আমদানিকৃত গোশত খাওয়ার বিষয়ে বিধান

S M Ashraful Azom
0
আমদানিকৃত গোশত খাওয়ার বিষয়ে বিধান
সেবা ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, কানাডা ও অস্ট্রলিয়াসহ অনেক অমুসলিম দেশ থেকে গোশত আমদানি হয়। তবে অধিকাংশ দেশ নিজেরাই পশু পালনের মধ্য দিয়ে গোশত উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে ইতোমধ্যে।

বর্তমানে বাংলাদেশ- ব্রাজিল, ভিয়েতনাম ও ভারত থেকে গোশত আমদানির চিন্তাভাবনা করছে। আমদানিকৃত গোশত খাওয়া ডাক্তারির দিক থেকে ক্ষতিকর কিনা তা গবেষকরা বলবেন। একজন মুসলমান হিসেবে এ গোশত খাওয়া কতটুকু উচিত তাই তুলে ধরা হবে এই লেখায়।

অনেকের প্রশ্ন হতে পারে, গোশতের প্যাকেটের ওপর তো লেখা রয়েছে ‘হালাল গোশত’ এবং কোন কোনটির ক্ষেত্রে বিভিন্ন শরয়ী বোর্ডের সার্টিফিকেটও থাকে, তাহলে এ গোশত খেতে সমস্যা কোথায়?

এ সমাধানের জন্য আমরা আরবের বিভিন্ন বোর্ডের মতামত তুলে ধরব-ইনশাল্লাহ! মূল রচনাটি অনেক লম্বা। তাই মৌলিকত্ব ঠিক রেখে সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হয়েছে।

ইসলামে শরয়ী জবহের গুরুত্ব:
ইসলামে যে সকল প্রতীকের গুরুত্ব অপরসীম, এর অন্যতম হচ্ছে পশু জবহের পদ্ধতি। অর্থাৎ ইসলামি পদ্ধতিতে পশু জবেহ করা মুসলমান হওয়ার প্রতীক বা বাহ্যিক আলামত। নবী কনিম (সা.) থেকে সুস্পষ্ট ভাষায় এ বিষয়ে হাদিস বর্নীত হয়েছে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্নীত, নবী করিম (সা.) বলেন, যে আমাদের মতো নামাজ আদায় করে, আমাদের কেবলামুখী হয়ে দাঁড়ায় এবং আমাদের জবেহকৃত প্রাণীর গোশত খায় সেই মুসলিম। ওই মুসলিম আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জিম্মায়। অতএব, তোমরা আল্লাহর জিম্মাতে কোনোরূপ খেয়ানত করো না।’ (বুখারী)। অর্থাৎ এ সকল ক্ষেত্রে অন্য কোনো ধর্মের লোকেরা মুসলমানদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তারা কখনো এ সকল ক্ষেত্রে মুসলমানদের সাদৃশ্যতা অবলম্বণ করে না। তাদের থেকে মুসলমানদের ন্যায় আমল পাওয়া যাবে না। তাছাড়া কোরআনে জবহের বিধান সম্বিলিত কয়েকটি আয়াত নাজিল হয়েছে। এর দ্বারা ইসলামে শরয়ী জবহের গুরুত্ব বুঝে আসে।

অমুসলিমদের জবহকৃত পশুর গোশতের বিধান:
আমদানিকৃত গোশতের বিধান জানার আগে অমুসলিমদের জবহকৃত পশুর বিধান এবং আধুনিক জবহের বিভিন্ন পদ্ধতির বিধান জেনে নেয়া দরকার। কারণ, আমদানিকৃত গোশতের বিধানের সঙ্গে এ দুই বিষয়ে সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই প্রথমে অমুসলিমদের জবহকৃত গোশতের বিধান আলোচনা করা হলো। সকল ফকিহগণের মতে খৃষ্টান ও ইহুদী ছাড়া অন্যকোনো অমুসলিমের জবহকৃত পশুর গোশত খাওয়া জায়েজ নেই। এ ব্যাপারে আল কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আহলে কিতাবদের খাদ্য তোমাদের জন্য হালাল।’ (সূরা মায়িদা-৫)। আয়াতে খাদ্য দ্বারা তাদের জবহকৃত পশুর গোশত উদ্দেশ; সকল ফকিহগণ এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। তাদের জবহকৃত পশুর গোশত হালাল হওয়ার কারণ হচ্ছে, আল্লাহর নামেই তারা জবহ করে এবং জবহের অন্যান্য ক্ষেত্রেও মুসলমানদের পদ্ধতি এবং তাদের পদ্ধতি এক। তাই তাদের জবাহকৃত পশুর গোশত হালাল হওয়ার জন্যও ওই শর্তসমূহ পাওয়া যেতে হবে, যেগুলো মুসলমানদের থেকে পেতে হয়। অন্যথায় তাদের জবহকৃত পশুর গোশতও বৈধ হবে না।



