বাবা! তুমি কি বাবা!- পরীমনি

S M Ashraful Azom
0
বাবা! তুমি কি বাবা!- পরীমনি
সেবা ডেস্ক: বাবা দিবস’ উপলক্ষে প্রিয় বাবাকে নিয়ে অন্য অনেকের মতো ফেসবুকে লিখেছেন ঢালিউড অভিনেত্রী পরীমনি। চিত্রনায়িকা পরীমনি ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়েছেন। পরীমনি তার বাবার সঙ্গে তোলা একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

সেবা হট নিউজ এর পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো,

‘বাবা,

তুমি কি বাবা!

নাহ তোমাকে কিছু লিখব না আমি আজ।

লিখব তোমাকে নিয়ে.....।

হ্যালো ফেইসবুক দুনিয়া, এই যে কত বাবা দিবস গেল! আমি শুধু দেখেই গেলাম বাবা দিবসে সবার কত কত পোস্ট। বাবাকে নিয়ে কখনো কোনো পোস্ট দেইনি আগে। আজ দিলাম। দেয়ার একটা কারণ আছে। কারণটা স্ট্যাটাসে লিখেছিলাম একবার। নাহ সেটা নিয়ে আজ আর কিছু লিখতে চাচ্ছি না। তাহলে হয়তো আবার মেজাজটা সামলাতে পারব না। যাইহোক, ছবিতে আমি আমার বাবার (মনিরুল ইসলাম) সাথে। তিনি বেঁচে নেই আজ ৮ বছর হয়ে যাচ্ছে...।

বাবা পুলিশ ছিলেন। তার গায়ে পুলিশের পোশাক দেখে ছোট্টবেলায় আমার এইম হয়েছিল পুলিশ হবার। মা মরে যায় তখন আমি ৩ বছর বয়সেরও কম ছিলাম। বাবা এমন একটা ধাক্কা নিতে পারেননি বলেই হয়তো দেশ ছেড়েছিলেন তখন। তারপর, বাবার ছায়া করে পেয়েছি নানু ভাইকে। নানু-নানী দুজনই টিচার। নানু বাড়ি আর দাদু বাড়ি দুই বাড়িরই বড় নাতনি আমি। অনেক আহ্লাদে বড় হওয়া আমার। কখনো এক বিন্দু অনুভব করিনি বাবা মা’র শূন্যতা। ভুল করেও মনে পড়েনি তাদের কথা। এমনকি এখনো ভাবি মা-বাবা কি!

আসলে বাবা বলতে হলে, তিনি আমার নানু ভাই শামসুল হক গাজী। আর আমার জন্মদাতা হলেন মনিরুল ইসলাম। ওহ একটা মজার বিষয় বলি, অনেককেই আমার নাম নিয়ে কৌতূহল দেখেছি। আসল নাম, ডাক নাম, কে রেখেছে ইত্যাদি ইত্যাদি...। নাম কখনো আসল নকল হয় নাকি আবার হা হা। হতে পারে ডাক নাম, সার্টিফিকেট অথবা বংশীয় নাম। আমার পরী নামটা আমার নানীর দেয়া। তার নানীর নাম ছিল পরীবিবি। আমার জন্মের কিছু বছর আগে তার নানী গত হয়ে যান, আর আমার জন্মের পর সে আমার নাম রেখে দেন পরী। আর মনিটা সবাই অতি আদরে জুড়ে দিল আর কি। আমার আরেকটা নাম শামসুন্নাহার স্মৃতি।

শামসুন মানে দিনের সূর্য/ সূর্যের আলো/ সূর্যরশ্মি এরকম কিছু। নানুর নামের সাথে মিল করে এই নাম। আর স্মৃতিটা নাকি বাবা তার জীবনের প্রথমবার হজ্ব করতে গিয়ে ঠিক করেছিলেন আল্লাহর কাছে মেয়ে চেয়ে। যদিও তখন নাকি বাবা বিয়েই করেননি। এসব বাবার কাছ থেকে শোনা আমার। বাবা মরে যাবার পর আমার স্মৃতি নামটা কেবল স্মৃতিই হয়ে গেল। সাবাই বলে মেয়েরা নাকি বাবার স্বভাবই বেশি পায়। আমিও নাকি আমার বাবার মতো বিশ্রী বদ মেজাজ, একটু বেশি আবেগপ্রবণ, স্পটভাষী, প্রচণ্ড রকম সাহস- এসব পেয়েছি। বাবার সাথে আমার অনেক বেশি স্মৃতি নেই। বড় হবার পর বাবাকে কাছে পেয়েছিলাম বছরখানেকের মতো। মনে আছে, যেদিন বাবা দেশে ফিরে প্রথম আমার সামনে আসে, সেদিন একটি ছোট্ট বাচ্চার মতো শব্দ করে করে সেকি কান্না! কত যে রাত পোহাত বাবা-মেয়ে জেগে জেগে!

শুধু আমার ছোট্টবেলার যতরকম গল্প কাহিনি...। একদিন বাবা তার একটা সাদা রঙের শার্ট আমাকে দিয়ে খুলতে বলে। খুলে দেখি শার্টের ভেতরে আঁকাবাঁকা হাতে শুধু বাবা আর বাবা লেখা!দেখেই বোঝা যাচ্ছিল হাতের লেখাটা কোন বাচ্চারই লেখা। বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ চুপ করে থাকার পর বলে, ‘জানো এখানে ২৭৩ বার বাবা লেখা আছে। তুমি কেবল লিখতে শুরু করেছিলে তখন। কলম হাতে দেয়ার পর যেখানেই সুযোগ পেতে সেখানেই ছোট্ট করে বাবা শব্দটা লিখতে।’

আহারে বাবা! ওহো, আমি তো ভুলেই গেছিলাম যে, আমি ফেইসবুকে লিখছি। সরি, আসলে বাবা নিয়ে লেখার কোনো সীমা-পরিধি আমার জানা নেই তো। থাক আর না লিখি আজ।



 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top