সেবা ডেস্ক: পরনে তার স্কুলড্রেস, কাঁধে স্কুল ব্যাগ। বাঁশের লাঠিতে ভর দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে স্কুলের পথে নিত্য ছুটে চলে শিশু রমন চৌহান। বাঁশের লাঠিতে ভর দিয়ে স্কুলে ছুটে চলা রমন পড়ে গিয়ে মাঝে মধ্যে ব্যথাও পায়। কিন্তু রমনের ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা। রমনের বাড়ি গৌরীপুরে।
পৌর এলাকার গোলকপুর মহল্লার গোলকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ালেখা করে রমন চৌহান। পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোলকপুর গ্রামের শঙ্কর চৌহানের ছেলে রমন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে রমন সবার বড়। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে হাঁটতে পারে না রমন। বাঁশের লাঠিতে ভর দিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয় তাকে। রমন জন্মানোর সময় পা দুটি বাঁকা ও সরু ছিল। অভাবের জন্য চিকিৎসা না হওয়ায় ওর পা দুটি অচল হতে থাকে। মুখের কথাবার্তায়ও চলে আসে জড়তা। ছোটবেলায় হামগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাঠিতে ভর দেয়া শেখে। প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসা করলেও অভাবের তাড়নায় প্রাইভেট পড়া হয় না রমনের। প্রতিবন্ধী হলেও ভাগ্যে জোটেনি সরকারি ভাতা। বাড়ির সামনেই রমনের বাবার ছোট্ট দোকান। সারাদিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি হয়। বাবার আয়ের ওই টাকা দিয়েই টানাটানি করে চলে সংসার।
রমনের মা পুতুল চৌহান জানান, প্রতিবন্ধী হওয়ায় রমন ছোটবেলায় হাঁটতে পারত না। উঠানে বসে থাকত। বড় হওয়ার পর সমবয়সীদের স্কুলে যাওয়া দেখে সে বায়না ধরে স্কুলে যাবে। পরে স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হয়। শুরুর দিকে তিনি রমনকে স্কুলে আনা-নেয়া করতেন। কিছুদিন পর রমন নিজেই লাঠিতে ভর দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া শুরু করে।
গোলকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্যাসিফ্লোরা সুলতানা জানান, প্রতিবন্ধী হলেও রমন স্কুলে নিয়মিত। সবার সহযোগিতা পেলে সে অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলী আহাম্মদ জানান, শিশুটির পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করলে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডপ্রাপ্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।