এমন খৃষ্টান বা ইহুদী যারা স্রষ্টাকে বিশ্বাস করে না তাদের জবহকৃত পশুর বিধান পূর্বে আলোচনা হয়েছে, আহলে কিতাব তথা ইহুদী ও খৃষ্টানদের জবহকৃত পশুর গোশত খাওয়া বৈধ। তবে এর দ্বারা উদ্দেশ কখনো এটা নয় যে, শুধু নামে ইহুদী বা খৃষ্টান, প্রকৃত অর্থে তারা নাস্তিক। বরং উদ্দেশ্য হলো তারা তাওরাত ও ইঞ্জিল অনুযায়ী রবকে বিশ্বাস করে। যদিও উক্ত কিতাবদ্বয় বিকৃত হওয়ার কারণে নির্মল তাওহীদের বিশ্বাসে বিকৃতি ঘটেছে। কারণ, কোরআন নাজিল করে তাদের গোশত খাওয়ার বৈধতা দেয়া হয়েছে। আর ওই সময়ও তাদের কিতাব বিকৃত ছিল। তাই তাদের কিতাব অনুযায়ী রবকে বিশ্বাস করলে এবং জবহের ক্ষেত্রে তাদের কিতাব মেনে চললেই তাদের গোশত খাওয়া হালাল হবে। বর্তমানে জবহের বিধানের ক্ষেত্রে ইহুদীরা স্বীয় ধর্ম অনুযায়ী আমল করে যাচ্ছে। কিন্তু খৃষ্টানরা একেবারেই ইনজিলের বিধানকে ছুড়ে ফেলেছে। তাই কোথাও যদি মুসলমান কসাই না পাওয়া যায়, কিন্তু খৃষ্টান ও ইহুদী খসাই পাওয়া যায় তাহলে পরামর্শ হচ্ছে, গোশত খেতে হলে ইহুদীরটা খাওয়া।

হিন্দু, বৌদ্ধের জবহকৃত প্রাণীর গোশতের বিধান:
আল কোরআনে যেহেতু শুধু ইহুদী ও খৃষ্টানদের জবহকৃত পশুর গোশত খাওয়াকে বৈধতা দিয়েছে। তাই হিন্দু বা বৌদ্ধের জবহকৃত পশুর গোশত খাওয়া কোনোভাবেই জায়েজ হবে না। ইহুদী ও খৃষ্টানের জবহকৃত পশুর গোশত খাওয়া এ জন্য বৈধ যে, তারা আল্লাহর নাম নেয়া এবং রগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে মুসলমানদের সঙ্গে সাদৃশ্য রাখে। অন্য ধর্ম যেহেতু সাদৃশ্য রাখে না। তাই অন্য ধর্মের অনুসারীর জবহকৃত পশুর গোশত খাওয়া বৈধ হবে না।

জবহের আধুনিক বিভিন্ন পদ্ধতি:
বর্তমানে গোশত সাপ্লাইকারী কোম্পানির কসাইখানাগুলোতে পশু জবহের জন্য বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। যেমন কোনো কোনো কসাইখানায় পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে পশুকে অজ্ঞান করে জবহ করা হয়। এই পিস্তলের গুলি চিকন সুয়ের মতো। গুলি বের হয়ে পশুর মাথার মগজে আঘাত করে আর সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এরপর জবহ করে। কোনো কোনো কসাইখানায় বুক ছিদ্র করে ফুসফুসে হালকা বাতাস দেয়। এতে শ্বাস বন্ধ হয়ে প্রাণী মারা যায়। গ্যাস দ্বারা আক্রান্ত করে অজ্ঞান করা হয়, তারপর পশু জবহ করার সিস্টেমও কোথাও কোথাও আছে। এর দ্বারা মূলত দু’টি উদ্দ্যেশ। এক হচ্ছে, পশুকে সহজে বশিভূত করা। অন্যটি হলো জবহের সময় পশুর কষ্ট লাঘব করা। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় দিক হচ্ছে, কোনো অবস্থাতেই যেন জবহের আগে পশু না মরে। যদি মারা যায় তাহলে উক্ত পশু খাওয়া কোনো অবস্থাতেই বৈধ হবে না।

