সেবা ডেস্ক: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে নারী প্রার্থীদেরও শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক হতে হবে। এমন বিধান রেখে আগের বিধিমালা সংশোধন করে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯’ জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতদিন এইচএসসি পাসের সনদ থাকা নারীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারতেন। আর পুরুষদের আবেদনের শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল স্নাতক।
বাংলাদেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৯৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে আগের মতোই সরাসরি এবং পদোন্নতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। নতুন বিধিমালায় সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের নিয়োগ যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি। এতদিন সব প্রধান শিক্ষক ও পুরুষ সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে এই শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল।
আগে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য ২৫ থেকে ৩৫ বছর এবং সহকারী শিক্ষক পদের জন্য ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করা যেত। এখন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক পদে আবেদনের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ থেকে ৩০ বছর।
বিধিামালায় বলা হয়েছে, সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদের ৬০ শতাংশ মহিলা প্রার্থী, ২০ শতাংশ পোষ্য প্রার্থী এবং অবশিষ্ট ২০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ করা হবে। নির্ধারিত কোটার শিক্ষকদের মধ্যে প্রত্যেক ক্যাটাগরিতে (মহিলা ৬০%, পোষ্য ২০% ও অবশিষ্ট পুরুষ ২০%) অবশ্যই ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।”
তবে বিজ্ঞান ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের দিয়ে ওই ২০ শতাংশ কোটা পূরণ না হলে মেধার ভিত্তিতে তা পূরণ করা যাবে বলেও বিধিমালায় বলা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষকের ৬৫ শতাংশ পদ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ৩৫ শতাংশ পদ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। তবে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতিযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে তা পূরণ করা যাবে। সহকারী শিক্ষক হিসেবে কমপক্ষে সাত বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতির বিবেচনায় আসবেন। আর সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ পদ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে বেতন পান।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকের পদ তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করে সরকার। তখন থেকে প্রধান শিক্ষকের ৩৫ শতাংশ পদে সরাসরি নিয়োগ দেয়া হয় সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে।
২০১৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সবশেষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা করেছিল সরকার। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, কেউকে কোনো পদে এডহক ভিত্তিতে আগেই নিয়োগ দেয়া হলে এবং ওই পদে তিনি অব্যাহতভাবে নিযুক্ত থাকলে তার জন্য প্রযোজ্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা শিথিল করা যাবে।
এছাড়া শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও চূড়ান্ত নিয়োগের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং যথাযথ এজেন্সির তদন্তে চাকুরিতে নিযুক্তির অনুপযুক্ত নন এমন প্রত্যয়ন পেতে হবে। বাংলাদেশের নাগরিক না হলে এবং বাংলাদেশের নাগরিক নয় এমন ব্যক্তিকে বিয়ে করলে বা বিয়ে করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলে তিনি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের যোগ্য হবেন না।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।