
বিল্লাল হোসেন মন্ডল: যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে থাকায় জামালপুরের ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে । যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । ওজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবল স্রোতে দেওয়ানগঞ্জ পৌর এলাকা ও আটটি ইউনিয়নের অন্তত: ৩০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত: ২০ হাজার পরিবার ।
জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে বলে রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার প্রায় ৩ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক বাড়তে থাকায় দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার অন্তত ৩০টি গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব গ্রামের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ৩০০ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। শুক্রবার রাতে চুকাইবাড়ী ইউনিয়নে তিনটি পরিবারের বাড়িঘর যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। পানি প্রবলবেগে বাড়তে থাকায় যমুনাপাড়ের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের বয়ড়াপাড়া, নয়াগ্রাম, কাজলাপাড়া ও খোলাবাড়ী গ্রামের শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি মানুষেরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় অনেকেই ঘরের টিনের চাল, বেড়া, ধান-চাল, আসবাবপত্র ও গবাদি পশু সরিয়ে নিচ্ছেন উঁচু রাস্তার পাশে এবং সেতুতে।
যমুনার পাড়ঘেষা স্থানীয় চরখোলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও খোলাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। চরখোলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিকের কার্যালয় ও ছাত্রীদের কমনরুমের ভবনটি যেকোনো মুহূর্তে যমুনাগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ৮৪ বছরের পুরনো এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরও চারটি ভবন এবার যমুনার গর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. খোরশেদ আলম জানান, বিদ্যালয় ভবন ও জনবসতি রায় এই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ না করায় এলাকাটা খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। প্রতিবছর বর্ষাকালে শত শত হেক্টর জমি ও বসতভিটা যমুনা গর্ভে বিলীন হয়ে আসছে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. এনামুল হাসান বলেন, বন্যায় এখনও পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো য়তি হয়নি। তবে উপজেলার একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নের অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। দ্রুত গতিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলায় এবার ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য জেলা ত্রাণ শাখা থেকে ২০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
এছাড়াও ১০ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, এক কেজি লবণ ও এক লিটার সয়াবিন তেলসহ অন্যান্য সামগ্রীর ২৫০টি প্যাকেট বরাদ্দ পেয়েছি। রবিবার থেকে এসব ত্রাণ সামগ্রী বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।