
লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের ইসলামপুরে দিন দিন বেড়েই চলেছে ইজি বাইক। প্রতিনিয়ত যানজট বৃদ্ধির পাশাপাশি ঘটছে নানা দূর্ঘটনা। ইজি বাইকের ব্যাটারী চার্জ করার ফলে পাল্লা দিয়ে ঘটছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
উপজেলার ইসলামপুর-জামালপুর রোড সহ আনাকে কানাচে অসংখ্য ইজি বাইক চলার কারণে প্রতিনিয়তই যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি ঘটছে নানা দূর্ঘটনা। ইজি বাইকের দৌরাত্যে ও চালকদের বেপরোয়া ড্রাইভিং এর ফলে বড় গাড়ির ড্রাইভারা বিরক্ত বোধ করছে। ইজিবাইক ড্রাইভারদের বেপরোয়া চালানোর কারণে দূর্ঘটনায় দুজন পথচারীর মৃত্যুও হয়েছে।
এ উপজেলায় প্রায় ৪০টি পয়েন্টে ১৩ শতাধিক ইজি বাইক চলাচল করছে। এসব ইজি বাইকের ব্যাটারী চার্জ করতে অধিক বিদ্যুৎ খরচ হয়। ফলে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা লোডশেডিং এর কবলে পড়ছে। অধিকাংশ চোরাই লাইনের মাধ্যমে ব্যাটারী চার্জ করায় এক দিকে যেমন বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে।
অপর দিকে ঠিক তেমন রাজস্ব হারাচ্ছে সরকারের পিডিবি ও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি। সবচেয়ে বড় কথা হলো-যেখানে সরকার বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা দিতে বদ্ধ পরিকর। সেখানে দুষকৃতিকারীরা চোরাই লাইনের মাধ্যমে এসব ইজি বাইকের ব্যাটারী চার্জ করতেই ব্যস্ত। এতে করে বিদ্যুতের প্রচুর ঘাটতিসহ অসহনীয় লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এসব ইজি বাইকের ক্রয় মূল্য কম থাকায় সহজেই কেনা যায়। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলো চালাচ্ছে রিক্সা-ভ্যান চালকেরা। ইজি বাইকের দ্বারা সৃষ্ট যানজটের কারনে ১০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় ৩০ মিনিট লাগছে ।
ট্রাক চালক সিদ্দিক জানান, ইজি বাইকের কারনে বড় বাজার পার হতে অনেক সময় লেগে যায়। শুধু মাত্র ইজি বাইকের কারনে রিক্সা-ভ্যান চালকরা যেখানে আগে ৪০০/৪৫০টাকা প্রতিদিন আয় করতো সেখানে তারা এখন ২০০/২৫০ টাকা আয় করতে অনেক হিমশিম খেতে হয়। সরকারের কোন প্রকার অনুমোদন/বাধ্যবাধকতা না থাকায় এখন যে কেউ ইজি বাইক চালাতে পারছে। ফলে বালক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত এখন ঝুঁকে পড়েছে ইজি বাইকের দিকে।
ইজিবাইক চালক দুলাল মিয়া জানান,আগে এই এলাকায় ইজিবাইক কম ছিল। রাস্তায় তেমন যানজট ছিলনা। প্রতিদিন অনেক টাকা রোজগার হতো। এখন প্রতিটি মোড়ে মোড়ে যানজটে আমাদের রোজগার কমে গেছে। সচেতন মহল ইজি বাইক নিয়ন্ত্রন করে যানজট নিরসন ও বিদ্যুৎ অপচয় রোধে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
পথচারী কলেজ পড়–য়া মাসুমা জাহান মিলি জানান, ইজিবাইকের কারনে কলেজে যেতেও অনেক বিলম্ব হয়। আমাদের ছোট্ট্র এ শহরে আয়তনের তুলনায় অধিক ইজিবাইক হওয়ায় প্রতিনিয়ত পথচলতেও সমস্যা হয়।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র আঃ কাদের শেক জানান, দিন দিন বেড়েই চলেছে ইজিবাইক। কিন্তু আমাদের শহরের আয়তন তো দিন দিন বাড়ছে না। ইতিমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহন করেছি শহরের রাস্তার দুই ধারে দোকানগুলো তুলে দিলে হয়ত কিছুটা যানজট লাঘব হবে। আর শহরের বাইরে কয়েকটি পয়েন্টে ষ্ট্যান্ড করার পরিকল্পনা রয়েছে এতে করে কিছুটা হলেও যানজট মুক্ত হওয়া সহ পথচারীদের চলাচলে সুবিধা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান,ইজিবাইক ব্যপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিটি ক্ষেতে যানজট,বিদ্যুৎ অপচয়,দূর্ঘটনা সহ নানা সমস্যার সুমক্ষিন হতে হচ্ছে। পাশাপাশি রাতের বেলায় অটো,সিএজি গুলোতে অতিরিক্ত চার্জার লাইট লাগানোর ফলে দৃষ্টি দিতে হিমশিম শিক্রা হওয়ায়, হ্যালোজেন লাইট নিস্ক্রিয় করতে একাধিক বার অভিযান দিয়েছি। চলমান অভিযানে সকলের সহযোগীতা কামনা করছি।
⇘সংবাদদাতা: লিয়াকত হোসাইন লায়ন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।