
রকি চন্দ্র সাহা,চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি: চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে। ওই ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনাটি ২৮ এপ্রিল রোববার বেলা সাড়ে ১১ টায় উপজেলার মেহের দক্ষিণ ইউনিয়নের মালোরা গ্রামে ঘটে। জানা যায় ঐ গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মৃত নূর মোহাম্মদ ভূঁইয়ার পুত্র মোঃ মোস্তফা ভূঁইয়ার সাথে একই বাড়ির মৃত নজির আহম্মদ ভূঁইয়ার পুত্র মিজানুর রহমানের কথা কাটাকাটি হয়।
ঐ সময় উভয়ে মালোরা ঈদগাহ বাড়ি সংলগ্ন দ্বীন মোহাম্মদের চায়ের দোকানে অবস্থান করছিল। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মোস্তফা ভূঁইয়া রক্তাক্ত জখম হয়। এ ঘটনায় মোস্তফা ভূঁইয়া বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের আলোকে থানা পুলিশ ঘটনাকারী মিজানকে আটক করে। আহত মোস্তফা বলেন, স্থানীয় ভোলদিঘি বাজারে আমার একটি দোকান রয়েছে। দোকানটি জনৈক আনোয়ার হোসেনের কাছে ভাড়া দেই।
ঘটনার কিছুদিন পূর্বে আঘাতকারী মিজান ঐ দোকানে যায় এবং দোকানীকে বলে, "এই দোকান ঘরের মালিক মোতালেব। সে দোকানে তালা লাগিয়ে দিবে। মোস্তফাকে আর ভাড়ার টাকা দিও নাহ। ওই টাকা মোতালেবকে দিও।" মিজানের এই বক্তব্য ভাড়াটিয়া আনোয়ার আমাকে অবহিত করলে আমি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদ কালে মিজান ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে আক্রমণ করে এবং ঐ দোকানে থাকা সেভেন আপের কাচের বোতল দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে আমি গুরুতর রক্তাক্ত জখম হই। তিনি আরও বলেন, মিজানের সাথে আমার সম্পত্তিগত বিরোধ রয়েছে। এই ব্যাপারে আদালতে মামলা চলমান। মিজান আমাকে প্রায়ই প্রাণনাশের হুমকি দিত।
আজ সে সুযোগ পেয়ে আমাকে বর্বরোচিত হামলা করে। এই ঘটনায় তিনি আইনের সহযোগিতা কামনা করেন। ঘটনাকারী মিজান বলেন, আমি এই ধরনের কথা বলি নি। এটি মিথ্যা বলে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা মাত্র। আমার সাথে মোস্তফার জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি নিরুপায় হয়ে মোস্তফাকে সেভেন আপের কাচের বোতল দিয়ে আঘাত করেছি। পরে কি হয়েছে আমি তা জানি নাহ। দোকান ভাড়াটিয়া আনোয়ার বলেন, একদিন মিজান দোকানে এসে আমাকে বলে, এই দোকানের মালিক মোতালেব। তিনি তালা মেরে দিবেন। তখন তুমি বিপদে পড়ে যাবে। মোস্তাফাকে আর ভাড়া দিও নাহ।
ঐ সময় আশপাশের কয়েকজন দোকানদার উপস্থিত ছিল। মিজানের এই কথাটি দোকানের মালিক মোস্তফাকে জানাই। ঘটনাস্থলের দোকানদার দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, ঘটনার পূর্ব মুহূর্তে মিজান আমার দোকানে বসা ছিল। কিছুক্ষণ পর মোস্তফা আমার দোকানের সামনে আসে এবং মিজানকে কিছু জিজ্ঞেস করে। জিজ্ঞাসার আলোকে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে মোস্তফা মিজানকে একটি থাপ্পড় মারে।
এ সময় আমার দোকানের ভিতরে উভয়ের মাঝে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে মিজান দোকানে রাখা সেভেন আপের কাচের বোতল দিয়ে মোস্তফার মাথায় অাঘাত করে। ওই অাঘাতে মোস্তফার মাথা ফেটে গেলে সে রক্তাক্ত হয় এবং দোকানে থাকা টুল-টেবিল সহ বিভিন্ন জিনিসপত্রে ওই রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। মিজান ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর স্থানীয় লোকজন মোস্তফাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এলাকাবাসী ও বাজার ব্যবসায়ীরা বলেন, এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। মিজান একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে এবং আইনের ফাঁক ফোকড়ে বারবার পার পেয়ে যায়। দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকার বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা করে হয়রানি করছে। তারা আরও জানান, বাজারে মোতালেবের ছয়টি দোকান ছিল।
ওই দোকানগুলো মোতালেব বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করেছেন। ওইসূত্রে মোস্তফা ভূঁইয়া একটি দোকান ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে ভাড়া দিয়েছেন। মিজানের এহেন ঘটনাগুলো তদন্ত পূর্বক কঠোর বিচারের দাবি জানান তারা।
⇘সংবাদদাতা: রকি চন্দ্র সাহা

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।