সেবা ডেস্ক: নতুন বাজেটে প্রণোদনা দেওয়ায় আগামী দিনগুলোতে রেমিটেন্স আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছিলেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা।
নগদ প্রণোদনা ও ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নে আগের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। ফলে চলতি অর্থবছরের চার মাসেই ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে রেমিট্যান্স।
এই চার মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সাড়ে ২০ শতাংশ। এর মধ্যে গত অক্টোবর মাসেই রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ১৬৪ কোটি ডলার, যা একক মাস হিসেবে এ যাবতকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
গত অর্থবছরের অক্টোবরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ। এছাড়া আগের মাস সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে সাড়ে ১১ শতাংশের মতো রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ জন্য বাজেটে তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ১ জুলাই থেকেই এই প্রণোদনা কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করেছে গত ৬ আগস্ট। যদিও অর্থছাড় জটিলতার কারণে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নগদ প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে অক্টোবরের শুরুতে এই জটিলতা কাটায় ৭ অক্টোবর থেকে সুবিধাভোগীদের মাঝে প্রণোদনা বিতরণ শুরু করেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রণোদনা বিতরণ শুরু হওয়ার কারণে অক্টোবরে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এছাড়া অক্টোবর মাসেই তিন দফায় প্রায় ২৫ পয়সার মতো টাকার অবমূল্যায়ন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বর্তমানে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৮৪ টাকা ৭৫ পয়সা মিলছে। অর্থাৎ ডলারের বিপরীতে আগের চেয়ে বেশি বিনিময় মূল্য পাওয়ায়ও অক্টোবরে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অক্টোবর মাসে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৬৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। আগের মাস সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স আসে ১৪৬ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। আর গত অর্থবছরের অক্টোবর মাসে এসেছিল মাত্র ১১৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। সব মিলে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর—এই চার মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৬১৫ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ৫১০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ হিসাবে আলোচ্য সময়ে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১০৪ কোটি ২৪ লাখ ডলার বা ২০.৪০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে এক হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স আসে। এই অঙ্ক আগের বছরের (২০১৭-১৮) চেয়ে ৯.৬ শতাংশ এবং অতীতের যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি ছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই এক বছরে এই পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।