ঘুরে আসুন ঘাটাইলের ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’

S M Ashraful Azom
0
ঘুরে আসুন ঘাটাইলের ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’
সেবা ডেস্ক: টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা থেকে ২৬ কিলোমিটার পুর্বে ধলাপাড়া ইউনিয়নে ও ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় রাধা কৃষ্ণের ভক্তদের পুণ্যস্থান “গুপ্ত বৃন্দাবন” (Gupta Brindaban) নামক গ্রাম অবস্থিত। এখানে প্রতিবছর চৈত্র মাসের ১২ তারিখ প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো একটি কালো তমাল গাছকে কেন্দ্র করে জমজমাট বারুনি মেলার আয়োজন করা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাড়াও এই উৎসবে আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে সকল ধর্মের দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে।

গুপ্ত বৃন্দাবন গ্রামের নামকরণ এবং তমাল গাছটিকে ঘিরে নানান কল্পকথা প্রচলিত আছে। এলাকার স্থানীয় হিন্দু, আদিবাসি ও বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের লোকেরা বিশ্বাস করেন, মধুরায় শ্রীকৃষ্ণের উপর কংশ রাজার অত্যাধিক অত্যাচারের কারনে রাধা এবং ১৫০০ জন গোপিনীকে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ পালিয়ে আসেন। এই ঘটনার কারণে স্থানটি গুপ্ত বৃন্দাবন নামে পরিচয় লাভ করে।

তবে ইতিহাস হতে পাওয়া তথ্য মতে, এই জায়গার পূর্ব নাম বৃন্দাবন। গুপ্ত বংশীয় বিভিন্ন নিদর্শন এই স্থান হতে প্রাপ্তির ফলে বৈষ্ণব ধর্মের প্রচারক ১৫৭৭ সালে জায়গাটির নাম দেন গুপ্ত বৃন্দাবন।

আর রাধা কৃষ্ণের ভক্তরা বিশ্বাস করে, গুপ্তবৃন্দাবনের তমাল গাছের ডালে রাধা কৃষ্ণ দোল খেতেন ও অভিসারে মিলিত হতেন।

তমাল গাছের উত্তর পাশে একটি রাধাগোবিন্দ মন্দির রয়েছে। এছাড়া এখানে আরো আছে বিভিন্ন প্রাচীন মূর্তি ও মন্দির। প্রতিবছর বাংলা সনের চৈত্র মাসে এখানে বাৎসরিক মেলা ও কীর্তনযজ্ঞের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রাকৃতিক পরিবেশের আবহ থাকায় আগে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম লীলার স্মৃতি কল্পনা করা যেত। ঐতিহাসিক এই তমাল গাছ রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি এখানকার সেই প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি তাদের।

ঐতিহাসিক বিচেনায় এখানে ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলা গেলে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে নিজস্ব পরিবহন অথবা বাসে জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়ক দিয়ে সরাসরি ঘাটাইল উপজেলায় যাওয়া যায়। এছাড়া টাঙ্গাইল হয়েও ঘাটাইলে যেতে পারবেন। ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে সিএনজি ভাড়া নিয়ে ২৭ কিলোমিটার দূরে গুপ্ত বৃন্দাবন গ্রামে যাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন

রাত্রিযাপনের জন্য ঘাটাইলের চেয়ে টাঙ্গাইল শহরে থাকা বেশী সুবিধাজনক। টাঙ্গাইল শহরে বিভিন্ন ধরণের আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল আল ফয়সাল, ব্যুরো হোটেল, আনসারি প্যালেস, হোটেল প্রিন্স ও হোটেল শান্তি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া রয়েছে সার্কিট হাউজ ও জেলা পরিষদের ডাক বাংলোর মতো সরকারী আবাসনের ব্যবস্থা।

এছাড়াও টাঙ্গাইলের ঘাটাইল শহরে ভালো মানের এসি, নন এসি সম্বলিত আবাসিক হোটেল গড়ে উঠেছে।

কোথায় খাবেন

ঘাটাইলে খাওয়ার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। এদের মধ্যে হোটেল তাজমহল, হোটেল পাঁচ তারা, তিন তারা, ধানসিঁড়ি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

আর অবশ্যই টাঙ্গাইল ঘুরতে আসলে পাঁচআনি বাজারের বিখ্যাত পোড়াবাড়ীর চমচমের স্বাদ নিতে ভুলবেন না।


 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top