
হাসান বাপ্পি, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের ৫ জন নিহতের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারো একই রোগে অন্য একটি পরিবারের ৩জন আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে এটি “এনকে ফ্লাইটিস” রোগও হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছেন স্থানীয় চিকিৎসকরা।
আক্রান্তরা হলেন উজরমনি গ্রামের নাসিরুল ইসলামের স্ত্রী দুলালী বেগম (২৮), তার ছেলে সিয়াম (৮) ও মেয়ে নিতু (৪)।
আক্রান্ত দুলালি বেগম তার দুই সন্তানকে নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। এসময় আক্রান্তদের সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
আক্রান্ত দুলালি জানান, বুধবার রাতে তার শরীর দূর্বল হয়ে পড়লে বাড়িতে হাটা চলা করতে পারছিলেন না তিনি। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে ছোট মেয়ে মিতু বেশ কয়েক বার বমি কওে ও তার শরীরে জ্বর আসে। এছাড়াও বড় ছেলে সিয়ামের শরীরে জ্বর আসে এবং তার শরীরে ব্যাথা অনুভব হলে সেও অনেক দূর্বল হয়ে পড়ে। এসময় উপায়ন্তর না পেয়ে তারা তিনজনই স্থানীয় বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঠাকুরগাঁওয়ে যাবার পর তাদের সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা।
ঠাকুরগাঁওয়ের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুব্রত কুমার সেন বলেন, যেহেতু কিছুদিন পূর্বে বালিয়াডাঙ্গী এলাকায় নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমনের ঘটনা ঘটেছিলো। তাই ঝুকি ও উন্নত চিকিৎসার কথা বিবেচনা করে তাদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা: আবু মো: খায়রুল কবির জানান, আক্রান্ত রোগীরা নিপাহ ভাইরাসের আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে তেমন অত্যাধুনিক মেশিন ও যন্ত্রপাতি নেই। তাই এ বিষয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথে পরামর্শ করে আক্রান্তদের রংপুরে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রক ও গবেষনণা ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের সাথেও কথা বলা হয়েছে। তারা রোগটি সনাক্ত করার জন্য শুক্রবার রংপুরে আসবেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁওয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১৫ দিনের ব্যাবধানে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যুর পর কারণ অনুসন্ধানে ঢাকা ও রাজশাহীর থেকে রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রক ও গবেষনণা ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের তদন্ত টিম আক্রান্ত এলাকায় তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে তারা ঢাকায় ফিরে গিয়ে ৩মার্চ সংশ্লিষ্ট বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে সর্বশেষ মৃত ব্যক্তির শরিরে নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতি ও উপসর্গ পাওয়া যায় বলে নিশ্চিত করেন।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।