পশুর জবহকারী কোন ধর্মের অনুসারী জানা না গেলে:
(এক) যে জায়গা থেকে গোশত সংগ্রহ করা হচ্ছে, ওই অঞ্চলের অধিকাংশ অধিবাসী মুসলমান হলে সেখানের গোশত খাওয়া হালাল হবে। যদি না জানা যায় যে, কে জবহ করেছে, জবহের সময় বিসমিল্লাহ বলেছে কিনা? কারণ, মুসলিম অঞ্চলের ক্ষেত্রে ধরে নেয়া হবে যে, তা ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী জবহ করা হয়েছে।

(দুই) অধিকাংশ অধিবাসী অমুসলিম তবে ইহুদী বা খৃষ্টান নয় তাহলে ওই অঞ্চলের গোশত খাওয়া বৈধ হবে না। তবে সুনির্দিষ্টভাবে জানা গেলে যে, মুসলমান বা কোনো ইহুদী বা খৃষ্টান তা জবহ করেছে তাহলে খাওয়া যাবে।

(তিন) অধিকাংশ অধিবাসী ইহুদী বা খৃষ্টান হলে সে অঞ্চলের অজ্ঞাত ব্যক্তির জবহকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া বৈধ হবে। ধরে নেয়া হবে কোনো খৃষ্টান বা ইহুদীই এটাকে জবহ করেছে। আর ওদের গোশত খাওয়া বৈধ। উল্লেখ্য, তাদের জবহকৃত ওই প্রাণীর গোশতই মুসলমানরা খেতে পারবে যে প্রাণীর গোশত ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী খাওয়া হালাল। ইসলামে হারাম হলে, ওদের জবহ দ্বারা তা কখনো হালাল হবে না। যেমন শুকর, কুকুর ইত্যাদি। তাছাড়া দৃঢ়ভাবে যদি জানা থাকে যে, ইহুদী বা খৃষ্টান জবহ করলেও তা তাদের ধর্ম মেনে জবহ হয়নি তাহলে সে গোশত খাওয়া বৈধ হবে না। বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের গোশতের ক্ষেত্রে এই বিধানই প্রযোজ্য। কারণ, তারা শরিয়ত মেনে জবহ করে না।

আমদানিকৃত গোশত খাওয়ার বিধান:
যে গোশত ইউরোপ, আমেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন মার্কেটে পাওয়া যায় বা সেখানকার গোশত কোম্পানি থেকে মুসলিম বিশ্বে আমদানি হয় তা খাওয়া বৈধ না হওয়ার বহু কারণ রয়েছে। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো-

(এক) সেখানকার জবহকারীর ধর্ম সম্পর্কে জানা না থাকা। কারণ, সেখানে মূর্তিপূজক, অগ্নিপূজক, প্রকৃতিপূজকসহ বহু নাস্তিক বসবাস করে। অতএব, সুস্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না, কোন খৃষ্টান বা ইহুদী জবহ করেছে। তাই তা খাওয়া বৈধ হবে না। খৃষ্টান বা ইহুদী অধ্যুষিত দেশের গোশত খাওয়া না গেলে, যে সকল দেশের মানুষ বৌদ্ধ বা হিন্দু সেখানকার গোশত খাওয়া বৈধ না হওয়ার বিষয়টি আরো সুস্পষ্ট; যাবত না সুনির্দিষ্টভাবে জানা যাবে তা কোনো মুসলমান জবহ করেছে।

