রৌমারীতে বড়াইবাড়ী দিবস পালিত

S M Ashraful Azom
0

  • দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে এখনও আতংকে দিন কাটে সীমান্তবাসী  

  • এলাকাবাসী বড়াইবাড়ী দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চায়

রৌমারীতে বড়াইবাড়ী দিবস পালিত
শফিকুল ইসলাম,রৌমারী প্রতিনিধি :‘ওয়াহিদ, কাদের, মাহফুজ শহীদদের-আমরা তোমায় ভুলি নাই’ এই শ্লোগানের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ ১৮ এপ্রিল বড়াইবাড়ী দিবস পালিত হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্তে সংঘর্ষের বর্ষপূর্তি ১৮ বছর।

২০০১ সালের এই দিনে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ বড়াইবাড়ী গ্রামে ঢুকে নারকীয় তান্ডব চালায়। অকুতোভয় বিডিআর ও গ্রামবাসীদের মিলিত প্রতিরোধে পর্যদস্তু হয় আগ্রাসণকারী বিএসএফ। নিহত হয় বাংলাদেশের তিন বীর বিডিআর জোয়ান। ভারতীয় পক্ষে নিহত হয় ১৬ বিএসএফ সদস্য। সেই থেকে ঐতিহাসিক এই দিনটি পালিত হয় ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে।

দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে রৌমারীতে ব্যাপক কর্মসুচী হাতে নেয়া হয়েছে। আয়োজন করা হয়েছে বর্ণাঢ্য র‌্যালী, বড়াইবাড়ী গ্রামে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল।

বড়াইবাড়ি,চুলিয়ারচর, বারবান্দা উদযাপন কমিটির আয়োজনে ও রৌমারী সদর ইউপি সদস্য আরসাদ হোসেন হেলালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য মো.রুহুল আমিন,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রৌমারী উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহমুদা আকতার স্মৃতি,রাজিবপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যক্ষ মোকলেছুর রহমান, শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল, রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু, সাংবাদিক মতিয়ার রহমান চিশতী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ হারুন, বড়াইবাড়ী ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার আমিনুল ইসলাম প্রমূখ।

সকাল ৯টায় শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সাবেক এমপি জনাব রুহুল আমিন, বড়াইবাড়ি বিজিবি ক্যাম্প, সাংবাদিকবৃন্দ, চুলিয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলাবাড়ি বিবিসি উচ্চ বিদ্যালয়, বকবান্দা উচ্চ বিদ্যালয়, বড়াইবাড়ি ও বারবান্দা গ্রামবাসির পক্ষে, বারবান্দা সুর্য্য সংগঠনসহ এলাকার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন।

বক্তারা বলেন, বিজিবি ক্যাম্পে সামনে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, চলমান নির্মাণিত ব্রীজ ও রাস্তা তিন শহীদদের নামে নাম করন করাসহ বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন।

২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভোর রাতে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশী সীমান্তে অনধিকার প্রবেশ করে বড়াইবাড়ী গ্রামের ঘুমন্ত মানুষের উপর হামলা চালায় ও বাড়ি-ঘর নির্বিচারে জ্বালিয়ে দেয়। ওই দিন হামলার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিয়েছিল বিডিআর-জনতা। আর সেই প্রতিরোধে বিএসএফ এর ১৬ জনের লাশ ফেলে পালিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীরা। শহীদ হয়েছিল ৩৩ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওয়াহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান এবং ২৬ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের সিপাহী আঃ কাদের।

এছাড়া আহত হয় বিডিআর এর হাবিলদার আব্দুল গনি, নায়েক নজরুল ইসলাম, ন্যান্স নায়েক আবু বকর সিদ্দিক, সিপাহি হাবিবুর রহমান ও সিপাহি জাহিদুর নবী । বিডিআর গ্রামবাসীর পাল্টা আক্রমনে বিএসএফ’র ১৬ জোয়ান নিহত হয়। বিএসএফ এর তান্ডবে পুড়ে ছাই হয়েছিল বড়াইবাড়ী গ্রামের ৮৯ টি বাড়ি। সরকারি হিসেবে মোট ক্ষতির পরিমান ছিল ৭২ লাখ টাকা। কাটেনি সীমান্তের আতংক।

গ্রামের মানুষ এখনও দুঃসহ স্মৃতিতে হঠাৎ রাতে আতকে উঠে। শেষ হয়নি তাদের দুঃখের দিন।


⇘সংবাদদাতা: শফিকুল ইসলাম
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top