পরিবেশ উন্নয়নে মডেল রেশমনগরী

S M Ashraful Azom
0
পরিবেশ উন্নয়নে মডেল রেশমনগরী

সেবা ডেস্ক: আমের জন্য বিখ্যাত ও উত্তরের বিভাগীয় নগরী রাজশাহী। এটি উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় শহর। পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত রাজশাহী তার আকর্ষণীয় রেশমী বস্ত্র, আম, লিচু এবং মিষ্টান্নসামগ্রীর জন্য প্রসিদ্ধ। রেশমী বস্ত্রের কারণে রাজশাহীকে রেশমনগরী নামে ডাকা হয়।

আবার রাজশাহী শহরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান রয়েছে যার অনেকগুলোর খ্যাতি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। নামকরা এসব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের জন্য রাজশাহী শিক্ষানগরী নামেও পরিচিত।

পরিবেশ উন্নয়নে খ্যাতি অর্জন করেছে এ শহর। উত্তরের বিভাগীয় এ নগরী এখন দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের কাছে পরিচিত একটি নাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি উদ্যোগের মধ্যে একটি উদ্যোগ পরিবেশ সুরক্ষা। তার নির্দেশ অনুযায়ী রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী মহানগরীর পরিবেশ উন্নয়নে উদ্যোগ নেন।

বহুমুখী কাজের ধারায় বায়ুদূষণ রোধে সফলতা অর্জনে বিশ্ব সেরার খেতাব পায় রাজশাহী। সেই ধারা অব্যাহত রাখতে নগরীর পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে নেয়া হয়েছে নানামুখী উদ্যোগ। যা বাস্তবায়ন হলে বায়ুদূষণ রোধ করে পরিবেশের উন্নয়নে রাজশাহী হবে বিশ্বের মডেল বলে মনে করছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) কর্মকর্তারা।

রাসিকের পরিবেশ কর্মকর্তারা সৈয়দ মাহমুদুল ইসলাম জানান, শহরের প্রতিটি আইল্যান্ড সুন্দর করার লক্ষ্যে মেয়রের নির্দেশে বেশকিছু কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। পরিবেশ সুরক্ষায় গত বছরের ২৫ মার্চ সাউথ এশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান ইকলি’র সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।

এছাড়া গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ সুরক্ষায় ও নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণ ও পরিশোধন করবে।

তিনি বলেন, রাজশাহী নগরীতে যেসব জলাশয় বা পুকুর রয়েছে সেগুলোকে সংরক্ষণ ও উন্নয়নের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এসব পুকুর বা জলাশয় সংরক্ষণের ফলে পানির অ্যাকুইফার লেবেল বা ওয়াটার টেবল ঠিক থাকে। যার ফলে আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিচার্জ হয়। এর সুফল হিসেবে টিউবওয়েলগুলোতে সব মৌসুমেই পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাবে।

সৈয়দ মাহমুদুল ইসলাম বলেন, বাতাসে বালুকণার পরিমাণ কমানোর জন্য পদ্মা নদীর চরে বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। এর ফলে এখন বায়ু দূষণ কম হচ্ছে। শুধু বায়ুদূষণ রোধেই নয়, নগরীর বর্জ্য নিষ্কাশনেও কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। নগরীর সব বর্জ্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করে সেগুলো নগরীর বর্জ্য সংগ্রহাগার বা ডাম্পিং সেন্টারে জমা করা হয়। তারপর সেগুলো ট্রাকে করে নগরীর উপকণ্ঠ সিটি হার্ট সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে গিয়ে নিয়মমাফিক ড্রাম্পিং করা হয়।

রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ সরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দুইভাবে কাজ করা হয়। আমাদের ৩০টি ওয়ার্ডের ২৮টি পয়েন্টে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মহানগরের সমস্ত বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। রাত ১০টার পর বর্জ্যগুলো নির্দিষ্ট স্থানে স্থানান্তর করা হয়। রুটিন কাজের অংশ হিসেবে প্রতিদিন রাতে গোটা মহানগরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। শহর পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন কাজে বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের এক হাজার ৪০০ কর্মী কাজ করেন।

মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, মহানগরীকে সবুজায়ন করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমরা জিরো সয়েল প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে শহরের কোথাও ফাঁকা জমি থাকবে না। যেখানেই ফাঁকা জমি দেখা যাবে সেখানেই বৃক্ষ রোপণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, পাশাপাশি নগরীর প্রতিটি বাড়ির মালিকদের ছাদে বাগানের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। রাজশাহী শহরকে এশিয়ার এক নম্বর শহর হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বায়ুদূষণ রোধ করে পরিবেশের উন্নয়নে রাজশাহী হবে বিশ্বের মডেল।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top