ইসলামিক ফাউন্ডেশনে নিয়োগের অনিয়ম তদন্ত করবে দুদক

S M Ashraful Azom
0
 ইসলামিক ফাউন্ডেশনে নিয়োগের অনিয়ম তদন্ত করবে দুদক
সেবা ডেস্ক: ইসলামিক ফাউন্ডেশনে (ইফা) নিয়োগের অনিয়ম তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠানটির ৩০ সহকারী পরিচালকসহ ৪৫ জন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। এ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠে।

সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও নিয়োগ বহাল রাখেন ইফার মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মোহাম্মদ আফজাল। ৭ বছর পর ওই নিয়োগের অনিয়ম তদন্ত করে আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে দুদক। ৭ জুন ধর্ম মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে দুদক।

সূত্র জানায়, ইফার ডিজি সামীম আফজালের ঘনিষ্ঠ তিন আত্মীয়সহ অনেকে কম নম্বর পেয়ে নিয়োগ পেলেও বেশি নম্বর পেয়েও অনেকের নিয়োগ না পাওয়ার অভিযোগ উঠে। এমনকি ওই নিয়োগে ধর্ম ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ নিয়োগ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ তিন সদস্যের সম্মতি ছিল না। ইফার ডিজির বিরুদ্ধে এর আগেও সরকারি বিধান লঙ্ঘন করে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই ৩৮ জন ফিল্ড সুপারভাইজারকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠে। ওই নিয়োগের অনিয়ম নিয়েও তদন্ত করছে দুদক। সংশ্লিষ্টদের দাবি, ইফার নিয়োগ ও পদোন্নতি নিয়ে সঠিক তদন্ত হলে ফেঁসে যেতে পারেন ইফার ডিজি সামীম আফজাল।

জানা গেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) বিভিন্ন পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিবসহ তিনজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এ নিয়োগের কার্যপত্রে সই করেননি। ২০১১ সালের আগস্টে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে সহকারী পরিচালক, চিকিৎসা কর্মকর্তা, প্রোগ্রাম অফিসার, জনসংযোগ, গবেষণা, পরিকল্পনা ও উৎপাদন কর্মকর্তা পদের জন্য লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়। এরপর ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল তাদের নিয়োগ দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ইফার ডিজি সামীম আফজাল ও পরিচালক তাহের হোসেনের তিন আত্মীয় রয়েছেন। নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০ জন সহকারী পরিচালক। ইফার কর্মকর্তারা জানান, এ নিয়োগের জন্য ১৩ সদস্যের কমিটি করা হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর ২০১২ সালের ১৫ মার্চ নিয়োগ কমিটির সর্বশেষ সভা হয়। এতে ধর্ম মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব উপস্থিত ছিলেন না। তারা নিয়োগের জন্য তৈরি করা সুপারিশপত্রেও সই করেননি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি রাখা হয়। কিন্তু এ নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি চেয়ে কোনো চিঠিই দেয়া হয়নি। আর জনপ্রশাসন ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দু’জন প্রতিনিধি নিয়োগ-প্রক্রিয়ার শেষ পর্যন্ত সম্পৃক্ত থাকেননি।

ফাউন্ডেশনের একাধিক সূত্র জানায়, নিয়োগ পাওয়া অনেকের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ পাওয়া ফাহমিদা বেগম মহাপরিচালকের বোনের মেয়ে। লিখিত পরীক্ষায় তিনি ৬০-এর মধ্যে ৩০ নম্বর পান। কিন্তু ২৮ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় তিনি ২৭ নম্বর পান। আর শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে ১২-তে ১১ পান। লিখিত পরীক্ষায় আরেক সহকারী পরিচালক পান সাড়ে ৩৭ নম্বর। মৌখিক পরীক্ষায় তিনি ২৭ নম্বর পান। লিখিত পরীক্ষায় আরেক সহকারী পরিচালক ৩২ ও মৌখিক পরীক্ষায় ২৫ দশমিক ৩৩ নম্বর পান। নিয়োগ পরীক্ষার নম্বরপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের অনেকেই মৌখিক পরীক্ষায় ২৮ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৭ থেকে ২৮ পেয়েছেন। কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় তারা মাত্র ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। মোহাম্মদ রিজাউল করিম, মীর মুহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ, মো. মহিউদ্দিন, মো. হিরণ বেপারী ও আবদুর রাজ্জাক ৬০ থেকে ৬৬-এর মধ্যে নম্বর পেয়ে নিয়োগ পেয়েছেন। আবার মোহাম্মদ সামসুল আরেফীন ৮৫ দশমিক ৫, মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী ৮১, মশিউর রহমান ৮৩ দশমিক ৩৩, নূর মো. আফনান ৮২ নম্বর পেয়েও নিয়োগ পাননি। পরিচালক পদে ডিজির বোনের মেয়ে ছাড়াও ফাউন্ডেশনের উৎপাদন কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পেয়েছেন মহাপরিচালকের ভাইয়ের ছেলে মো. শাহ আলম। সূত্র জানায়, উৎপাদন কর্মকর্তার পদের জন্য বয়সসীমা চাওয়া হয় ৩০ বছর। কিন্তু এসএসসির সনদ অনুযায়ী শাহ আলমের বয়স এর চেয়ে বেশি। তার শিক্ষাসনদ ঘষামাজা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফাউন্ডেশনের পরিচালক তাহের হোসেনের স্ত্রীর বোনের মেয়ে শাহিনা আকতার নিয়োগ পান সহকারী পরিচালক পদে। তার আরেক বোন সোনিয়া আকতার ফাউন্ডেশনের হিসাবরক্ষকের পদে নিয়োগ পেয়েছেন।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top