রফিকুল আলম, ধুনট প্রতিনিধি: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় শেষ হলো হাজারো মানুষের প্রাণের মেলবন্ধন হিসেবে পরিচিত ‘মাছ ও বউ’র মেলা। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শত বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে উপজেলার হেউটনগর-কোদলাপাড়ায় বকচর নামে স্থানে এই মেলা হয়ে আসছে। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
তিথি অনুযায়ী, প্রতি বছর মাঘের শেষ বুধবার এ মেলা বসে। প্রথমদিন চলে মাছের মেলা। আর দ্বিতীয় দিন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বউদের দখলে থাকে মেলা। এরপর যথারীতি ঐতিহ্যবাহী এ মেলাকে বিদায় জানাতে হয়। বৃহস্পতিবার দূর-দূরান্ত থেকে মেলায় আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মুখে বিষাদের সুর শোনা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঈদ-পূজার পর উপজেলা ও আশপাশের মানুষের সবচেয়ে বড় উৎসব বকচর মেলা। মেলাটি সাঙ্গ হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রতীক্ষা আর ক্ষণ গণনার পালা। বাঙালির প্রাণের এই মেলা আবারও উৎসবের আমেজ নিয়ে ফিরবে। কিন্তু এর জন্য একটি বছর অপেক্ষা করতে হবে।
মেলায় আগতদের কেউই যেন তাদের প্রাণের মেলাকে খালি হাতে বিদায় জানাননি। বড় ও মাঝারি আকারের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনতে দেখা গেছে গৃহকর্তাদের। আর বউদের দেখা গেছে বাহারি সব প্রসাধনী সামগ্রী কিনতে। ছোটদের রকমারি খেলনা কিনতে দেখা গেছে।
মেলায় আসা উর্মি, উম্মে কুলসুম, পারভীন আক্তারসহ একাধিক নারী জানান, বুধবার এখানে মাছের মেলা হয়। মাছ কিনতে ও দেখতে মেলায় হাজারো পুরুষ মানুষের ঢল নামে। এ কারণে সেদিন তাদের মেলায় আসা সম্ভব হয় না। ফলে পরদিন বৃহস্পতিবার তারা মেলায় আসেন। এই মেলার প্রধান আকর্ষণ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বড় বড় আকৃতির বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এ কারণে বুধবার মেলাটি মাছের মেলা হিসেবে পরিচিত। পরদিন বৃহস্পতিবার এ মেলা রূপ নেয় বৌ মেলায়।
মাছ ব্যবসায়ী মোন্তেজার আলী, মিষ্টি ব্যবসায়ী শাহজাহান আলী, কসমেটিকস ব্যবসায়ী লাইলী খাতুন, আলম হোসেন, মাসুদ রানাসহ মেলায় অংশ নেওয়া একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ব্যবসায়ীরা এক বছর ধরে এই মেলার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকেন। সেই মেলার বিদায় ঘণ্টা বাজায় সবার মতো আমারও ভীষণ খারাপ লাগছে।
⇘সংবাদদাতা: রফিকুল আলম
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।