(দুই) যেহেতু ওখানকার অধিকাংশ নাগরিক খৃষ্টান, তাই যদি ধরেও নেয়া হয় কোনো খৃষ্টান তা জবহ করেছে। তাহলেও তা খাওয়া বৈধ হবে না। কারণ, জানা সম্ভব নয় যে, ওই খৃষ্টান, পশু তাদের ধর্মের নীতি মেনে জবহ করেছে। আর পূর্বে আলোচনা হয়েছে, বর্তমানে অধিকাংশ খৃষ্টান জবহের সময় স্বীয় ধর্মের রীতিনীতি মেনে চলে না। আর অধিকাংশ খৃষ্টান হচ্ছে বর্তমানে নাস্তিক, তাই খৃষ্টান জবহ করলেও খাওয়া যাবে না। তবে নিশ্চিত হলে যে, খৃষ্টধর্মের নিয়ম মেনেই তা জবহ হয়েছে। তাহলে তা খেতে সমস্যা ছিল না। কিন্তু এটা এখানে সম্ভব নয়। আর মূলনীতি হচ্ছে, কোনো গোশতের ব্যাপারে সন্দেহ হলে হারাম হওয়ার দিকটিকে প্রাধান্য দিয়ে তা খাওয়া থেকে বিরত থাকা।

সৌদি আরবের প্রসিদ্ধ একটি সংস্থা হচ্ছে ‘হাইয়াতু কিবারিল উলামা’। এই সংস্থার কাজ হচ্ছে ইসলামে বিভিন্ন আইন ও বিধিবিধান নিয়ে গবেষণা করা। এই সংস্থা অমুসলিম দেশের বিভিন্ন গোশত কোম্পানি নিজেদের প্রতিনিধি দ্বারা পরিদর্শন করিয়েছেন। প্রথমে তারা চেষ্টা করেছিল, সৌদি আরবের খাদ্যমন্ত্রণালয় দ্বারা বিষয়টি যাছাই করতে। কিন্তু মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত গোশতের ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে চাইনি। বরং অস্পষ্ট বক্তব্য দিয়ে পাশ কাটিয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে তারা নিজেদের প্রতিনিধি এবং ওখানকার কোম্পানিগুলোতে কর্মরত মুসলমান দ্বারা তথ্য সংগ্রহ করে রিপোর্ট পেশ করেছেন। যা দ্বারা প্রতীয়মাণ হয়, ওই দেশগুলো থেকে আমদানিকৃত গোশত খাওয়া কোনোভাবেই বৈধ হবে না। যেমন ওআইসির সহযোগী সংগঠন ‘রাবেতাতুল আলামিল ইসলামি’ এর মহাসচিব উক্ত বিষয়ে জানতে চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন ‘ইদারাতুল বুহুসিল ইলমী ওয়াল ইফতা’ এর পরিচালকের কাছে। তিনি উত্তরে যে তথ্য দিয়েছেন, তা খুবই হতাশাজনক। তিনি জানিয়েছেন অস্ট্রলিয়ার একটি কোম্পানি হলো ‘আল হালালুল সাদিক’। কোম্পানির মালিক একজন কাদিয়ানি। ওই কোম্পানিসহ অন্যান্য কোম্পানিগুলোতেও জবহের ক্ষেত্রে ইসলামি বিধিবিধান মেনে চলা হয় না। তাদের সরাসরি প্রত্যক্ষের ভিত্তিতে ফতোয়া দেয়া হয়েছে যে, এ ধরনের গোশত খাওয়া বৈধ হবে না। কোনো কোনো কোম্পানি প্রতারণার আশ্রয় নেয়। যেমন: কোম্পানিতে কিছু মুসলমান কর্মাচারী নিয়োগ দেয়। মুসলিম রাষ্ট্রের কেউ পরিদর্শনে গেলে তাদের দেখিয়ে দেয় যে, আমরা তাদের দ্বারা পশু জবহ করাই। কিন্তু এটা শুধু পরিদর্শককে দেখানোর জন্য। বাস্তবে পশু জবহ করে অন্যরা, যারা এ সকল নিয়ম কানুন মেনে জবহ করে না। বহু মানুষের প্রত্যক্ষ করার পর আরবে বিভিন্ন ফিকহি বোর্ড সিদ্ধান্ত দিয়েছে, এভাবে আমদানি করা গোশত খাওয়া জায়েজ হবে না। যদি গোশত আমদানি করতেই হয় তাহলে জীবিত পশু আমদানি করবে। এরপর দেশে আসার পর তা জবহ করে গোশত বিক্রি করবে। তাছাড়া জবহে বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে পশু অনেক সময় জবহের আগেই মারা যায়। এরপর তা কেটে গোশত সাপ্লাই দেয়।


 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top