শিব্বির আহমদ রানা, প্রতিনিধি, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ডিবি-পুলিশের যৌথ অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় একে-২২সহ ৭টি অস্ত্র উদ্ধার করার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মনকিচর গ্রামের সেইন্যা পাড়ার মো. নাজিরের পুত্র সাবেক ইউপি সদস্য ও এস.আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের সাবেক সহকারী সমন্বয়কারী বাহাদুর আলম হিরণের বাড়ীতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চট্টগ্রাম দক্ষিণ আফরোজুল ইসলাম টুটুলের নেতৃত্বে ডিবি-পুলিশের সদস্যদের নিয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) ভোর ৬ টার দিকে ডিবি-পুলিশের যৌথ অভিযানে বাহারদুর আলম হিরণের বসত ভিটা হতে কোন কিছু পাওয়া না গেলেও বাড়ীর অদূরে প্রায় ৩শ ফুট পূর্ব দিকে গোয়াল ঘর হতে পরিত্যক্ত অবস্থায় একে-২২ সহ ৭টি দেশীয় তৈরী এলজি ও বন্দুক উদ্ধারের দাবি অভিযানকারী যৌথ দলের।চট্টগ্রামের ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মাকসুদ আলম কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সহকারী সমন্বয়কারী বাহাদুর আলম হিরণের বাড়ীতে কিছু না পাওয়ার বিষয়ে একটি জব্দ নামা প্রদান করেছে তার বাড়ীর সদস্যদের।
'এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগী সাবেক ইউপি সদস্যের পরিবারটি স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে বাঁশখালী প্রেস ক্লাবের অস্থায়ী কাযার্লয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘটনা সম্পর্কিত ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় বিগত ৬ অক্টোবরে র্যাবের অভিযানের পর ৯ অক্টোবর বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ও ১৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, সচিব ও পুলিশের আইজিপি, র্যাব প্রধানসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানান বাহাদুর আলম হিরুণ।'ধারাবাহিক অভিযানের ১ মাস পার হতে না হতেই ডিবি-পুলিশের যৌথ অভিযান পরিচালনা করায় অসহায় পরিবারটি জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম শংকিত অবস্থায় জীবন ডার করছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শীলকূপ ইউপি’র ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সহকারী সমন্বয়কারী বাহাদুর আলম হিরণের বাড়ীতে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে মর্মে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ অক্টোবর র্যাব-৭ এর একটি দল অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র্যাবের অভিযানেও এই সহকারী সমন্বয়কারীর বাড়ী হতে কোন কিছু পাওয়া যায়নি মর্মে এলাকার লোকজনের কাছ থেকে সাক্ষীস্বরূপ সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় র্যাব। এর ১ মাস পার হতেই সোমবার ৪ নভেম্বর ভোর সকালে আবারো চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখার ডিবি ও বাঁশখালী থানা পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। তবে এই অভিযানেও তার বাড়ী হতে কিছু পায়নি অভিযানকারী দল। একের পর এক অভিযানের ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এই সাবেক প্রকল্প সমন্বয়কারী।
এদিকে তার বাড়ী হতে কিছু না পেলেও পার্শ্ববর্তী স্থান হতে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১টি একে-২২সহ ৭টি দেশীয় এলজি ও বন্দুক উদ্ধার হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যেরর সৃষ্টি হয়। উপস্থিত এলাকাবাসীর সামনে এই অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় এবং এই অবৈধ অস্ত্রগুলো কার তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে জানতে সাবেক ইউপি সদস্য সহকারী প্রকল্প সমন্বয়কারী বলেন, আমি গন্ডামারা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প সমন্বয়কারী হিসেবে দীর্ঘ ৩ বছর যাবৎ দায়িত্ব পালন করি। সেই সুবাদে বিভিন্ন মহল আমার সাথে শত্রুতা শুরু করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করে সর্বশেষ ৪ নভেম্বর সোমবার ডিবি-পুলিশের যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে এলাকাবাসীর সামনে র্যাব ও ডিবি-পুলিশের পক্ষ হতে আমার বাড়ী হতে কিছু না পাওয়ার একটি লিখিত পত্র প্রদান করে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান ও মুঠোফোনে একাধিক হত্যার হুমকিতে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আমি একটি সাধারণ ডায়েরি করি।
বাঁশখালী থানা পুলিশের ওসি রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলা শাখার গোয়েন্দা ও থানা পুলিশ বাহাদুর আলম হিরণের বাড়ীর গোয়াল ঘরে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে তার বসতবাড়ী হতে কিছু পাওয়া না গেলেও পার্শ্ববর্তী স্থান হতে পরিত্যাক্ত অবস্থায় একটি একে-২২ সহ ৬টি দেশীয় তৈরী বন্দুক ও এলজি উদ্ধার করা হয়। অবৈধ অস্ত্রগুলো কার এবং কিভাবে এখানে এসেছে তা খতিয়ে দেখতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে বলেও তিনি জানান।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।