ছবি: আব্দুল জলিল |
আবদুল জলিল, কাজিপুর: সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সর্বত্রই সরিষা ফুলের হলুদে সেজেছে ফসলের মাঠ। দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের যত দূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ রঙের মাখামাখি। শীতের চাঁদরে প্রকৃতি সেজেছে হলুদ সাজে আর সেই হরুদের বুক থেকে মধু সংগহে ব্যস্ত মৌচাষিরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরিষা আবাদ বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়েছে মওসুমি মৌচাষিদের তৎপরতা। বর্তমানে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ আমাদের দেশের একটি সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে।
চাষিরাও বুঝে গেছেন, মৌমাছি মধু সংগ্রহ করলে পরাগায়ণের মাধ্যমে উৎপাদন ভালো হয়। তাই মওসুমি মৌচাষিরা আসায় জেলায় সরিষার ফলন বৃদ্ধি পাবে ।
জীবন ও জীবিকার তাগিদে মৌচাষকে পেশা হিসেবে নিয়ে অনেক পরিবার স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে এবং উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে জাতীয় উন্নয়নে রাখছে বিশেষ ভূমিকা। দেশের নানাস্থান থেকেকাজিপুরে এসে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে মধু সংগ্রহের কাজ করছেন।
ইশ্বরদির মৌচাষি রহিম মিয়া বলেন, ‘প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকে আমাদের মধু সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। এটি চলবে মার্চ পর্যন্ত। এ বছর মধু সংগ্রহের কাজে আমরা ১২০টি বাক্স ব্যবহার করছি।’
কাজিপুরের মৌচাষি আবদুল হক মিয়া জানান, ‘১৫ বছর ধরে সরিষা থেকে মধু সংগ্রহের কাজ করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘মধু সংগ্রহে যে মৌমাছি ব্যবহার করা হয়, এরা আমাদের দেশী মৌমাছি নয়। এফিসমেলিফ্রা জাতের অস্ট্রেলিয়ান মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করা হয়। মৌমাছিগুলো পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আনা হয়।’
চাষিরা প্রতি মণ মধু ৮-১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন ঢাকার যাত্রাবাড়ি ও আশুলিয়ার এক পাইকারের কাছে। মৌচাষি দলের প্রধান আসাফুদ্দিন জানান, উন্নত প্রশিক্ষণ আর সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মধু সংগ্রহের কাজে ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব।
মৌ-শ্রমিক বাদল হোসেন জানান, মধু সংগ্রহে সুপার চেম্বার, বুরট, নিউক্লিয়াস নামের বাক্স ব্যবহার করা হয়। বাক্সগুলো সরিষা খেতের কাছে রাখলে মৌমাছিরা মধু এনে বাক্সে জমা করে। প্রতিটি বাক্স থেকে তিন-চার কেজি মধু পাওয়া যায়। সপ্তাহে একদিন মধু সংগ্রহ করা হয়। প্রতি কেজি মধু পাইকারি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। প্রতিটি খামারে তিন থেকে পাঁচজন শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমিকেরা মাসিক পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা করে বেতন পান।
⇘সংবাদদাতা: আবদুল জলিল
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।