সঠিক নিয়মে পেঁপে চাষ পদ্ধতি

S M Ashraful Azom
0
সঠিক নিয়মে পেঁপে চাষ পদ্ধতি
সেবা ডেস্ক: পেঁপে একটি অতিপরিচিত সুস্বাদু ফল। পেঁপে গাছ লম্বা বো‍টাঁযুক্ত ছত্রাকার পাতা বেশ বড় হয় এবং সর্পিল আকারে কান্ডের উপরি অংশে সজ্জিত থাকে। পেঁপে গাছ লম্বায় প্রায় তিন থেকে সাত ফুট হয়। প্রায় কমবেশি সারা বছরেই ফুল ও ফল হয়। পেঁপের কাচাঁ ফল দেখতে সবুজ, পাকা ফল হলুদ বা পীত বর্ণের। পেঁপে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ফল । কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য থাকে। যা অজীর্ণ, কৃমি সংক্রমণ, আলসার, ত্বকে ঘা, কিডনি ও ক্যান্সার নিরাময়ে কাজ করে। এটি পথ্য হিসেবে ও ব্যবহার হয়। কাঁচা পাকা দু ভাবেই পেঁপে খাওয়া যায়, তরে কাঁচা অবস্থায় সব্জি এবং পাকলে ফল।

পেঁপে চাষে করনীয়:

জলবায়ু অনুসারে আমাদের গ্রীষ্মকালের ফসলগুলোর মধ্যে পেঁপে অন্যতম এবং চাষাবাদের জন্য এ সময়টাই হচ্ছে ভালো সময়। এ ছাড়া সারা বছরই পেঁপে চাষ করা যায়। জমিতে এবং বাড়ির সামান্য পরিসরে লাগাতে পারেন এ সবজি বা ফলটি। আমাদের দেশে অনেক জাত রয়েছে, তা থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার প্রিয় জাতটি। তবে পেঁপে চাষের জন্য দোঁআশ ও বেলে দোঁআশ মাটি বেশি উপযোগী।

পেঁপের জাত প্রকরণ:

পেঁপে বিভিন্ন জাতের হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে পরিচিতি পেঁপে জাতগুলি হলো -১.ব্লুস্টেম, ২.কাশিমপুরী, ৩. যশোরি,৪.রাচি,৫.নউন ইউ, ৬.হানি ডিউ, ৭. ছোট পেঁপে, ৮. শাহী পেঁপে, ৯. শঙ্কর জাত।

মাটি নির্বাচন:

বিভিন্ন অঞ্চলের মাটি বিভিন্ন রকম আর মাটির গুনাগুণও আলেদা। তবে ভালো পেঁপে চাষের জন্য দোঁআশ ও বেলে দোঁআশ মাটি বেশি উপযোগী।

আইল নির্বাচন:
দৈঘ্য ২২ মিটার, প্রস্থ ৪৫ সেন্টিমিটার হওয়া দরকার। উঁচু, চওড়া আইল পেঁপে চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে। মাদা থেকে মাদার দূরত্ব ২ মিটার রাখতে হবে এবং মাদার আয়তন ৩০×৩০×৩০ সেন্টিমিটার। উঁচু জায়গার আকার ৪৫×৪৫×৪৫ সেন্টিমিটার ।

চারার পরিমাণ ও চারা রোপণের সময়:

প্রতি মাদায় ৩টি চারা ৩ কোণ আকারে রোপণ করতে হবে। এপ্রিল মাস পেঁপের চারা রোপণে উপযুক্ত সময়। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসেও পেঁপের চারা রোপণ করা যায়।

আগাছা পরিষ্কার ও সেচ প্রদান:

পেঁপে জমির আইলে আগাছা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে দিতে হবে। শীতকালে প্রতি ১০-১২ দিন এবং গ্রীষ্মকালে ৬-৭ দিন পর পর সেচ দেয়া প্রয়োজন।

পুরুষ গাছ এবং গাছ পাতলা করা:

চারা রোপণের ২ মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। গাছে ফুল আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রতি ১০-১৫টি স্ত্রী গাছের জন্য একটি মাত্র পুরুষ গাছ রেখে দিয়ে, বাকি পুরুষ গাছগুলো তুলে ফেলতে হবে। প্রতি মাদায় উঁচু জায়গায় একটি করে স্ত্রী পেঁপে গাছ রাখতে হবে।

খুঁটি দেয়া:


বেশি ফল ধরলে বা ঝড়ের হাত থেকে গাছ রক্ষা করতে হলে শক্ত খুঁটি মাটিতে পুঁতে দিয়ে গাছের কান্ডের সঙ্গে বেঁধে দিতে হবে।

পেঁপের রোগ বালাই:

বীজে রোগ আক্রমণ করলে চারা গজানোর আগেই পচে যায়। চারা আক্রান্ত হলে গাছের গোড়ায় বাদামি বর্ণের জল ভেজা দাগের সৃষ্টি হয়। তখন গাছ ঢলে পড়ে মরে যায় এবং সহজেই বাতাসে ভেঙে পড়ে। মোজাইক রোগে গাছ আক্রান্ত হলে পাতা সবুজ ও হলুদ রঙের দাগ দেখা যায়। পাতা খর্বাকৃতির হয়। অনেক সময় পাতা সম্পূর্ণ কুঁকড়ে যায়। এছাড়াও পাতা কুঁকড়ে যায়। পাতার শিরাগুলো অপেক্ষাকৃত মোটা হয়। গাছ আকারে ছোট এবং ফলন কম হয়। এ রোগের ভাইরাস সাদা মাছি দ্বারা গাছ থেকে গাছে ছড়ায়।

ফল সংগ্রহ :

চারা রোপণের ৩ মাসের মধ্যেই ফুল আসে এবং ফল ধরার ২-৩ মাসের মধ্যেই সবজি হিসেবে পেঁপে সংগ্রহ করা যায়। পেঁপে অল্প সময়ে ফল দেয় এবং প্রায় সারা বছরে পেঁপে গাছে ফল ধরে, এজন্য অনেক দিন ধরে সময় অপেক্ষা করে বসে থাকতে হয় না। পেঁপে কাঁচা ও পাকাতেই দুই খাওয়া যায় বলে বাজারে পেঁপে অনেক চাহিদা। এজন্য পেঁপে চাষ করে অনেক লাভবান হয়া যায়।

⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top