বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমারের সরকার আরসাকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
ইরাওয়ার্দি জানায়, মিয়ানমার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইউ জ হতেই সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, আরাকান আর্মি এবং আরসার কর্মকর্তারা গত বছরে জুলাইতে বাংলাদেশের রামুতে বৈঠক করেছেন। তিনি আরো দাবি করেন, মিয়ানমার সরকার বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছে, কোন দল মিয়ানমারের ভিতরে কোন কোন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করবে সেটা নিয়ে আলোচনার জন্য তারা বৈঠকে বসেছিলেন।
‘আমরা জানতে পেরেছি (বংলাদেশের কাছে) মায়ু পাহাড়ের পশ্চিমের এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ আরসা আর এর পশ্চিমের এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ আরাকান আর্মি নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে,’ বলেন তিনি।
প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র আরও দাবি করেন, বর্তমানে সীমান্তের এপারে বাংলাদেশে আরকান আর্মির দুটি ঘাঁটি রয়েছে এবং আরসার রয়েছে তিনটি ঘাঁটি।
মিয়ানমারের সরকার বাংলাদেশের সরকারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে বলে জানান তিনি।
‘আমার মনে হয় আরাকান আর্মির সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে গত জুলাইয়ের বৈঠকের সম্পর্ক রয়েছে,’ উ জ হতেই।
তিনি আরও দাবি করেন, আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে কার্যকর সামরিক পদক্ষেপ নিতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরাকান আর্মি র মুখপাত্র উ খাইং থাকুনা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার সংগঠনের সঙ্গে আরসার কোনও সম্পর্ক নেই।
‘আমাদের নিজস্ব মিশন। মিয়ানমার সরকার আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য আরসার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক থাকার কথা বলছে। আমাদেরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিত্রিত করার জন্য এটা তাদের নোংরা রাজনীতি,’ বলেন তিনি।
মিয়ানমারের জাতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উ মং সো ইরাওয়ার্দিকে বলেন, তিনি আরসার সঙ্গে আরাকান আর্মির বা আরাকান আর্মির সম্পর্ক থাকার বিষয়ে তিনি সন্দিহান। কারন আরাকান আর্মি আগে থেকে বলে আসছে, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে রাখাইন গোষ্ঠী ও তাদের রাজ্যকে সুরক্ষিত করা।
‘অতএব, আরসার সঙ্গে তাদের যোগাযোগের অভিযোগ করাটাই তাদেরকে রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণের সবচেয়ে ভাল উপায়। তবে এতে সমস্যার সমাধান হবে না,’ বলেন তিনি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র আরসার সঙ্গে এই কথিত সম্পর্ক ত্যাগ করার জন্য আরাকান আর্মির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তাদের কে শান্তি আলোচনায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।