ধুনটে বানভাসি চরে সাপ ও ডাকাত আতংক

S M Ashraful Azom
0
 ধুনটে বানভাসি চরে সাপ ও ডাকাত আতংক
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বানভাসী যমুনা নদীর চরে নৌকাযোগে পুলিশ ও জনতার পাহাড়া

রফিকুল আলম
,ধুনট: প্রায় তিন বর্গকিলোমিটার আয়তনের চর এখন বুকসমান পানির নিচে। চারদিকে থইথই করছে পানি। তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, উঠান-বারান্দা, শোবার ঘর। মানুষ আশ্রয় নিয়েছে টিনের চাল আর বাঁশের উঁচু মাচায়। নারীরা শিশুদের নিয়ে এখন চারদিকে নদীঘেরা দ্বীপের মতো চরের নৌকার বাসিন্দা।

বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র অবলম্বন নৌকা কিংবা ভেলা। বানভসি মানুষের রয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। তাদের দূর্ভোগের যেন শেষ নেই। এরই সাথে যোগ হয়েছে বিষাক্ত সাপের উপদ্রব ও ডাকাত আতংক। ভয়ে অনেকে রাতে ঘুমোতে পারছে না। তাই দূর্গম চরের বানভাসি মানুষেরা রাত জেগে পাহারা দিয়ে জানমাল রক্ষা করছে।

সরেজমিন বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের যমুনা নদীর বৈশাখী, রাধানগর ও পুকুরিয়ার দূর্গম চর এলাকায় গিয়ে বানবাসি মানুষের সাথে কথা বলে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে।

চরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে ১২ দিন ধরে চর এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় এলাকার ঝোপ ও জঙ্গল তলিয়ে যাওয়ায় সাপের নিরাপদ আবাস নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে নানা প্রজাতির বিষধর ও নির্বিষ সাপ খাদ্য ও বাসস্থানের জন্য চরের লোকালয়ে চলে আসছে।

বৈশাখী চরের বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, পানি বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর। উঁচুস্থানে বাঁশের মাচায় পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছি। এ অবস্থায় পানির সাথে বিষধর সাপ ভেসে এসে প্রবেশ করছে ঘরে।  এ পর্যন্ত শতাধিক সাপ মেরে ফেলা হয়েছে। গরুর খড়ের পালা,বাঁশের মাচার নিচে এবং হাড়িপাতিলের ভেতর সাপ ঢোকার চেষ্টা করছে। সাপ গুলো নজরে আসলে সেগুলো মেরে ফেলা হচ্ছে।

রাধানগর চরের বেলাল হোসেন বলেন, পানিতে ভেসে সাপ জনবসতিতেও ঢুকে পড়েছে। এসব সাপ খুবই বিষধর। মানুষ কিংবা অন্য কোন প্রানিকে কামড় দিলে তাৎক্ষনিকভাবে মারা যাবে। স্থানীয় ভাষায় এগুলোর বেশির ভাগই জাত সাপ। সাপ গুলো ৩ থেকে ৪ ফুট লম্বা হয়। গায়ের রং খুব কালো। লোকালয়ে এসে সাপ কোথাও ডিম ফোটাচ্ছে কি না, সে চিন্তায় আমরা অস্থির। সাপের দংশন এড়াতে কী করণীয়, সেটাও তো জানি না।

বৈশাখী চরের আমজাদ আলী সরকার, বেলাল, হযরত আলী, আব্দুর রহমান, হানিফ মন্ডল জানান, চর এলাকায় ডাকাতের শঙ্কা রয়েছে। এক রাতে চর এলাকায় ডাকাতেরা হানা দিয়েছিল। কিন্ত তাদের প্রতিরোধের মুখে ডাকাতেরা বিফলে পালিয়ে গেছে। জানমাল রক্ষার জন্য চরের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা দেয়। 

উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল বলেন, সাপের উপদ্রব এড়াতে বন্যাকবলিত এলাকার লোকজনকে সাবধানে থাকার জন্য সচেতন করা হচ্ছে। এ ছাড়া যদি এ-সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে সহায়তা দিতে উপজেলার হাসপাতাল এবং ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমও তৎপর রয়েছে।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, দুর্গম চর এলাকায় বানভাসি মানুষের জন্য প্রতি রাতেই পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত চর এলাকায় ডাকাতির কোন ঘটনার অভিযোগ পাওয়া যায়নি।


 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top