আব্দুল জলিল, কাজিপুর প্রতিনিধি: পুরাকালের মৎস্যভান্ডারখ্যাত সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত যমুনা-ইছামতি নদী এখন শুষ্কপ্রায়। নদী দুটির বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর-ডুবোচর। নৌ পারাপারে দেখা দিয়েছে চরম অসুবিধা। অনেক স্থানে জেলে নৌকাই চলেনা। দেখা দিয়েছে মাছের আকাল। জেলেদের অনেকেই ঘাটে নৌকা বেধে অলস সময় পার করছে। অনেকে জীবন-জীবিকার তাগিদে এই পেশা বদলে দিনমজুরিসহ নানা কাজ করছে।
আগে যমুনা ইছামতিতে সারা বছরই থৈ থৈ পানি থাকতো। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অবাধ বিচরণক্ষেত্র ছিল এ নদী দু’টি। মাছ ধরেই স্বচ্ছল জীবিকা নির্বাহ করতো শতশত জেলে পরিরার। কিন্তু বর্তমানে নদীতে শুধু বর্ষাকালে পানি থাকলেও সেখানে আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। আর শুষ্ক মৌসুমে এই অবস্থা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ কারণে উপজেলার জেলে পরিবারগুলোর চরম দুর্দিন চলছে। তাদের সংসার চলছে খেয়ে না খেয়ে। ইছামতি নদীতে বেশির ভাগ সময় পানি থাকে না। শুস্ক মৌসুমে মরা খালে পরিণত হয়। আর যমুনায় সামান্য পানি থাকলেও মাছ পাওয়া যায় না। ফলে অনেক জেলে তাদের পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে।
কাজিপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক রতন হালদার জানান, ‘আগের দিনগুলোতে এসময়ে নদীতে পানি কমে গেলেও কোলা পড়তো। সে কোলায় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু এখন কোলাও পড়ে না। আর যাওবা পড়ে তাতে নামীদামী মানুষেরা নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। ফলে পুরো কাজিপুরের জেলে পরিবারগুলোর অবস্থা দিন দিন খারপের দিকে যাচ্ছে। বর্তমানে অবস্থা এমন যে নদী আছে মাছ নেই।’
মৎস্যজীবি শ্যামল জানান, ‘নদীতে প্রতিবছর পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় যমুনা-ইছামতির গভীরতা অনেক কমে গিয়ে গতিপথও পরিবর্তিত হয়েছে। তাই মাছ মিলছেনা। বাজারে এখন শুধু পুকুরে চাষ করা মাছ পাওয়া যায়। বর্তমানে মাছের যে রকম আকাল চলছে তাতে মাছে ভাতে বাঙালি এ প্রবাদ মুছে যাবে।’
কাজিপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, ‘দুটো নদীরই নাব্যতা কমে গেছে, মাছের তেমন কোন অভয়াশ্রম নেই। এতে করে জেলেদের বছরের এসময় তাদের সমস্যা হয়। সরকারিভাবে কাডধারী জেলেদের সহায়তা করা হয়।’
⇘সংবাদদাতা: আব্দুল জলিল
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।