আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনে নবী করীম (সা.) এর চার দোয়া

S M Ashraful Azom
0
আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনে নবী করীম (সা.) এর চার দোয়া
সেবা ডেস্ক: আল্লাহ তায়ালার মুখাপেক্ষী হওয়া এবং তার নৈকট্য লাভ করা ছাড়া মানুষের আর কোনো উপায় নেই। আর দুয়া হলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের বিশেষ বাহন ও মাধ্যম। আল্লাহর কাছে চাওয়ার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর নিকটবর্তী হয়। রাসূল (সা.) আল্লাহর ভালোবাসা পেতে তাঁর কাছে দুআ করতেন। তিনি চেয়ে নিতেন আল্লাহর ভালোবাসা। নবীজি (সা.) এর এমন কিছু দুআ নিম্নে উদ্ধৃত করা হলো :

১। নবী কারীম (সা.) বলতেন-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ حُبَّكَ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা হুব্বাকা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আপনার ভালোবাসা কামনা করছি!’ (মুসনাদে আহমাদ : ৩৬/৪২৩, হাদীস নং ২২১০৯)

আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) এত বেশি নেয়ামত লাভ করেছেন যে, স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই ইরশাদ করেন, ‘আপনার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ অনেক বড়!’ (সূরা নিসা, আয়াত : ১১৩)

এত অনুগ্রহ লাভ করা সত্ত্বেও আল্লাহর প্রিয় হাবীব (সা.) তাঁর আঁচল পেতে দিতেন এবং আল্লাহ তাআলার কাছে তাঁর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধির জন্য দুআ করতেন।

২। রাসূল (সা.) এ দুআ করতেন-

اللهم اجعل حبك أحب الأشياء إلي.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাজ’আল হুব্বাকা আহাব্বাল আশইয়া-ই ইলাইয়্যা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনার ভালোবাসাকে আমার জন্য সমস্ত কিছুর মহব্বতের চেয়ে বেশি প্রিয় বানিয়ে দিন!’ (কানযুল উম্মাল, হাদীস নং: ৩৬৪৮)

অর্থাৎ আপনার ভালোবাসা আমার অন্তরে যেন সকল বস্তুর ভালোবাসার চেয়ে প্রবল হয়ে যায়। কুরআন মাজীদেও এমন ভালোবাসার দাবী করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

قُلْ إِن كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَآؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُم مِّنَ اللّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُواْ حَتَّى يَأْتِيَ اللّهُ بِأَمْرِهِ وَاللّهُ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ

“আপনি বলে দিন, তোমাদের কাছে যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের উপার্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা- যা মন্দা হয়ে যাওয়ার ভয় করো এবং তোমাদের বাসস্থান- যা তোমরা পছন্দ করো, এ সবই আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁর রাহে জিহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা করো, আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত।” (সূরা তাওবা, আয়াত : ২৪)

এখানে মূলত ভালোবাসার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দানের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ কিছু ভালোবাসা এমন রয়েছে, যা শরীয়তে জায়েয। যেমন- বাবা-মার ভালোবাসা, সন্তানের ভালোবাসা, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা। কিন্তু এ সবই নিচে থাকবে আর আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা তাদের সবার চেয়ে বেশি ও প্রবল হবে।

৩। রাসূল (সা.) আরেকটি দুআ করতেন-

اللَّهُمَّ اجْعَلْ حُبَّكَ أَحَبَّ إِلَيَّ مِنْ نَفْسِي وَأَهْلِي، وَمِنَ المَاءِ البَارِدِ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাজ’আল হুব্বাকা আহাব্বা ইলাইয়্যা মিন নাফসী ওয়া আহলী, ওয়া মিনাল মা-ইল বারিদি।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনার ভালোবাসাকে আমার কাছে আমার প্রাণ, আমার পরিবার ও শীতল পানির চেয়ে অধিক প্রিয় করে দিন!’ (তিরমিযী, হাদীস নং: ৩৪৯০)

৪। রাসূল (সা.) আরেকটি দুআ করতেন-

اَللهُم إِنيْ أَسْئَلُكَ الشوْقَ إِلى لِقَائِكَ وَلَذةَ النظْرِ إِلى وَجْهِكَ الْكَرِيْمِ.

উচ্চারণ: আলাহুম্মা ইন্নী আসআলুকাশ-শাওক্বা ইলা লিক্বা-ইকা ওয়া লাযযাতান-নাযরি ইলা ওয়াজহিকাল কারীম।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার সাক্ষাতের আকাঙ্ক্ষা কামনা করি এবং আপনার জ্যোতির্ময় চেহারার প্রতি তাকানোর স্বাদ আস্বাদনের ব্যাকুলতা কামনা করি।’ (মুসনাদুল আবরার, হাদীস নং : ১৩৯২)

রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে এই দুআগুলো বেশি বেশি পাঠ করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top