
সেবা ডেস্ক: কারাবন্দি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জীবনে প্রথমবারের মত হাসপাতালে ঈদ উদযাপন করলেন। এর আগে চারবার কারাগারে ঈদ পালন করেছেন তিনি। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো কারা হেফাজতে ঈদ করলেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়া বর্তমানে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে অবস্থান করছেন। তাই সেখানেই কেটেছে তার ঈদের দিনটি।
জানা গেছে, হাসপাতালে খালেদার সঙ্গে আছেন গৃহকর্মী ফাতেমা। তার তৈরি খাবার ও পরিবার থেকে পাঠানো খাবার ঈদের দিন খেয়েছেন খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার (৪ জুন) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেন, একজন বন্দির মতো খালেদা জিয়া কারা জেল কোড অনুযায়ী খাবার পাবেন। ঈদের দিন অনুমতি সাপেক্ষে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। সেদিন তারা বেগম জিয়ার জন্য খাবারও নিয়ে আসতে পারবেন। কারা কর্তৃপক্ষ সেসব খাবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে খেতে দেবে।
কারাগারের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ঈদের দিন সকালে খালেদা জিয়াকে ঢাকা কেন্দ্রীয় (কেরানীগঞ্জ) কারাগারের কারারক্ষীদের তৈরি পায়েস, সেমাই ও মুড়ি দেয়া হয়। তার খাবার তৈরি হয় চিকিৎসকের পরামর্শ ও ডায়েট চার্ট অনুযায়ী।
খালেদা জিয়ার দুপুরের খাবারে ভাত অথবা পোলাও রাখা হয়েছে। ভাত অথবা পোলাও এর সঙ্গে তার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ডিম, রুই মাছ, মাংস আর আলুর দম।
খালেদা জিয়া ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর কয়েকবার গ্রেফতার হন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তিনি গ্রেফতার হন। তবে তখন তাকে বেশিদিন বন্দি থাকতে হয়নি।
ঈদ উপলক্ষে এবার বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে সাক্ষাৎ করার অনুমতি দেয়া হয় পরিবারের ৭ জনকে। খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলাম ও তার স্বামী রফিকুল ইসলাম, ভাই সাঈদ ইস্কান্দরের স্ত্রী, তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বড় বোন, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর শাশুড়ি ও ভাই শামীম ইস্কান্দরের ছেলে অভিক ইস্কান্দর ছিলেন এই দলে।
বেলা ১টার দিকে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ৬২১ নম্বর কেবিনে যান। বের হয়ে আসেন আড়াইটার দিকে।
স্বজনরা বাসা থেকে খাবার নিয়ে গিয়েছিলেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, স্বজনদের সাথে খেতে বসে সবার খবরাখবর নেন বেগম জিয়া। আর নব্বই মিনিটের এই স্বজনসাক্ষাতে তিনি বেশ কয়েকবার নাতনীদের কথা উল্লেখ করেন। তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান, মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান তার খুব আদরের। বিশেষ করে জাইমার সাথে তার সম্পর্কটা ভিন্নমাত্রার। জাইমা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাদীর সাথে যেতো। বাসায় বেগম জিয়ার সাথে প্রচুর সময় কাটাতো জাইমা।
ঈদের দিন স্বজনরা হাজির হলে তাদের কথাই বেশি মনে পড়েছে তার, যারা সামনে নেই। এবারের ঈদে ছোট বউ শর্মিলী যাননি শ্বাশুড়িকে দেখতে। বিএনপি চেয়ারপারসন তার কথা জিজ্ঞেস করেছেন।
উল্লেখ্য জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত খালেদা জিয়া। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কারাবন্দি।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।